• চোখের দৃষ্টি হারানোর পর ধৈর্যধারণকারী ও সাওয়াবের আশা পোষণকারীর জন্য জান্নাত

     চোখের দৃষ্টি হারানোর পর ধৈর্যধারণকারী ও সাওয়াবের আশা পোষণকারীর জন্য জান্নাত

    ১৪৮. আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:

    148- «إِنَّ اللَّهَ قَالَ: إِذَا ابْتَلَيْتُ عَبْدِي بِحَبِيبَتَيْهِ فَصَبَرَ عَوَّضْتُهُ مِنْهُمَا الْجَنَّةَ». يُرِيدُ عَيْنَيْهِ.

    “আল্লাহ বলেন: আমি আমার বান্দাকে যখন তার দু’টি প্রিয় বস্তু[31] দ্বারা পরীক্ষা করি, অতঃপর সে ধৈর্যধারণ করে, আমি তার বিনিময়ে তাকে জান্নাত দান করি”। (সহীহ বুখারী) হাদীসটি সহীহ।

    ১৪৯. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মারফু সনদে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন:

    149- «يَقُولُ اللَّهُ عَزّ وَجَلّ: مَنْ أَذْهَبْتُ حَبِيبَتَيْهِ فَصَبَرَ وَاحْتَسَبَ لَمْ أَرْضَ لَهُ بِثَوَابٍ دُونَ الْجَنَّةِ».

    “আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আমি যার দু’টি প্রিয় বস্তু নিয়ে নেই, অতঃপর সে ধৈর্যধারণ করে ও সাওয়াবের আশা করে, আমি তার জন্য জান্নাত ব্যতীত কোনো প্রতিদানে সন্তুষ্ট হই না”। (তিরমিযী) হাদীসটি সহীহ।

    ১৫০. ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    150- «يقول الله تبارك وتعالى: إذا أخذت كريمتي عبدي فصبر واحتسب لم أرض له ثوابًا دون الجنة».

    “আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আমি যখন আমার বান্দার প্রিয় দু’টি বস্তু গ্রহণ করি, অতঃপর সে সবর করে ও ধৈর্যধারণ করে, আমি তার জন্য জান্নাত ব্যতীত কোনো সাওয়াবে সন্তুষ্ট হব না”। (ইবন হিব্বান) হাদীসটি সহীহ।

     অভাবের ফযীলত

    ১৫১. আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    151- «هَلْ تَدْرُونَ أَوَّلَ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ خَلْقِ اللَّهِ؟» قَالُوا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: «أَوَّلُ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ خَلْقِ اللَّهِ الْفُقَرَاءُ وَالْمُهَاجِرُونَ الَّذِينَ تُسَدُّ بِهِمْ الثُّغُورُ وَيُتَّقَى بِهِمْ الْمَكَارِهُ، وَيَمُوتُ أَحَدُهُمْ وَحَاجَتُهُ فِي صَدْرِهِ لَا يَسْتَطِيعُ لَهَا قَضَاءً, فَيَقُولُ اللَّهُ -عَزَّ وَجَلَّ- لِمَنْ يَشَاءُ مِنْ مَلَائِكَتِهِ: ائْتُوهُمْ فَحَيُّوهُم،ْ فَتَقُولُ الْمَلَائِكَةُ: نَحْنُ سُكَّانُ سَمَائِكَ وَخِيرَتُكَ مِنْ خَلْقِكَ أَفَتَأْمُرُنَا أَنْ نَأْتِيَ هَؤُلَاءِ فَنُسَلِّمَ عَلَيْهِمْ؟!! قَالَ: إِنَّهُمْ كَانُوا عِبَادًا يَعْبُدُونِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا، وَتُسَدُّ بِهِمْ الثُّغُور،ُ وَيُتَّقَى بِهِمْ الْمَكَارِهُ، وَيَمُوتُ أَحَدُهُمْ وَحَاجَتُهُ فِي صَدْرِهِ لَا يَسْتَطِيعُ لَهَا قَضَاءً، قَالَ: فَتَأْتِيهِمُ الْمَلَائِكَةُ عِنْدَ ذَلِكَ فَيَدْخُلُونَ عَلَيْهِمْ مِنْ كُلِّ بَابٍ سَلَامٌ عَلَيْكُمْ بِمَا صَبَرْتُمْ فَنِعْمَ عُقْبَى الدَّارِ».

    “তোমরা কি জান আল্লাহর মখলুকের মধ্যে কে সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে? তারা বলল: আল্লাহ এবং তার রাসূল ভালো জানেন। তিনি বললেন: আল্লাহর মখলুকের মধ্যে সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে অভাবী ও মুহাজির, যাদের দ্বারা সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান পূর্ণ করা হয় ও যাদেরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তাদের কেউ মারা যায় কিন্তু তার ইচ্ছা তার অন্তরেই থাকে পূর্ণ করতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা তার ফিরিশতাদের থেকে যাকে ইচ্ছা বলবেন: তাদের কাছে যাও, তাদেরকে সালাম কর, অতঃপর ফিরিশতারা বলে: আমরা আপনার আসমানের অধিবাসী, আপনার সর্বোত্তম মখলুক, আপনি আমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন তাদের কাছ যাব এবং তাদেরকে সালাম করব?! তিনি বলেন: তারা এমন বান্দা যারা আমার ইবাদত করত আমার সাথে কাউকে শরীক করত না। তাদেরকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে রাখা হত, তাদেরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হত, তাদের কেউ মারা যেত কিন্তু তার প্রয়োজন তার অন্তরেই থাকত সে তা পূর্ণ করতে পারত না। তিনি বলেন: অতঃপর তখন তাদের নিকট ফিরিশতাগণ আসেন, প্রত্যেক দরজা দিয়ে তাদের নিকট প্রবেশ করেন: তোমাদের ওপর সালাম। কারণ, তোমরা ধৈর্যধারণ করেছে, আখিরাতের প্রতিদান খুবই সুন্দর!”। (আহমদ) হাদীসটি হাসান লি গায়রিহী।

     আত্মহত্যা থেকে হুশিয়ারি

    ১৫২. জুনদুব ইবন আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    152- «كَانَ فِيمَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ رَجُلٌ بِهِ جُرْحٌ فَجَزِعَ فَأَخَذَ سِكِّينًا فَحَزَّ بِهَا يَدَهُ فَمَا رَقَأَ الدَّمُ حَتَّى مَاتَ، قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: بَادَرَنِي عَبْدِي بِنَفْسِهِ حَرَّمْتُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ».

    “তোমাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে এক ব্যক্তি ছিল, যার হাতে ছিল জখম, সে অস্থির হয়ে ছুরি নেয় ও তা দ্বারা হাত কেটে ফেলে, অতঃপর রক্ত বন্ধ হয় নি ফলে সে মারা যায়”। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আমার বান্দা তার নিজের ব্যাপারে জলদি করেছে, আমি তার ওপর জান্নাত হারাম করে দিলাম”। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

     অন্যায়ভাবে হত্যাকারীর পাপ

    ১৫৩. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    153- «يَجِيءُ الرَّجُلُ آخِذًا بِيَدِ الرَّجُلِ فَيَقُولُ: يَا رَبِّ هَذَا قَتَلَنِي. فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ: لِمَ قَتَلْتَهُ؟ فَيَقُولُ: قَتَلْتُهُ لِتَكُونَ الْعِزَّةُ لَكَ. فَيَقُولُ: فَإِنَّهَا لِي، وَيَجِيءُ الرَّجُلُ آخِذًا بِيَدِ الرَّجُلِ فَيَقُولُ: إِنَّ هَذَا قَتَلَنِي. فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ: لِمَ قَتَلْتَهُ؟ فَيَقُولُ: لِتَكُونَ الْعِزَّةُ لِفُلَانٍ فَيَقُولُ: إِنَّهَا لَيْسَتْ لِفُلَانٍ فَيَبُوءُ بِإِثْمِهِ».

    “এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির হাত ধরে উপস্থিত হবে এবং বলবে: হে আমার রব: এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। আল্লাহ বললেন: কেন তাকে হত্যা করেছ? সে বলবে: আমি তাকে এ জন্য হত্যা করেছি যেন আপনার সম্মান বুলন্দ হয়। তিনি বলবেন: হ্যাঁ তা আমার জন্য। অপর ব্যক্তি অপর ব্যক্তির হাত ধরে উপস্থিত হবে এবং বলবে: এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। আল্লাহ তাকে বলবেন কেন হত্যা করেছ? সে বলবে: যেন অমুকের সম্মান বুলন্দ হয়। তিনি বলবেন: তার জন্য সম্মান নয়, ফলে সে তার পাপ বহন করবে”। (সুনান নাসাঈ) পরবর্তী হাদীসের বিবেচনায় সহীহ।

    ১৫৪. ইমরান আল-জাওনি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

    154- «قُلْتُ لِجُنْدُبٍ: إِنِّي بَايَعْتُ هَؤُلَاءِ -يَعْنِي ابْنَ الزُّبَيْرِ- وَإِنَّهُمْ يُرِيدُونَ أَنْ أَخْرُجَ مَعَهُمْ إِلَى الشَّامِ فَقَالَ: أَمْسِكْ. فَقُلْت:ُ إِنَّهُمْ يَأْبَوْنَ عَلَي، فَقَالَ: افْتَدِ بِمَالِكَ. قَالَ: قُلْتُ: إِنَّهُمْ يَأْبَوْنَ إِلَّا أَنْ أُقَاَتِلْ مَعَهُمْ بِالسَّيْفِ، فَقَالَ جُنْدُبٌ: حَدَّثَنِي فُلَانٌ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «يَجِيءُ الْمَقْتُولُ بِقَاتِلِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُولُ: يَا رَبِّ سَلْ هَذَا فِيمَ قَتَلَنِي» قَالَ شُعْبَةُ: فَأَحْسِبُهُ قَالَ: «فَيَقُولُ: عَلَامَ قَتَلْتَهُ؟ فَيَقُولُ: قَتَلْتُهُ عَلَى مُلْكِ فُلَان». قَالَ: فَقَالَ جُنْدُبٌ: فَاتَّقِهَا».

    “আমি জুনদুবকে বললাম: আমি তাদের নিকট বায়‘আত হয়েছি, অর্থাৎ আব্দুল্লাহ ইবন জুবায়ের এর হাতে, তারা চায় আমি তাদের সাথে শামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই, তিনি বললেন: বিরত থাক। আমি বললাম: তারা আমাকে পীড়াপীড়ি করে। তিনি বললেন: তোমার সম্পদ দিয়ে বিরত থাক। তিনি বলেন: আমি বললাম: আমি তাদের সাথে তলোয়ার দ্বারা যুদ্ধ করব এ ছাড়া কিছুতেই তারা রাজি হয় না। অতঃপর জুনদুব বললেন: অমুকে আমার নিকট বলেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “কিয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি তার হত্যাকারীকে নিয়ে উপস্থিত হবে, অতঃপর সে বলবে: তাকে জিজ্ঞাসা কর কেন আমাকে হত্যা করেছে”। শু‘বা বলেন: আমার মনে হয় তিনি বলেছেন: “সে বলবে: কিসের ওপর আমাকে হত্যা করেছে? সে বলবে: অমুকের নেতৃত্বে আমি তাকে হত্যা করেছি”। তিনি বলেন: অতঃপর জুনদুব বলল: সুতরাং তুমি বিরত থাক। (আহমদ) হাদীসটি সহীহ।

     পিপড়া হত্যার নিষেধাজ্ঞা

    ১৫৫. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:

    155- «قَرَصَتْ نَمْلَةٌ نَبِيًّا مِنْ الْأَنْبِيَاءِ فَأَمَرَ بِقَرْيَةِ النَّمْلِ فَأُحْرِقَتْ فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ: أَنْ قَرَصَتْكَ نَمْلَةٌ أَحْرَقْتَ أُمَّةً مِنَ الأُمَمِ تُسَبِّحُ الله».

    “একটি পিপড়া কোনো এক নবীকে কামড় দেয়, তিনি পিপড়ার গ্রামের নির্দেশ দিলেন ফলে তা জ্বালিয়ে দেওয়া হলো, আল্লাহ তাকে ওহি করলেন: একটি পিপড়া তোমাকে কামড় দিয়েছে, আর তুমি একটি জাতি জ্বালিয়ে দিলে যারা আল্লাহর প্রশংসা করত”। (সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ ও ইবন মাজাহ) হাদীসটি সহীহ।

     তাকদীর অধ্যায়

    ১৫৬. ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    156- «أَخَذَ اللَّهُ الْمِيثَاقَ مِنْ ظَهْرِ آدَمَ بِنَعْمَانَ -يَعْنِي عَرَفَةَ- فَأَخْرَجَ مِنْ صُلْبِهِ كُلَّ ذُرِّيَّةٍ ذَرَأَهَا فَنَثَرَهُمْ بَيْنَ يَدَيْهِ كَالذَّرِّ ثُمَّ كَلَّمَهُمْ قِبَلاً قَالَ: ﴿ وَإِذۡ أَخَذَ رَبُّكَ مِنۢ بَنِيٓ ءَادَمَ مِن ظُهُورِهِمۡ ذُرِّيَّتَهُمۡ وَأَشۡهَدَهُمۡ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمۡ أَلَسۡتُ بِرَبِّكُمۡۖ قَالُواْ بَلَىٰ شَهِدۡنَآۚ أَن تَقُولُواْ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ إِنَّا كُنَّا عَنۡ هَٰذَا غَٰفِلِينَ ١٧٢ ﴾ [الاعراف: ١٧١] .

    “আল্লাহ তা‘আলা না‘মান নামক স্থানে (অর্থাৎ ‘আরাফায়) আদমের পিঠে থাকাবস্থায় অঙ্গিকার গ্রহণ করেছেন, তিনি তার পিঠ থেকে প্রত্যেক সন্তান বের করেন যা সে জন্ম দিবে, অতঃপর তাদেরকে সামনে অণুর ন্যায় রাখেন, অতঃপর তাদের মুখোমুখি হয়ে কথা বলেন: তিনি বলেন,

    ﴿وَإِذۡ أَخَذَ رَبُّكَ مِنۢ بَنِيٓ ءَادَمَ مِن ظُهُورِهِمۡ ذُرِّيَّتَهُمۡ وَأَشۡهَدَهُمۡ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمۡ أَلَسۡتُ بِرَبِّكُمۡۖ قَالُواْ بَلَىٰ شَهِدۡنَآۚ أَن تَقُولُواْ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ إِنَّا كُنَّا عَنۡ هَٰذَا غَٰفِلِينَ ١٧٢﴾ [الاعراف: ١٧١]

    “আর স্মরণ কর, যখন তোমার রব বনী-আদমের ‎পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধরকে বের করলেন ‎এবং তাদেরকে তাদের নিজদের উপর সাক্ষী ‎করোলেন যে, ‘আমি কি তোমাদের রব নই’? ‎তারা বলল, ‘হ্যাঁ, আমরা সাক্ষ্য দিলাম।’ যাতে ‎কিয়ামতের দিন তোমরা বলতে না পার যে, ‎নিশ্চয় আমরা এ বিষয়ে অনবহিত ছিলাম”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৭১] (আহমদ) হাদীসটি সহীহ।

    ১৫৭. আব্দুর রহমান ইবন কাতাদা আসসুলামি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:

    157- «سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: « إِنَّ اللَّهَ -عَزَّ وَجَلَّ- خَلَقَ آدَمَ ثُمَّ أَخَذَ الْخَلْقَ مِنْ ظَهْرِهِ وَقَالَ: هَؤُلَاءِ فِي الْجَنَّةِ وَلَا أُبَالِي، وَهَؤُلَاءِ فِي النَّارِ وَلَا أُبَالِي » . فَقَالَ قَائِلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَعَلَى مَاذَا نَعْمَلُ؟ قَالَ: « عَلَى مَوَاقِعِ الْقَدَرِ».

    “নিশ্চয় আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করেন, অতঃপর তার পিঠ থেকে মখলুক বের করেন ও বলেন: এরা জান্নাতী আমি কোনো পরোয়া করি না, এরা জাহান্নামী আমি কোনো পরোয়া করি না। তিনি বলেন এক ব্যক্তি বলল: হে আল্লাহর রাসূল তাহলে কিসের ওপর আমল করব”? তিনি বললেন: “তাকদিরে নির্ধারিত স্থানে”[32]। (আহমদ) হাদীসটি হাসান।

    ১৫৮. আবু নাদরাহ থেকে বর্ণিত,

    158- «أَنَّ رَجُلاً مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُقَالُ لَهُ: أَبُو عَبْدِ اللَّهِ دَخَلَ عَلَيْهِ أَصْحَابُهُ يَعُودُونَهُ وَهُوَ يَبْكِي فَقَالُوا لَهُ: مَا يُبْكِيكَ أَلَمْ يَقُلْ لَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : « خُذْ مِنْ شَارِبِكَ ثُمَّ أَقِرَّهُ حَتَّى تَلْقَانِي » , قَالَ: بَلَى وَلَكِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: « إِنَّ اللَّهَ -عَزَّ وَجَلَّ- قَبَضَ بِيَمِينِهِ قَبْضَةً وَأُخْرَى بِالْيَدِ الْأُخْرَى وَقَالَ: هَذِهِ لِهَذِهِ, وَهَذِهِ لِهَذِهِ، وَلَا أُبَالِي». فَلَا أَدْرِي فِي أَيِّ الْقَبْضَتَيْنِ أَنَا».

    “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক সাহাবী যাকে আবু আব্দুল্লাহ বলা হয়, তাকে দেখার জন্য তার সাথীবৃন্দ আসেন, তিনি কাঁদতে ছিলেন, তারা বলল: আপনি কি জন্য কাঁদছেন, আপনাকে কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেননি: “তুমি তোমার মোচ ছাট, অতঃপর তার ওপর স্থির থাক, যতক্ষণ না আমার সাথে সাক্ষাত কর”। তিনি বলেন: অবশ্যই, কিন্তু আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “আল্লাহ তা‘আলা তার ডান হাতে এক মুষ্টি ও অপর হাতে অপর মুষ্টি গ্রহণ করেন, অতঃপর বলেন: এরা হচ্ছে এর জন্য এবং এরা হচ্ছে এর জন্য, আমি কোনো পরোয়া করি না”। আমি জানি না আমি কোনো মুষ্টির অন্তর্ভুক্ত। (আহমদ) হাদীসটি সহীহ।

    ১৫৯. আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    159- «خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ حِينَ خَلَقَهُ، فَضَرَبَ كَتِفَهُ الْيُمْنَى، فَأَخْرَجَ ذُرِّيَّةً بَيْضَاءَ كَأَنَّهُمْ الذَّرُّ، وَضَرَبَ كَتِفَهُ الْيُسْرَى، فَأَخْرَجَ ذُرِّيَّةً سَوْدَاءَ. كَأَنَّهُمْ الْحُمَمُ، فَقَالَ لِلَّذِي فِي يَمِينِهِ: إِلَى الْجَنَّةِ وَلَا أُبَالِي، وَقَالَ لِلَّذِي فِي كَفِّهِ الْيُسْرَى: إِلَى النَّارِ وَلَا أُبَالِي».

    “আল্লাহ তা‘আলা আদমকে সৃষ্টি করেন যখন সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তার ডান কাঁধে হাত মারেন ও ধবধবে সাদা এক প্রজন্ম বের করেন যেন তারা পতঙ্গ, অতঃপর বাম কাঁধে হাত মারেন ও কালো এক প্রজন্ম বের করেন যেন তারা জ্বলন্ত ছাই। অতঃপর ডান হাতের তালুর দিকে লক্ষ্য করে বলেন: এগুলো জান্নাতের জন্য আমি কোনো পরোয়া করি না, বাম হাতের তালুর দিকে লক্ষ্য করে বলেন: এগুলো জাহান্নামের জন্য আমি কোনো পরোয়া করি না”। (আহমদ) হাদীসটি সহীহ।

     মান্নত অধ্যায়

    ১৬০. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    160- «لَا يَأْتِ ابْنَ آدَمَ النَّذْرُ بِشَيْءٍ لَمْ يَكُنْ قَدْ قَدَّرْتُهُ, وَلَكِنْ يُلْقِيهِ الْقَدَرُ وَقَدْ قَدَّرْتُهُ لَهُ أَسْتَخْرِجُ بِهِ مِنْ الْبَخِيلِ».

    “বনী আদমের নিকট মান্নত কোনো জিনিস নিয়ে আসে না যা আমি তার জন্য নির্ধারণ করি নি, কিন্তু তাকদির তাকে পেয়ে বসে[33], আমি তার জন্য নির্ধারণ করে রেখেছি এর দ্বারা কৃপণ থেকে সম্পদ বের করব”। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

     কিয়ামতের বড় আলামত

    ১৬১. আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

    161- «كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَلَى حِمَارٍ وَعَلَيْهِ بَرْذَعَةٌ أَوْ قَطِيفَةٌ قَالَ: فَذَاكَ عِنْدَ غُرُوبِ الشَّمْسِ, فَقَالَ لِي: «يَا أَبَا ذَرٍّ هَلْ تَدْرِي أَيْنَ تَغِيبُ هَذِهِ؟» قَالَ: قُلْتُ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: «فَإِنَّهَا تَغْرُبُ فِي عَيْنٍ حَامِئَةٍ تَنْطَلِقُ حَتَّى تَخِرَّ لِرَبِّهَا -عَزَّ وَجَلَّ- سَاجِدَةً تَحْتَ الْعَرْشِ فَإِذَا حَانَ خُرُوجُهَا أَذِنَ اللَّهُ لَهَا فَتَخْرُجُ فَتَطْلُعُ، فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يُطْلِعَهَا مِنْ حَيْثُ تَغْرُبُ حَبَسَهَا فَتَقُولُ: يَا رَبِّ إِنَّ مَسِيرِي بَعِيدٌ، فَيَقُولُ لَهَا: اطْلُعِي مِنْ حَيْثُ غِبْتِ فَذَلِكَ حِينَ لَا يَنْفَعُ نَفْسًا إِيمَانُهَا ».

    “আমি একটি গাধার উপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম। তখন তার উপর একটি পাড়যুক্ত চাদর ছিল। তিনি বলেন: এটা ছিল সূর্যাস্তের সময়, তিনি আমাকে বলেন: “হে আবু যর তুমি জান এটা কোথায় অস্ত যায়?” তিনি বলেন: আমি বললাম: আল্লাহ এবং তার রাসূল ভালো জানেন। তিনি বলেন: সূর্যাস্ত যায় একটি কর্দমাক্ত ঝর্ণায়[34], সে চলতে থাকে অবশেষে আরশের নিচে তার রবের জন্য সেজদায় লুটিয়ে পড়ে, যখন বের হওয়ার সময় আল্লাহ তাকে অনুমতি দেন, ফলে সে বের হয় ও উদিত হয়। তিনি যখন তাকে যেখানে অস্ত গিয়েছে সেখান থেকে উদিত করার ইচ্ছা করবেন আটকে দিবেন, সে বলবে: হে আমার রব আমার পথ তো দীর্ঘ, আল্লাহ বলবেন: যেখান থেকে ডুবেছে সেখান থেকেই উদিত হও, এটাই সে সময় যখন ব্যক্তিকে তার ঈমান উপকার করবে না”[35]। (আহমদ) হাদীসটি সহীহ।

     দজ্জালের ফিতনা

    ১৬২. নাওয়াস ইবন সাম‘আন বলেন,

    162- «ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الدَّجَّالَ ذَاتَ غَدَاةٍ فَخَفَّضَ فِيهِ وَرَفَّعَ حَتَّى ظَنَنَّاهُ فِي طَائِفَةِ النَّخْلِ فَقَالَ: « غَيْرُ الدَّجَّالِ أَخْوَفُنِي عَلَيْكُمْ، إِنْ يَخْرُجْ وَأَنَا فِيكُمْ فَأَنَا حَجِيجُهُ دُونَكُمْ، وَإِنْ يَخْرُجْ وَلَسْتُ فِيكُمْ فَامْرُؤٌ حَجِيجُ نَفْسِهِ, وَاللَّهُ خَلِيفَتِي عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ, إِنَّهُ شَابٌّ قَطَطٌ عَيْنُهُ طَافِئَةٌ كَأَنِّي أُشَبِّهُهُ بِعَبْدِ الْعُزَّى بْنِ قَطَنٍ فَمَنْ أَدْرَكَهُ مِنْكُمْ فَلْيَقْرَأْ عَلَيْهِ فَوَاتِحَ سُورَةِ الْكَهْفِ، إِنَّهُ خَارِجٌ خَلَّةً بَيْنَ الشَّاْمِ وَالْعِرَاقِ، فَعَاثَ يَمِينًا وَعَاثَ شِمَالاً يَا عِبَادَ اللَّهِ فَاثْبُتُوا»، قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا لَبْثُهُ فِي الْأَرْضِ؟ قَالَ: «أَرْبَعُونَ يَوْمًا يَوْمٌ كَسَنَةٍ وَيَوْمٌ كَشَهْرٍ وَيَوْمٌ كَجُمُعَةٍ وَسَائِرُ أَيَّامِهِ كَأَيَّامِكُمْ». قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَذَلِكَ الْيَوْمُ الَّذِي كَسَنَةٍ أَتَكْفِينَا فِيهِ صَلَاةُ يَوْمٍ؟ قَالَ: «لَا، اقْدُرُوا لَهُ قَدْرَهُ»، قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا إِسْرَاعُهُ فِي الْأَرْضِ؟ قَالَ: «كَالْغَيْثِ اسْتَدْبَرَتْهُ الرِّيحُ، فَيَأْتِي عَلَى الْقَوْمِ فَيَدْعُوهُمْ فَيُؤْمِنُونَ بِهِ وَيَسْتَجِيبُونَ لَهُ، فَيَأْمُرُ السَّمَاءَ فَتُمْطِرُ وَالْأَرْضَ فَتُنْبِتُ فَتَرُوحُ عَلَيْهِمْ سَارِحَتُهُمْ أَطْوَلَ مَا كَانَتْ ذُرًا، وَأَسْبَغَهُ ضُرُوعًا، وَأَمَدَّهُ خَوَاصِرَ، ثُمَّ يَأْتِي الْقَوْمَ فَيَدْعُوهُمْ فَيَرُدُّونَ عَلَيْهِ قَوْلَهُ فَيَنْصَرِفُ عَنْهُمْ فَيُصْبِحُونَ مُمْحِلِينَ لَيْسَ بِأَيْدِيهِمْ شَيْءٌ مِنْ أَمْوَالِهِم,ْ وَيَمُرُّ بِالْخَرِبَةِ فَيَقُولُ لَهَا: أَخْرِجِي كُنُوزَكِ فَتَتْبَعُهُ كُنُوزُهَا كَيَعَاسِيبِ النَّحْلِ ثُمَّ يَدْعُو رَجُلاً مُمْتَلِئًا شَبَابًا فَيَضْرِبُهُ بِالسَّيْفِ فَيَقْطَعُهُ جَزْلَتَيْنِ رَمْيَةَ الْغَرَضِ ثُمَّ يَدْعُوهُ فَيُقْبِلُ وَيَتَهَلَّلُ وَجْهُهُ يَضْحَكُ، فَبَيْنَمَا هُوَ كَذَلِكَ إِذْ بَعَثَ اللَّهُ الْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ فَيَنْزِلُ عِنْدَ الْمَنَارَةِ الْبَيْضَاءِ شَرْقِيَّ دِمَشْقَ بَيْنَ مَهْرُودَتَيْنِ وَاضِعًا كَفَّيْهِ عَلَى أجْنِحَةِ مَلَكَينِ، إِذَ طَأْطأَ رَأْسَهُ قَطَرَ، وَإِذَا رَفَعَهُ تَحَدَّرَ مِنْهُ جُمَانٌ كَاللُّؤْلُؤِ فَلَا يَحِلُّ لِكَافِرٍ يَجِدُ رِيحَ نَفَسِهِ إِلَّا مَاتَ وَنَفَسُهُ يَنْتَهِي حَيْثُ يَنْتَهِي طَرْفُهُ، فَيَطْلُبُهُ حَتَّى يُدْرِكَهُ بِبَابِ لُدٍّ فَيَقْتُلُهُ، ثُمَّ يَأْتِي عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ قَوْمٌ قَدْ عَصَمَهُمْ اللَّهُ مِنْهُ فَيَمْسَحُ عَنْ وُجُوهِهِمْ وَيُحَدِّثُهُمْ بِدَرَجَاتِهِمْ فِي الْجَنَّةِ، فَبَيْنَمَا هُوَ كَذَلِكَ إِذْ أَوْحَى اللَّهُ إِلَى عِيسَى إِنِّي قَدْ أَخْرَجْتُ عِبَادًا لِي لَا يَدَانِ لِأَحَدٍ بِقِتَالِهِمْ فَحَرِّزْ عِبَادِي إِلَى الطُّورِ، وَيَبْعَثُ اللَّهُ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ وَهُمْ مِنْ كُلِّ حَدَبٍ يَنْسِلُونَ فَيَمُرُّ أَوَائِلُهُمْ عَلَى بُحَيْرَةِ طَبَرِيَّةَ فَيَشْرَبُونَ مَا فِيهَا، وَيَمُرُّ آخِرُهُمْ فَيَقُولُونَ: لَقَدْ كَانَ بِهَذِهِ مَرَّةً مَاءٌ، وَيُحْصَرُ نَبِيُّ اللَّهِ عِيسَى وَأَصْحَابُهُ حَتَّى يَكُونَ رَأْسُ الثَّوْرِ لِأَحَدِهِمْ خَيْرًا مِنْ مِائَةِ دِينَارٍ لِأَحَدِكُمْ الْيَوْمَ، فَيَرْغَبُ نَبِيُّ اللَّهِ عِيسَى وَأَصْحَابُهُ فَيُرْسِلُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ النَّغَفَ فِي رِقَابِهِمْ فَيُصْبِحُونَ فَرْسَى كَمَوْتِ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ ثُمَّ يَهْبِطُ نَبِيُّ اللَّهِ عِيسَى وَأَصْحَابُهُ إِلَى الْأَرْضِ فَلَا يَجِدُونَ فِي الْأَرْضِ مَوْضِعَ شِبْرٍ إِلَّا مَلَأَهُ زَهَمُهُمْ وَنَتْنُهُمْ, فَيَرْغَبُ نَبِيُّ اللَّهِ عِيسَى وَأَصْحَابُهُ إِلَى اللَّهِ فَيُرْسِلُ اللَّهُ طَيْرًا كَأَعْنَاقِ الْبُخْتِ فَتَحْمِلُهُمْ فَتَطْرَحُهُمْ حَيْثُ شَاءَ اللَّهُ، ثُمَّ يُرْسِلُ اللَّهُ مَطَرًا لَا يَكُنُّ مِنْهُ بَيْتُ مَدَرٍ وَلَا وَبَرٍ فَيَغْسِلُ الْأَرْضَ حَتَّى يَتْرُكَهَا كَالزَّلَفَةِ، ثُمَّ يُقَالُ لِلْأَرْضِ: أَنْبِتِي ثَمَرَتَكِ وَرُدِّي بَرَكَتَكِ فَيَوْمَئِذٍ تَأْكُلُ الْعِصَابَةُ مِنْ الرُّمَّانَةِ، وَيَسْتَظِلُّونَ بِقِحْفِهَا وَيُبَارَكُ فِي الرِّسْلِ حَتَّى أَنَّ اللِّقْحَةَ مِنْ الْإِبِلِ لَتَكْفِي الْفِئَامَ مِنْ النَّاسِ، وَاللِّقْحَةَ مِنْ الْبَقَرِ لَتَكْفِي الْقَبِيلَةَ مِنْ النَّاسِ، وَاللِّقْحَةَ مِنْ الْغَنَمِ لَتَكْفِي الْفَخِذَ مِنْ النَّاسِ، فَبَيْنَمَا هُمْ كَذَلِكَ إِذْ بَعَثَ اللَّهُ رِيحًا طَيِّبَةً فَتَأْخُذُهُمْ تَحْتَ آبَاطِهِمْ فَتَقْبِضُ رُوحَ كُلِّ مُؤْمِنٍ وَكُلِّ مُسْلِمٍ، وَيَبْقَى شِرَارُ النَّاسِ يَتَهَارَجُونَ فِيهَا تَهَارُجَ الْحُمُرِ فَعَلَيْهِمْ تَقُومُ السَّاعَةُ ».

    “কোনো এক সকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাজ্জালের উল্লেখ করলেন, তাতে তিনি আওয়াজ নিচু ও উঁচু করছিলেন, এমনকি আমরা তাকে (দাজ্জালকে) প্রতিবেশীর খেজুর বাগানে ধারণা করেছিলাম। অতঃপর তিনি বললেন: “আমি তোমাদের ওপর দাজ্জাল ব্যতীত অন্য কিছুর আশঙ্কা করছি, যদি সে বের হয় আর আমি তোমাদের মাঝে থাকি, তাহলে আমিই তাকে মোকাবিলা করব তোমাদের পরিবর্তে। যদি সে বের হয় আর আমি তোমাদের মাঝে না থাকি, তাহলে প্রত্যেকে তার নিজের জিম্মাদার, আর আমার অবর্তমানে আল্লাহ প্রত্যেক মুসলিমের জিম্মাদার। দাজ্জাল কোঁকড়ানো চুল বিশিষ্ট যুবক, তার চোখ ওপরে উঠানো, আমি তার উদাহরণ পেশ করছি আব্দুল উজ্জা ইবন কুতনকে। তোমাদের থেকে যে তাকে পাবে সে যেন তার ওপর সূরা কাহাফের প্রথম আয়াতগুলো পড়ে, নিশ্চয় সে বের হবে শাম ও ইরাকের মধ্যবর্তী স্থান থেকে, সে ডানে ও বামে ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে, হে আল্লাহর বান্দাগণ তোমরা দৃঢ় থাক”। আমরা বললাম: হে আল্লাহর রাসূল, যমীনে তার অবস্থান কী পরিমাণ হবে? তিনি বললেন: “চল্লিশ দিন, একদিন এক বছর সমান, অতঃপর একদিন এক মাসের সমান, অতঃপর একদিন এক জুমার সমান, অতঃপর তার অন্যান্য দিনগুলো তোমাদের দিনের ন্যায়”। আমরা বললাম: হে আল্লাহর রাসূল, যে দিনটি এক বছরের ন্যায় সেখানে কি একদিনের সালাত যথেষ্ট? তিনি বললেন: “না, তোমরা তার পরিমাণ করবে”। আমরা বললাম: হে আল্লাহর রাসূল যমীনে তার গতি কিরূপ হবে? তিনি বললেন: “মেঘের মত, যাকে বাতাস হাঁকিয়ে নিয়ে যায়, সে এক কওমের নিকট আসবে তাদেরকে আহ্বান করবে, ফলে তারা তার ওপর ঈমান আনবে ও তার ডাকে সাড়া দিবে, অতঃপর সে আসমানকে নির্দেশ করবে আসমান বৃষ্টিপাত করবে, যমীনকে নির্দেশ করবে যমীন শস্য জন্মাবে, এবং তাদের জন্তুগুলো সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরবে উঁচু চুটি, দুধে পরিপূর্ণ ও দীর্ঘ দেহ নিয়ে। অতঃপর এক কওমের নিকট আসবে তাদেরকে দাওয়াত দিবে, কিন্তু তারা তার দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করবে, সে তাদের থেকে চলে যাবে ফলে তারা দুর্ভিক্ষে পতিত হবে তাদের হাতে তাদের সম্পদের কিছুই থাকবে না। সে ধ্বংস স্তূপের পাশ দিয়ে যাবে অতঃপর তাকে বলবে: তোমার সম্পদ তুমি বের কর, ফলে তার সম্পদ তার অনুগামী হবে মক্ষী রাণীর ন্যায়, অতঃপর সে পূর্ণ এক যুবককে ডাকবে ও তলোয়ারের আঘাতে দু’টুকরো করে ঢিলার দূরত্ব পরিমাণ দুই ধারে নিক্ষেপ করবে, অতঃপর তাকে ডাকবে সে এগিয়ে আসবে ও হাসিতে তার চেহারা উজ্জ্বল থাকবে। দাজ্জাল এরূপ করতে থাকবে, এমতাবস্থায় আল্লাহ মাসিহ ইবন মারইয়ামকে প্রেরণ করবেন, তিনি দামেস্কের পূর্ব দিকে সাদা মিনারের কাছে অবতরণ করবেন দু’টি কাপড় পরিহিত অবস্থায় ফিরিশতাদের ডানার উপর তার দু’হাত রেখে। যখন তিনি মাথা নিচু করবেন (বৃষ্টির ন্যায়) পানি টপকাবে, যখন তিনি মাথা উঁচু করবেন মুক্তোর ন্যায় শ্বেত পাথর পড়বে, (অর্থাৎ পরিষ্কার পানি)। কোনো কাফির এর পক্ষে সম্ভব হবে না তার শ্বাসের গন্ধ পাবে আর বেচে থাকবে, তার শ্বাস সেখানে যাবে যেখানে তার দৃষ্টি পৌঁছবে। তিনি তাকে সন্ধান করবেন অবশেষে ‘লুদ্দ’ নামক দরজার নিকট তাকে পাবেন, অতঃপর তাকে হত্যা করবেন। অতঃপর ঈসা আলাইহিস সালাম এক কওমের নিকট আসবেন, যাদেরকে আল্লাহ দাজ্জাল থেকে নিরাপদ রেখেছেন, তিনি তাদের চেহারায় হাত ভুলিয়ে দিবেন এবং জান্নাতে তাদের মর্তবা সম্পর্কে তাদেরকে বলবেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তার নিকট ওহি করবেন, আমি আমার এমন বান্দাদের বের করেছি যাদের সাথে যুদ্ধ করার সাধ্য কারো নেই, অতএব তুমি আমার বান্দাদের নিয়ে তুরে আশ্রয় গ্রহণ কর, আল্লাহ ইয়াজুজ ও মাজুজকে প্রেরণ করবেন, তারা প্রত্যেক উঁচু স্থান থেকে ছুটে আসবে। তাদের প্রথমাংশ পানিতে পূর্ণ নদীর পাশ দিয়ে অতিক্রম করবে, তারা তার পানি পান করে ফেলবে। তাদের শেষাংশ অতিক্রম করবে ও বলবে: এখানে কখনো পানি ছিল। আল্লাহর নবী ঈসা ও তার সাথীগণ তুরে আটকা পড়বেন, অবশেষে গরুর একটি মাথা তাদের নিকট বর্তমানে তোমাদের একশো দিনার থেকে উত্তম হবে। অতঃপর আল্লাহর নবী ঈসা ও তার সাথীগণ আল্লাহর নিকট মনোনিবেশ করবেন, ফলে আল্লাহ তাদের (ইয়াজুজ-মাজুজের) গ্রীবায় গুটির রোগ সৃষ্টি করবেন, ফলে তারা সবাই এক ব্যক্তির মৃতের ন্যায় মৃত পড়ে থাকবে। অতঃপর আল্লাহর নবী ঈসা ও তার সাথীগণ যমীনে অবতরণ করবেন, তারা যমীনে এক বিঘত জায়গা পাবে না যেখানে তাদের মৃত দেহ ও লাশ নাই। অতঃপর আল্লাহর নবী ঈসা ও তার সাথীগণ আল্লাহর নিকট দো‘আ করবেন, ফলে তিনি উটের গর্দানের ন্যায় পাখি প্রেরণ করবেন, তারা এদেরকে বহন করে আল্লাহর যেখানে ইচ্ছা নিক্ষেপ করবে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, কাঁচা-পাকা কোনো ঘর অবশিষ্ট থাকবে না যেখানে সে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করবে না, যমীন ধৌত করে অবশেষে আয়নার মত করে দিবে। অতঃপর যমীনকে বলা হবে: তোমার ফল তুমি জন্মাও, তোমার বরকত তুমি ফেরৎ দাও, ফলে সেদিন এক দল লোক একটি আনার ভক্ষণ করবে এবং তার ছিলকা দ্বারা ছায়া গ্রহণ করবে, দুধে বরকত দেওয়া হবে ফলে এক উটের দুধ কয়েক গ্রুপ মানুষের জন্য যথেষ্ট হবে। এক গরুর দুগ্ধ এক গ্রামের জন্য যথেষ্ট হবে। এক বকরির দুগ্ধ এক পরিবারের জন্য যথেষ্ট হবে। তারা এভাবেই জীবন যাপন করবে, এমতাবস্থায় আল্লাহ পবিত্র বাতাস প্রবাহিত করবেন, যা তাদের বগলের নিচ স্পর্শ করবে, ফলে সে প্রত্যেক মুমিন ও মুসলিমের রূহ কব্জা করবে, তখন কেবল সবচেয়ে খারাপ লোকগুলো অবশিষ্ট থাকবে, তারা গাধার ন্যায় (সবার সামনে) যৌনাচারে লিপ্ত হবে, অতঃপর তাদের ওপরই কিয়ামত কায়েম হবে”। (সহীহ মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

     আল্লাহর প্রশংসামূলক কতক বাক্যের ফযীলত

    ১৬৩. আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,

    163- «جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الصَّلَاةِ فَقَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ، فَلَمَّا قَضَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الصَّلَاةَ قَالَ: أَيُّكُمْ الْقَائِلُ كَذَا وَكَذَا، قَالَ: فَأَرَمَّ الْقَوْمُ. قَالَ فَأَعَادَهَا ثَلَاثَ مَرَّار، فَقَالَ رَجُلٌ: أَنَا قُلْتُهَا وَمَا أَرَدْتُ بِهَا إِلَّا الْخَيْرَ، قَالَ: فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم : « لَقَدْ ابْتَدَرَهَا اثْنَا عَشَرَ مَلَكًا فَمَا دَرَوْا كَيْفَ يَكْتُبُونَهَا حَتَّى سَأَلُوا رَبَّهُمْ -عَزَّ وَجَل-، فَقَالَ: اكْتُبُوهَا كَمَا قَالَ عَبْدِي».

    “এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট সালাত অবস্থায় হাজির হয়ে বলল: الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ، নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষ করে বললেন: তোমাদের মধ্যে কে অমুক বাক্য পাঠকারী? সকলে চুপ রইল। তিনি বলেন: তিনি তিনবার তা বললেন, অতঃপর এক ব্যক্তি বলল: আমি তা বলেছি, আমি ভালো ব্যতীত অন্য কিছু উদ্দেশ্য করি নি। তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “বারোজন ফিরিশতা তাকে গ্রহণ করার জন্য দ্রুত ছুটে এসেছে, তারা বুঝতে পারছিল না কীভাবে তা লিখবে, অবশেষে তাদের রবের নিকট জিজ্ঞাসা করে, অতঃপর তিনি বলেন: আমার বান্দা যেরূপ বলেছে সেরূপ লিখ”। (আহমদ) হাদীসটি সহীহ।

    সমাপ্ত

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব হাদীস আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত করে বর্ণনা করেছেন আলিমগণ সেগুলোকে ‘হাদীসে কুদসী’ নামে অভিহিত করেছেন। ‘সহীহ হাদীসে কুদসী’ সংকলনটি বিশুদ্ধ প্রমাণিত হাদীসে কুদসীর বিশেষ সংকলন। এখানে সনদ ও ব্যাখ্যা ছাড়া হাদীসে কুদসীগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে, তবে হাদীসগুলো সূত্রসহ উল্লেখ করে বিশুদ্ধতার স্তর ও জরুরী অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে।



    [1] এ থেকে প্রমাণ হয় যে, পাপ ত্যাগ করাও নেকি, যদি তা আল্লাহর জন্য হয়।

    [2] এ মর্যাদা শুধু আল্লাহর ভয়ে পাপ ত্যাগকারীর জন্য।

    [3] এ থেকে প্রমাণ হয় দেখানো ব্যক্তির আমল বিনষ্ট, তাতে কোনো সওয়াব নেই।

    [4] অর্থাৎ সে রাতে বৃষ্টি হয়েছিল।

    [5] অথাৎ দুনিয়াতে আমরা নিজেদের দাবি নিয়ে যে পরিমাণ ঝগড়া ও তর্কে লিপ্ত হই, আখেরাতে মুমিনগণ আল্লাহর সাথে তার চেয়ে অধিক ঝগড়া ও তর্কে লিপ্ত হবে তাদের ভাইদের মুক্ত করানোর জন্য, যাদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করানো হয়েছে।

    [6] এর অর্থ এই নয় যে, কেউ অন্যায় ও গুনাহ করবে আর অন্য কেউ তার প্রতিবাদ করবে না। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ হচ্ছে তিন প্রকারের, হাতে, মুখে বা অন্তরের ঘৃণা। তাকে হাত দিয়ে বাধা, মুখ দিয়ে নিষেধ আর সক্ষম না হলেও অন্তরে তার কর্মকাণ্ডকে ঘৃণা করাই হচ্ছে প্রতিবাদে ভাষা। কিন্তু তার বাইরে প্রতিবাদের সীমা ছড়িয়ে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না, বলাই অগ্রহণযোগ্য কাজ। যার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ আকারে দেখা দিয়েছে। [সম্পাদক]

    [7] আল্লাহ তার আমল নষ্ট করে দেয়ার কারণ হচ্ছে, সে ব্যক্তি আল্লাহ সম্পর্কে খারাপ ধারণা করেছে। আল্লাহকে তাঁর সঠিক মর্যাদায় অভিষিক্ত করে নি। মানুষ আল্লাহ সম্পর্কে যখন খারাপ ধারণা করে, তখন সে নিরাশ হয় বা অপরকে আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ করে দেয়, এটি কুফুরীর পর্যায়ে। তাই তার আমর বিনষ্ট হয়ে যায়। [সম্পাদক]

    [8] হাদীসটির أهلكهم শব্দে কাফ এর উপর উচ্চারণভেদে দু’টি অর্থ হয়। এক. সে তাদের মধ্যে অধিক ধ্বংসপ্রাপ্ত। দুই. সে তাদেরকে ধ্বংস হয়ে গেছে বলে মনে করেছে। বাস্তবে তারা ধ্বংস হয়েছে এমন নয়। আলেমগণ বলেন, “মানুষ ধ্বংস হয়েছে” এ কথাটি বলা ঐ সময় নিষিদ্ধ, যখন সেটা মানুষদেরকে অসম্মান ও অবজ্ঞা করে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব বুঝানো ও তাদের নিকৃষ্ট করার জন্য বলা হবে। কিন্তু যদি কোন মানুষ নিজের ও অন্যান্য মানুষের মধ্যে দ্বীনদারির অভাব দেখে আফসোস করে বলে যে, “মানুষ ধ্বংস হয়ে গেছে” তখন সেটা নিষেধের আওতায় পড়বে না। [সম্পাদক]

    [9] আল্লাহ তাকে তাকে পাবে না, এটা তার বিশ্বাস থাকলে তার ঈমান থাকার কথা নয়, আর  ঈমান না থাকলে জান্নাত পাওয়া যাবে না। সুতরাং এখানে এটাই মানতে হবে যে, লোকটি তার অজ্ঞতাবশত: আল্লাহ সম্পর্কে এ ধারণা করে থাকতে পারে। তাই তার অজ্ঞতার কারণে আল্লাহ তাকে এর জন্য পাকড়াও না করে আল্লাহকে ভয় করার কারণে তাকে ক্ষমা করে দেন। [সম্পাদক]

    [10] ইমাম আহমদের এক বর্ণনায় রয়েছে: “যদি সে আমার সম্পর্কে ভালো ধারণা করে তার জন্যই ভালো, যদি সে আমার সম্পর্কে খারাপ ধারণা করে তার জন্যই খারাপ।

    [11] সাথে থাকার অর্থ, তার অবস্থা জানা ও তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করা। [সম্পাদক]

    [12] এখানে সাথে থাকার অর্থ, তার সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত থাকা ও তাকে সহায্য-সহযোগিতা করা। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ‘আরশের উপর রয়েছেন। [সম্পাদক]

    [13] এর অর্থ এই নয় যে, আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দার শরীরের অঙ্গ পরিণত হয়ে যায়, বরং এর অর্থ এই যে, সে তখন আল্লাহর সন্তুষ্টির বাইরে সে লোক আর চলতে পারে না। বরং আল্লাহর সন্তুষ্টিই তার সন্তুষ্টিতে পরিণত হয়ে যায়। এর প্রমাণ হাদীসের বাকী অংশে। [সম্পাদক]

    [14] কেউ এ হাদিসকে মাওকুফ হিসেবেও বর্ণনা করেছেন।

    [15] অর্থাৎ এখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘সুপারিশকারীগণ’ অথবা ‘মুনাফিকরা’ এ দু’য়ের কোন শব্দটি ব্যবহার করেছেন, এ ব্যাপারে হাদীসের এক বর্ণনাকারী সন্দেহ করেছেন। মূল হাদীসে নয়। [সম্পাদক]

    [16] “সা‘দান” শব্দের অর্থ কাঁটা বা বড় কাঁটাদার গাছ।

    [17] কারণ, ভেজা উল সাধারণত: লোহার সাথে লেগে থাকে। তখন তা ছাড়িয়ে নেওয়া কষ্টকর হয়। [সম্পাদক]

    [18] যারা বিকৃতি করা ব্যতীত তাদের দীনে বহাল ছিল। এ সময়টা হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করার পূর্বে।

    [19] কারণ, প্রতিটি মানুষের জন্য জাহান্নামে একটি স্থান রয়েছে। যখন মুসলিম জাহান্নামে গেল না, আর খৃষ্টান ও ইয়াহূদী জাহান্নামে গেল, তখন সে যেন মুসলিমের স্থান দখল করে নিল। আর মুসলিম যেন কাফিরকে তার স্থলাভিষিক্ত করল। [সম্পাদক]

    [20] দীনার মুদ্রা মানের ক্ষুদ্র অংশকে কিরাত বলা হয়। [সম্পাদক]

    [21] অর্থাৎ স্বর্ণ ও রৌপ্য। [সম্পাদক]

    [22] ইমাম বুখারীর আল-আদাবুল মুফরাদ গ্রন্থে তা স্পষ্ট করা হয়েছে। [সম্পাদক]

    [23] কার্যত পাঁচ ওয়াক্ত, কিন্তু সওয়াব পঞ্চাশ ওয়াক্তের।

    [24] কলিজার টুকরোর মত সন্তানকে মৃত্যু দিয়ে গ্রহণ করি। [সম্পাদক]

    [25] সর্বপ্রথম সৃষ্টি কী? তা নির্ধারণে কয়েকটি মত রয়েছে। এ হাদীস থেকে বাহ্যতঃ বোঝা যায় যে, কলম-ই প্রথম সৃষ্টি। অন্য হাদীস থেকে বোঝা যায় যে, ‘আরশ প্রথম সৃষ্টি। আবার কোনো কোনো হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, পানিই প্রথম সৃষ্টি। অধিকাংশ সত্যনিষ্ঠ আলেম আরশকেই সর্বপ্রথম সৃষ্টি হিসেবে মনে করে থাকেন। তারা অন্যান্য সৃষ্টি যেমন কলম ও পানি সেগুলোকে প্রাথমিক সৃষ্ট বিষয় বলে সামঞ্জস্য বিধান করে থাকেন, তবে সর্বপ্রথম সৃষ্টি হচ্ছে ‘আরশ। [সম্পাদক]

    [26] অর্থাৎ ইউনুস আলাইহিস সালামের ঘটনা শুনে হয়ত কেউ মনে করতে পারে যে, ইউনুস আলাইহিস সালাম ধৈর্য ধারণ করতে পারেন নি, আমি তার থেকে উত্তম। এ জাতীয় কোনো কথা বলে নিজেকে নিয়ে অহংকার যেন কেউ না করে। কারণ, নবীগণ অন্যান্য সকল মানুষ থেকে উত্তম। তাদের সাথে আর কারও তুলনা চলে না। আর তাদের মান-মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তোলার তো কোনো সুযোগই নেই। সুতরাং কেউ যেন এটা বলে না বসে যে, সে ইউনুস আলাইহিস সালাম থেকে ভালো। [সম্পাদক]

    [27] অর্থাৎ আত্মীয়তার সম্পর্ক। আত্মীয়তার সম্পর্ক কীভাবে কথা বলল সেটা আমরা জানি না, তবে রাসূল বলেছেন, তাই আমাদেরকে এর ওপর ঈমান আনতে হবে। যে আল্লাহ আমাদেরকে কথা বলিয়েছেন, তিনি সব কিছুকেই কথা বলাতে পারেন। [সম্পাদক]

    [28] হাদীসের পরবর্তী অংশই প্রমাণ করে যে, আল্লাহর নাম ‘দাহর’ বা যুগ নয়। কারণ, রাত-দিনের মূল কথা হচ্ছে, সময়। আর সময়ের পরিবর্তন আল্লাহ্ই করে থাকেন। সুতরাং কেউ যদি সময়কে গালি দেয়, সে প্রকারান্তরে আল্লাহকেই গালি দিল। কারণ, সময়ে যা কিছু ঘটে, তার সবই আল্লাহ্‌র অনুমতি বা নির্দেশে সংঘটিত হয়ে থাকে। সুতরাং হাদীসের পরবর্তী অংশ পূর্বাংশের তাফসীর। কেউ যেন সময়, যুগ বা কালকে গালি না দেয়। [সম্পাদক]

    [29] অর্থাৎ কীভাবে পরস্পরের হক আদান-প্রদান করব, আমাদের সাথে তো কিছুই থাকবে না? তার জবাবে বলা হয়েছে যে এ আদান-প্রদান ও কিসাস হবে সৎ কাজ ও অসৎ কাজের মাধ্যমে। সুতরাং কারও ভালো কাজ থাকলে, দুনিয়াতে কারও উপর যুলুম করে থাকলে সে ভালো কাজ তাকে দিয়ে দেওয়া হবে, আর না থাকলে তার ওপর অপরের গোনাহ চাপিয়ে দেওয়া হবে। [সম্পাদক]

    [30] অর্থাৎ জ্বরটি হচ্ছে একটি আগুন, যার মাধ্যমে মুমিন বান্দার আখিরাতের গোনাহের বিনিময় হয়ে যায়। [সম্পাদক]

    [31] এখানে দু’টি প্রিয় বস্তু বলে দু’চোখ বোঝানো হয়েছে। [সম্পাদক]

    [32] অর্থাৎ আমল করার বিষয়টিও তাকদীরে লেখা আছে। যদি ভালো আমল করার সৌভাগ্য হয়, তবে সেটাও তার তাকদীরে লেখা আছে। সুতরাং তাকদীরে কী আছে তা খুজে বের করার চেষ্টায় আমল করা পরিত্যাগ করা যাবে না, বরং সর্বদা ভালো আমল করার প্রচেষ্টায় লেগে থাকতে হবে, আর তখনই তার জন্য সে ভালো আমলটি করা সহজ করে দেয়া হবে। একজন মুমিন এ কাজটিই করে এবং করা উচিত। মুমিন কখনো তাকদীরের দোহাই দিয়ে নেক আমল করা থেকে বিরত থাকে না। যারা কাফির ও বদকার তারাই শুধু তাকদীরের দোহাই দিয়ে নেক আমল করা থেকে বিরত থাকে এবং বলে যদি আল্লাহ চাইত তবে আমি অবশ্যই নেক আমল করতে সমর্থ হতাম। বস্তুতঃ এ ধরনের কথা বলে নেক আমল থেকে বিরত থাকা আরবের মুশরিকদের কাজ। মোটকথা: মুমিনের দায়িত্ব হচ্ছে, নেক আমলের জন্য সদা সচেষ্ট থাকা। যাতে করে তার তাকদীরের লেখা অনুসারে সে ভালো কাজ করতে পারে। আর আল্লাহও তার জন্য তা সহজ করে দেন। এটাই বিভিন্ন হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে। [সম্পাদক]

    [33] অর্থাৎ কখনও কখনও মানুষ মান্নত দ্বারা কোন জিনিস পায়, এটা আসলে মান্নতের মাধ্যমে পাওয়া নয়; বরং এটাই আমি তার তাকদীরে লিখেছি। কিন্তু সে যেহেতু আল্লাহর জন্য কিছু দিতে চায় না, কৃপণতা করে, তখন সে মনে মান্নতের মাধ্যমে পাওয়া যাবে, আর এভাবে মান্নত করার কারণে আল্লাহ তা‘আলা এর মাধ্যমে কিছু জিনিস তার থেকে বের করে আনেন। [সম্পাদক]

    [34] এর অর্থ, মানুষের দৃষ্টিতে যখন কোন সূর্য অস্ত যায়, আর সে যখন সাগরের পারে থাকে, তখন দেখতে পায় যেন সূর্য কর্দমাক্ত ঝর্ণায় ডুবে গেল। এর পরবর্তী অংশই প্রমাণ করে যে, সূর্য তারপরও চলতে থাকে। [সম্পাদক]

    [35] অর্থাৎ এর পর আর কারও ঈমান গ্রহণ করা হবে না। [সম্পাদক]

  • 0 comments:

    Post a Comment

    New Research

    Attention Mechanism Based Multi Feature Fusion Forest for Hyperspectral Image Classification.

    CBS-GAN: A Band Selection Based Generative Adversarial Net for Hyperspectral Sample Generation.

    Multi-feature Fusion based Deep Forest for Hyperspectral Image Classification.

    ADDRESS

    388 Lumo Rd, Hongshan, Wuhan, Hubei, China

    EMAIL

    contact-m.zamanb@yahoo.com
    mostofa.zaman@cug.edu.cn

    TELEPHONE

    #
    #

    MOBILE

    +8615527370302,
    +8807171546477