• মুসলিমদের সালাম

     মুসলিমদের সালাম

    ১২৬. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    126- «خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ عَلَى صُورَتِهِ طُولُهُ سِتُّونَ ذِرَاعًا، فَلَمَّا خَلَقَهُ قَالَ: اذْهَبْ فَسَلِّمْ عَلَى أُولَئِكَ النَّفَرِ مِنْ الْمَلَائِكَةِ جُلُوسٌ، فَاسْتَمِعْ مَا يُحَيُّونَكَ؛ فَإِنَّهَا تَحِيَّتُكَ وَتَحِيَّةُ ذُرِّيَّتِكَ, فَقَالَ: السَّلَامُ عَلَيْكُمْ, فَقَالُوا: السَّلَامُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللَّهِ، فَزَادُوهُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ، فَكُلُّ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ آدَمَ فَلَمْ يَزَلْ الْخَلْقُ يَنْقُصُ بَعْدُ حَتَّى الْآنَ».

    “আল্লাহ তা‘আলা আদমকে তার আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন, তার দৈর্ঘ্য ছিল ষাট হাত, তিনি তাকে সৃষ্টি করে বলেন: যাও সেখানে বসে থাকা ফিরিশতাদের দলকে সালাম কর, খেয়াল করে শোন তারা তোমাকে কি অভিবাদন জানায়, কারণ তা-ই হচ্ছে তোমার ও তোমার সন্তানের অভিবাদন। তিনি বললেন: السَّلَامُ عَلَيْكُمْ তারা বলল: السَّلَامُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللَّهِ তারা অতিরিক্ত বলল। সুতরাং যে কেউ জান্নাতে যাবে সে আদমের আকৃতিতে যাবে, আর তারপর থেকে মানুষ ছোট হওয়া আরম্ভ করছে, এখন পর্যন্ত তা হচ্ছে”। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

     আল্লাহর নবী ইউনুস আলাইহিস সালামের ঘটনা

    ১২৭. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    127- «لَا يَنْبَغِي لِعَبْدٍ لِي (و قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى: لِعَبْدِي) أَنْ يَقُولَ: أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى عَلَيْهِ السَّلَام».

    “আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: আমার কোনো বান্দার জন্য (বর্ণনাকারী ইবন মূসান্না বলেছেন: আমার বান্দার জন্য) এমন বলা সমীচীন নয়: আমি ইউনুস ইবন মাত্তা আলাইহিস সালাম থেকে উত্তম[26]”। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

     মূসা ও খিদির আলাইহিমাস সালামের ঘটনা

    ১২৮. সাঈদ ইবন জুবায়ের থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললাম:

    128- «إِنَّ نَوْفًا الْبَكَالِيَّ يَزْعُمُ أَنَّ مُوسَى صَاحِبَ الْخَضِرِ لَيْسَ هُوَ مُوسَى بَنِي إِسْرَائِيلَ إِنَّمَا هُوَ مُوسَى آخَرُ، فَقَالَ: كَذَبَ عَدُوُّ اللَّهِ، حَدَّثَنَا أُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم : «أَنَّ مُوسَى قَامَ خَطِيبًا فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ فَسُئِلَ أَيُّ النَّاسِ أَعْلَمُ؟ فَقَالَ: أَنَا», فَعَتَبَ اللَّهُ عَلَيْهِ إِذْ لَمْ يَرُدَّ الْعِلْمَ إِلَيْهِ فَقَالَ لَهُ: «بَلَى لِي عَبْدٌ بِمَجْمَعِ الْبَحْرَيْنِ هُوَ أَعْلَمُ مِنْك,َ قَالَ: "أَيْ رَبِّ وَمَنْ لِي بِهِ؟ -وَرُبَّمَا قَالَ سُفْيَانُ: أَيْ رَبِّ وَكَيْفَ لِي بِه؟ِ- قَالَ: تَأْخُذُ حُوتًا فَتَجْعَلُهُ فِي مِكْتَلٍ حَيْثُمَا فَقَدْتَ الْحُوتَ فَهُوَ ثَمَّ».

    ‘নাউফ আল-বাকালি’র ধারণা ‘খিদির’ এর সাথী ‘মূসা’ বনী ইসরাইলের ‘মুসা’ নয়, তিনি অন্য ‘মুসা’। তিনি বললেন: আল্লাহর শত্রু মিথ্যা বলেছে। উবাই ইবন কা‘ব নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদেরকে বর্ণনা করেন: “একদা মূসা আলাইহিস সালাম বনি ইসরাইলে খুতবা দেওয়ার জন্য দাঁড়ালে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, কে সবচেয়ে বেশি জানে? তিনি বললেন: আমি”। এ জন্য আল্লাহ তাকে তিরস্কার করলেন, কারণ তিনি বেশি জানার জ্ঞান আল্লাহর নিকট সোপর্দ করেন নি। তাকে তিনি বললেন: “দুই সমুদ্রের মিলনস্থলে আমার এক বান্দা রয়েছে, সে তোমার চেয়ে অধিক জানে। তিনি বললেন: হে আমার রব, তার নিকট পৌঁছার জন্য আমার কে আছে? অথবা সুফিয়ান বলেছেন: হে আমার রব, আমি কীভাবে তার কাছে পৌঁছব? তিনি বললেন: একটি মাছ নাও, অতঃপর তা পাত্রে রাখ, যেখানে মাছটি হারাবে সেখানেই সে...” অতঃপর পূর্ণ হাদীস উল্লেখ করেন। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

     মালাকুল মউতের সাথে মূসা আলাইহিস সালামের ঘটনা

    ১২৯. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    129- «جَاءَ مَلَكُ الْمَوْتِ إِلَى مُوسَى -عَلَيْهِ السَّلَام- فَقَالَ لَهُ: أَجِبْ رَبَّكَ, قَالَ: فَلَطَمَ مُوسَى عَلَيْهِ السَّلَام عَيْنَ مَلَكِ الْمَوْتِ فَفَقَأَهَا, قَالَ: فَرَجَعَ الْمَلَكُ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى فَقَالَ: إِنَّكَ أَرْسَلْتَنِي إِلَى عَبْدٍ لَكَ لَا يُرِيدُ الْمَوْتَ وَقَدْ فَقَأَ عَيْنِي, قَالَ: فَرَدَّ اللَّهُ إِلَيْهِ عَيْنَهُ وَقَالَ: ارْجِعْ إِلَى عَبْدِي فَقُلْ: الْحَيَاةَ تُرِيدُ؟ فَإِنْ كُنْتَ تُرِيدُ الْحَيَاةَ فَضَعْ يَدَكَ عَلَى مَتْنِ ثَوْرٍ فَمَا تَوَارَتْ يَدُكَ مِنْ شَعْرَةٍ فَإِنَّكَ تَعِيشُ بِهَا سَنَةً قَالَ: ثُمَّ مَهْ؟ قَالَ: ثُمَّ تَمُوتُ قَالَ: فَالْآنَ مِنْ قَرِيبٍ رَبِّ أَمِتْنِي مِنْ الْأَرْضِ الْمُقَدَّسَةِ رَمْيَةً بِحَجَرٍ». قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : «وَاللَّهِ لَوْ أَنِّي عِنْدَهُ لَأَرَيْتُكُمْ قَبْرَهُ إِلَى جَانِبِ الطَّرِيقِ عِنْدَ الْكَثِيبِ الْأَحْمَرِ».

    “মালাকুল মউত মূসা আলাইহিস সালামের নিকট এসে তাকে বলেন: আপনার রবের ডাকে সাড়া দিন। তিনি বলেন: অতঃপর মূসা আলাইহিস সালাম মালাকুল মউতকে থাপ্পড় মেরে তার চোখ উপড়ে ফেলেন। তিনি বলেন: অতঃপর মালাকুল মউত আল্লাহর নিকট ফিরে গেল এবং বলল: আপনি আমাকে আপনার এমন বান্দার নিকট প্রেরণ করেছেন যে মরতে চায় না, সে আমার চোখ উপড়ে ফেলেছে, তিনি বলেন: আল্লাহ তার চোখ তাকে ফিরিয়ে দেন, আর বলেন: আমার বান্দার নিকট ফিরে যাও এবং বল: আপনি হায়াত চান? যদি আপনি হায়াত চান তাহলে ষাঁড়ের পিঠে হাত রাখুন, আপনার হাত যে পরিমাণ চুল ঢেকে নিবে তার সমান বছর আপনি জীবিত থাকবেন। তিনি বলেন: অতঃপর? মালাকুল মউত বলল: অতঃপর মৃত্যু বরণ করবেন। তিনি বলেন: তাহলে এখনি দ্রুত কর। হে আমার রব, পবিত্র ভূমির সন্নিকটে পাথর নিক্ষেপের দূরত্বে আমাকে মৃত্যু দান কর”। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “আল্লাহর শপথ আমি যদি তার নিকট হতাম, তাহলে রাস্তার পাশে লাল বালুর স্তূপের নিকট তার কবর দেখিয়ে দিতাম”। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

     আইয়ূব আলাইহিস সালামের ওপর আল্লাহর অনুগ্রহ

    ১৩০. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    130- «بَيْنَمَا أَيُّوبُ يَغْتَسِلُ عُرْيَانًا خَرَّ عَلَيْهِ رِجْلُ جَرَادٍ مِنْ ذَهَبٍ فَجَعَلَ يَحْثِي فِي ثَوْبِهِ فَنَادَاهُ رَبُّهُ: يَا أَيُّوبُ أَلَمْ أَكُنْ أَغْنَيْتُكَ عَمَّا تَرَى؟ قَالَ: بَلَى يَا رَبِّ وَلَكِنْ لَا غِنَى لِي عَنْ بَرَكَتِكَ».

    “একদা আইয়ূব উলঙ্গ গোসল করছিল, তার ওপর এক পাল স্বর্ণের টিড্ডি পড়ল, তিনি তা মুষ্টি মুষ্টি করে কাপড়ে তুলছিলেন। এমতাবস্থায় তার রব তাকে ডাক দিলেন: হে আইয়ূব, আমি কি তোমাকে অমুখাপেক্ষী করে দেই-নি যা দেখছ তা থেকে? তিনি বললেন: অবশ্যই হে আমার রব, তবে আপনার বরকত থেকে আমার অমুখাপেক্ষীতা নেই”। (সহীহ বুখারী ও সুনান নাসাঈ) হাদীসটি সহীহ।

     জাহেলী যুগের প্রথার অনিষ্ট

    ১৩১. উবাই ইবন কাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

    131 «انْتَسَبَ رَجُلَانِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَحَدُهُمَا: أَنَا فُلَانُ بْنُ فُلَانٍ فَمَنْ أَنْتَ لَا أُمَّ لَكَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : «انْتَسَبَ رَجُلَانِ عَلَى عَهْدِ مُوسَى -عَلَيْهِ السَّلَام- فَقَالَ أَحَدُهُمَا: أَنَا فُلَانُ بْنُ فُلَانٍ حَتَّى عَدَّ تِسْعَةً فَمَنْ أَنْتَ لَا أُمَّ لَكَ، قَالَ: أَنَا فُلَانُ بْنُ فُلَانٍ ابْنُ الْإِسْلَامِ. قَالَ: فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَى مُوسَى -عَلَيْهِ السَّلَام-: أَنَّ هَذَيْنِ الْمُنْتَسِبَيْنِ أَمَّا أَنْتَ أَيُّهَا الْمُنْتَمِي أَوْ الْمُنْتَسِبُ إِلَى تِسْعَةٍ فِي النَّارِ فَأَنْتَ عَاشِرُهُمْ، وَأَمَّا أَنْتَ يَا هَذَا الْمُنْتَسِبُ إِلَى اثْنَيْنِ فِي الْجَنَّةِ فَأَنْتَ ثَالِثُهُمَا فِي الْجَنَّةِ».

    “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে দু’জন ব্যক্তি বংশের উল্লেখ করল, একজন বলল: আমি অমুকের সন্তান অমুক তুমি কে, তুমি মা হারা হও। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: মূসা আলাইহিস সালামের যুগে দু’ ব্যক্তি বংশ পরিচয় উল্লেখ করেছিল, তাদের একজন বলে: আমি অমুকের সন্তান অমুক এভাবে সে নয়জন গণনা করে, অতএব তুমি কে, তুমি মা হারা হও। সে বলল: আমি অমুকের সন্তান অমুক ইবন ইসলাম। তিনি বলেন: আল্লাহ তা‘আলা মূসা আলাইহিস সালামের নিকট ওহী প্রেরণ করলেন, এ দু’জন বংশ পরিচয় উল্লেখকারী: হে নয়জন উল্লেখকারী তুমি জাহান্নামে, তুমি তাদের দশম ব্যক্তি। হে দু’জন উল্লেখকারী তুমি জান্নাতে, তুমি তাদের তৃতীয়জন”। (আহমদ ও সুনান নাসাঈ) হাদীসটির সনদ সহীহ।

     শয়তানের ওয়াসওয়াসা

    ১৩২. আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    132- «قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: إِنَّ أُمَّتَكَ لَا يَزَالُونَ يَقُولُونَ: مَا كَذَا؟ مَا كَذَا؟ حَتَّى يَقُولُوا: هَذَا اللَّهُ خَلَقَ الْخَلْقَ فَمَنْ خَلَقَ اللَّهَ؟»

    “আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমার উম্মত বলতে থাকবে: এটা কীভাবে? এটা কীভাবে? অবশেষে বলবে: আল্লাহ মখলুক সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে?” (সহীহ মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

     নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরূদের ফযীলত

    ১৩৩. আব্দুর রহমান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

    133- «خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاتَّبَعْتُهُ حَتَّى دَخَلَ نَخْلاً فَسَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُودَ حَتَّى خِفْتُ أَوْ خَشِيتُ أَنْ يَكُونَ اللَّهُ قَدْ تَوَفَّاهُ أَوْ قَبَضَهُ، قَالَ: فَجِئْتُ أَنْظُرُ فَرَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ: «مَا لَكَ يَا عَبْدَ الرَّحْمنِ؟» قَالَ: فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ: «إِنَّ جِبْرِيلَ -عَلَيْهِ السَّلَام- قَالَ لِي: أَلَا أُبَشِّرُكَ، إِنَّ اللَّهَ -عَزَّ وَجَلَّ- يَقُولُ لَكَ: مَنْ صَلَّى عَلَيْكَ صَلَّيْتُ عَلَيْهِ وَمَنْ سَلَّمَ عَلَيْكَ سَلَّمْتُ عَلَيْهِ».

    “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন, আমি তার অনুগামী হলাম, তিনি একটি খেজুর বাগানে ঢুকে সাজদাহ করলেন, সাজদাহ এত দীর্ঘ করলেন যে আমি আশঙ্কা করলাম আল্লাহ তাকে তো মৃত্যু দেন নি! তিনি বলেন: আমি দেখার জন্য আসলাম, অতঃপর তিনি মাথা তুললেন, তিনি বললেন: “হে আব্দুর রহমান কী হয়েছে তোমার?” তিনি বলেন: আমি তাকে তা শোনালাম, অতঃপর তিনি বললেন: “জিবরীল আলাইহিস সালাম আমাকে বলেছেন: আমি কি তোমাকে সুসংবাদ দেব না, আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে বলেন: যে ব্যক্তি তোমার ওপর দুরূদ পাঠ করবে আমি তার ওপর দুরূদ পাঠ করব, যে তোমার ওপর সালাম পাঠ করবে আমি তার ওপর সালাম প্রেরণ করব”। (আহমদ, বায়হাকি ও আবু ইয়ালা) হাদীসটি হাসান লি গায়রিহী।

     ভালোর নির্দেশ দেওয়া ও খারাপ থেকে বিরত রাখা

    ১৩৪. আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:

    134- «إِنَّ اللَّهَ لَيَسْأَلُ الْعَبْدَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يَقُولَ: مَا مَنَعَكَ إِذْ رَأَيْتَ الْمُنْكَرَ أَنْ تُنْكِرَهُ؟ فَإِذَا لَقَّنَ اللَّهُ عَبْدًا حُجَّتَهُ قَالَ: يَا رَبِّ رَجَوْتُكَ وَفَرِقْتُ مِن النَّاسِ».

    “আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন বান্দাকে জিজ্ঞেস করবেন, এক পর্যায়ে বলবেন: তুমি যখন খারাপ কর্ম দেখেছ কেন বাঁধা দাও নি? আল্লাহ যখন বান্দাকে তার উত্তর শিক্ষা দিবেন, সে বলবে: হে আমার রব, তোমার মাগফেরাত আশা করেছি ও মানুষকে ভয় করেছি”। (ইবন মাজাহ ও ইবন হিব্বান) হাদীসটি হাসান।

     সূরা আল-ফাতিহা-এর ফযীলত

    ১৩৫. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    135- «قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: قَسَمْتُ الصَّلَاةَ بَيْنِي وَبَيْنَ عَبْدِي نِصْفَيْنِ وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ, فَإِذَا قَالَ الْعَبْدُ: ﴿ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ﴾، قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: حَمِدَنِي عَبْدِي. وَإِذَا قَالَ: ﴿ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ﴾، قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: أَثْنَى عَلَيَّ عَبْدِي. وَإِذَا قَالَ: ﴿مَٰلِكِ يَوۡمِ ٱلدِّينِ﴾ قَالَ: مَجَّدَنِي عَبْدِي (وَقَالَ مَرَّةً: فَوَّضَ إِلَيَّ عَبْدِي) فَإِذَا قَالَ: ﴿إِيَّاكَ نَعۡبُدُ وَإِيَّاكَ نَسۡتَعِينُ﴾ قَالَ: هَذَا بَيْنِي وَبَيْنَ عَبْدِي وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ, فَإِذَا قَالَ: ﴿ٱهۡدِنَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلۡمُسۡتَقِيمَ ٦ صِرَٰطَ ٱلَّذِينَ أَنۡعَمۡتَ عَلَيۡهِمۡ غَيۡرِ ٱلۡمَغۡضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا ٱلضَّآلِّينَ ٧ ﴾، قَالَ: هَذَا لِعَبْدِي وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ».

    “আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আমি সালাতকে আমার ও আমার বান্দার মাঝে দু’ভাগে ভাগ করেছি, আমার বান্দার জন্য সে যা চাইবে। বান্দা যখন বলে: ﴿ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব”।‎ আল্লাহ বলেন: আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। বান্দা যখন বলে: ﴿ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ “দয়াময়, পরম দয়ালু”। আল্লাহ বলেন: আমার বান্দা আমার গুণগান করেছে। বান্দা যখন বলে: ﴿مَٰلِكِ يَوۡمِ ٱلدِّينِ “বিচার দিবসের মালিক”। আল্লাহ বলেন: ‎আমার বান্দা আমার শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করেছে। (একবার বলেছেন: আমার বান্দা তাকে আমার ওপর ন্যাস্ত করেছে), বান্দা যখন বলে: ﴿إِيَّاكَ نَعۡبُدُ وَإِيَّاكَ نَسۡتَعِينُ “আপনারই আমরা ইবাদাত করি এবং আপনারই ‎নিকট আমরা সাহায্য চাই”। ‎আল্লাহ বলেন: এটা আমার ও আমার বান্দার মাঝে, আর আমার বান্দার জন্য যা সে চাইবে। যখন বান্দা বলে:

    ﴿ٱهۡدِنَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلۡمُسۡتَقِيمَ ٦ صِرَٰطَ ٱلَّذِينَ أَنۡعَمۡتَ عَلَيۡهِمۡ غَيۡرِ ٱلۡمَغۡضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا ٱلضَّآلِّينَ ٧﴾ [الفاتحة: 1، 7]

    “আমাদেরকে সরল পথের হিদায়াত ‎দিন তাদের পথ, যাদের উপর আপনি অনুগ্রহ করেছেন। ‎যাদেরকে নি‘আমত দিয়েছেন। যাদের উপর ‎‎(আপনার) ক্রোধ আপতিত হয় নি এবং যারা ‎পথভ্রষ্টও নয়”।‎ আল্লাহ বলেন: এটা আমার বান্দার জন্য, আমার বান্দার জন্য যা সে চাইবে”। (সহীহ মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

     ঊর্ধ্বজগতে ফিরিশতাদের তর্ক

    ১৩৬. মুয়ায ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

    136- «احْتُبِسَ عَنَّا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ غَدَاةٍ عَنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ حَتَّى كِدْنَا نَتَرَاءَى عَيْنَ الشَّمْسِ، فَخَرَجَ سَرِيعًا فَثُوِّبَ بِالصَّلَاةِ، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَتَجَوَّزَ فِي صَلَاتِهِ فَلَمَّا سَلَّمَ دَعَا بِصَوْتِهِ فَقَالَ لَنَا: «عَلَى مَصَافِّكُمْ كَمَا أَنْتُمْ» ثُمَّ انْفَتَلَ إِلَيْنَا ثُمَّ قَالَ: «أَمَا إِنِّي سَأُحَدِّثُكُمْ مَا حَبَسَنِي عَنْكُمْ الْغَدَاةَ، إنِّي قُمْتُ مِنْ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأْتُ وَصَلَّيْتُ مَا قُدِّرَ لِي فَنَعَسْتُ فِي صَلَاتِي حتى اسْتَثْقَلْتُ فَإِذَا أَنَا بِرَبِّي -تَبَارَكَ وَتَعَالَى- فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ، فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ, قُلْتُ: لَبَّيْكَ رَبِّ. قَالَ: فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ: لَا أَدْرِي رَبِّ-قَالَهَا ثَلَاثًا- قَالَ: فَرَأَيْتُهُ وَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ. فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ، قُلْتُ: لَبَّيْكَ رَبِّ، قَالَ: فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ: فِي الْكَفَّارَاتِ، قَالَ: مَا هُنَّ؟ قُلْتُ: مَشْيُ الْأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَالْجُلُوسُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ، وَإِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي الْمَكْرُوهَاتِ، قَالَ: ثم فِيم؟َ قُلْتُ: إِطْعَامُ الطَّعَامِ، وَلِينُ الْكَلَامِ وَالصَّلَاةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ، قَالَ: سَلْ، قُلْتُ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةَ قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ، أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ، وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلَى حُبِّكَ». قَالَ رَسُولُ اللَّه صلى الله عليه وسلم :  «إِنَّهَا حَقٌّ فَادْرُسُوهَا ثُمَّ تَعَلَّمُوهَا».

    “একদা ফজর সালাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলম্ব করলেন, আমরা প্রায় সূর্যের অগ্রভাগ দেখার কাছাকাছি ছিলাম, অতঃপর তিনি দ্রুত বের হলেন, সালাতের ঘোষণা দেওয়া হলো, তিনি দ্রুত সালাত আদায় করলেন, যখন সালাম ফিরালেন উচ্চ স্বরে আমাদেরকে বললেন: “তোমরা তোমাদের কাতারে থাক যেরূপ আছ”। অতঃপর আমাদের দিকে ফিরে বললেন: “আমি অবশ্যই তোমাদের বলব কি কারণে আজ আমার বিলম্ব হয়েছে। আমি রাতে উঠে ওযু করেছি অতঃপর যা তাওফিক হয়েছে সালাত আদায় করেছি, সালাতে আমার তন্দ্রা এসে যায় তাই আমার কষ্ট হচ্ছিল, হঠাৎ দেখি আমার রব আমার সামনে সর্বোত্তম আকৃতিতে। তিনি আমাকে বললেন: হে মুহাম্মাদ, আমি বললাম: লাব্বাইক আমার রব। তিনি বললেন: ঊর্ধ্বজগতের ফিরিশতারা কি নিয়ে তর্ক করছে? আমি বললাম: হে আমার রব আমি জানি না, -তিনি তা তিনবার বললেন- রাসূল বলেন: আমি দেখলাম তিনি (আল্লাহ) নিজ হাতের তালু আমার ঘাড়ের ওপর রাখলেন, এমনকি আমি তার আঙ্গুলের শীতলতা আমার বুকের মধ্যে অনুভব করেছি, ফলে আমার সামনে প্রত্যেক বস্তু জাহির হলো ও আমি চিনলাম। অতঃপর বললেন: হে মুহাম্মাদ, আমি বললাম: লাব্বাইক হে আমার রব। তিনি বললেন: ঊর্ধ্ব জগতের ফিরিশতারা কি নিয়ে তর্ক করছে? আমি বললাম: কাফ্‌ফারা সম্পর্কে। তিনি বললেন: তা কি? আমি বললাম: জামাতের জন্য হাঁটা, সালাতের পর মসজিদে বসে থাকা, কষ্টের সময় পূর্ণরূপে ওযু করা। তিনি বলেন: অতঃপর কোনো বিষয়ে? আমি বললাম: পানাহার করানো, সুন্দর কথা বলা, মানুষের ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় রাতে সালাত আদায় করা। তিনি (আল্লাহ) বললেন: তুমি চাও, আমি বললাম:

    اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةَ قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ، أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ، وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلَى حُبِّكَ

    “হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কল্যাণের কাজ করার তৌফিক চাই, খারাপ কাজ ছেড়ে দেওয়ার তৌফিক চাই, অভাবীদের জন্য ভালোবাসা, আর আপনি যেন আমাকে ক্ষমা করেন ও আমার প্রতি রহম করেন। আর যখন আপনি কোনো কাওমকে ফিতনা তথা পরীক্ষায় নিপতিত করতে চান, তখন আমাকে পরীক্ষায় নিপতিত না করে মৃত্যু দিন। আমি আপনার কাছে আপনার ভালোবাসা, আপনাকে যে ভালোবাসে তার ভালোবাসা এবং এমন আমলের ভালোবাসা চাই যা আমাকে আপনার ভালোবাসার নিকটে নিয়ে যাবে।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: নিশ্চয় এ বাক্যগুলো সত্য, তোমরা এগুলো শিখ ও শিক্ষা দাও”। (তিরমিযী) হাদীসটি সহীহ।

     আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হারাম

    ১৩৭. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    137- «إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ الْخَلْقَ حَتَّى إِذَا فَرَغَ مِنْ خَلْقِهِ قَالَتْ الرَّحِمُ: هَذَا مَقَامُ الْعَائِذِ بِكَ مِنْ الْقَطِيعَةِ، قَالَ: نَعَمْ، أَمَا تَرْضَيْنَ أَنْ أَصِلَ مَنْ وَصَلَكِ وَأَقْطَعَ مَنْ قَطَعَكِ؟ قَالَتْ: بَلَى يَا رَبِّ قَالَ: فَهُوَ لَكِ » . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : «فَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ».

    “আল্লাহ তা‘আলা মখলুক সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর যখন তিনি তার সৃষ্টি সম্পন্ন করেন তখন ‘রাহেম’[27] বলে: এ হচ্ছে তোমার নিকট বিচ্ছিন্নতা থেকে আশ্রয় চাওয়ার স্থান, তিনি বলেন: হ্যাঁ। তুমি কি সন্তুষ্ট নও যে, তোমাকে যে রক্ষা করবে আমি তাকে রক্ষা করব, তোমাকে যে ছিন্ন করবে আমি তাকে ছিন্ন করব? ‘রাহেম’ বলল: অবশ্যই হে রব, তিনি বলেন: এটাই তোমার জন্য”। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “যদি তোমরা চাও তাহলে তিলাওয়াত কর:

    ﴿فَهَلۡ عَسَيۡتُمۡ إِن تَوَلَّيۡتُمۡ أَن تُفۡسِدُواْ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَتُقَطِّعُوٓاْ أَرۡحَامَكُمۡ ٢٢ ﴾ [محمد : ٢٢]

    “সুতরাং অবাধ্য হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিলে সম্ভবত তোমরা যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে।”?। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

     হাদীসে কুদসীতে আল্লাহর বাণী: كَذَّبني ابنُ آدَمَ وشَتَمَني ابنُ آدمَ

    ১৩৮. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    138- «قَالَ اللَّهُ: كَذَّبَنِي ابْنُ آدَمَ، وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذلك, وَشَتَمَنِي وَلَمْ يَكُنْ له ذلك, فأَمَّا تَكْذِيبُهُ إِيَّاي فَقَوْلُهُ: لَن يعِيدني كَمَا بَدَأُْني، وَلَيْسَ أول الْخَلْقِ بِأهون عَلَيَّ مِنْ إعادته، وَأَمَّا شَتْمُهُ إِيَّايَ فَقَوْلُهُ: اتَّخَذَ اللَّهُ وَلَدًا, وَأَنَا الْأَحَدُ الصَّمَدُ لَمْ أَلِدْ وَلَمْ أُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لِي كُفُئًا أَحَدٌ».

    “আল্লাহ তা‘আলা বলেন: বনী আদম আমার ওপর মিথ্যারোপ করেছে, অথচ এটা তার অধিকার ছিল না। সে আমাকে গালি দিয়েছে অথচ এটা তার অধিকার ছিল না। আমাকে তার মিথ্যারোপ করার অর্থ তার বলা: তিনি আমাকে পুনরায় সৃষ্টি করবেন না যেরূপ প্রথম সৃষ্টি করেছেন, অথচ প্রথমবার সৃষ্টি করা পুনরায় সৃষ্টি করা থেকে সহজ নয়। আমাকে তার গালি হচ্ছে তার কথা: আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন, অথচ আমি এক ও অমুখাপেক্ষী, আমি জন্ম দেই নি আমাকে জন্ম দেওয়া হয় নি, আর আমার সমকক্ষ কেউ নয়”। (সহীহ বুখারী ও সুনান নাসাঈ) হাদীসটি সহীহ।

     যুগকে গালি দেওয়া হারাম

    ১৩৯. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    139- «قال اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: يُؤْذِينِي ابْنُ آدَمَ يَسُبُّ الدَّهْرَ وَأَنَا الدَّهْرُ, أُقَلِّبُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ».

    “আল্লাহ তা‘আলা বলেন: বনি আদম আমাকে কষ্ট দেয়, সে যুগকে গালি দেয় অথচ আমিই যুগ[28], আমিই রাত ও দিন পরিবর্তন করি”। (সহীহ মুসলিম, আবু দাউদ ও সুনান নাসাঈ) হাদীসটি সহীহ।

     অহংকার হারাম

    ১৪০. আবু সাঈদ খুদরী ও আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তারা বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    140- «الْعِزُّ إِزَارُهُ وَالْكِبْرِيَاءُ رِدَاؤُهُ فَمَنْ يُنَازِعُنِي عَذَّبْتُهُ».

    “ইজ্জত তার লুঙ্গি ও অহংকার তার চাদর। অতএব, যে আমার সাথে টানাহেঁচড়া করবে আমি তাকে শাস্তি দিব”। (সহীহ মুসলিম, ইবন মাজাহ ও আবু দাউদ) হাদীসটি সহীহ।

     যুলুম হারাম

    ১৪১. আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন:

    141- « يَا عِبَادِي! إِنِّي حَرَّمْتُ الظُّلْمَ عَلَى نَفْسِي وَجَعَلْتُهُ بَيْنَكُمْ مُحَرَّمًا فَلَا تَظَالَمُوا، يَا عِبَادِي! كُلُّكُمْ ضَالٌّ إِلَّا مَنْ هَدَيْتُهُ فَاسْتَهْدُونِي أَهْدِكُمْ، يَا عِبَادِي! كُلُّكُمْ جَائِعٌ إِلَّا مَنْ أَطْعَمْتُهُ فَاسْتَطْعِمُونِي أُطْعِمْكُمْ، يَا عِبَادِي! كُلُّكُمْ عَارٍ إِلَّا مَنْ كَسَوْتُهُ فَاسْتَكْسُونِي أَكْسُكُمْ، يَا عِبَادِي! إِنَّكُمْ تُخْطِئُونَ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَأَنَا أَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا فَاسْتَغْفِرُونِي أَغْفِرْ لَكُمْ، يَا عِبَادِي! إِنَّكُمْ لَنْ تَبْلُغُوا ضَرِّي فَتَضُرُّونِي، وَلَنْ تَبْلُغُوا نَفْعِي فَتَنْفَعُونِي، يَا عِبَادِي! لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَتْقَى قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مِنْكُمْ مَا زَادَ ذَلِكَ فِي مُلْكِي شَيْئًا، يَا عِبَادِي! لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَفْجَرِ قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِنْ مُلْكِي شَيْئًا، يَا عِبَادِي! لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ قَامُوا فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ فَسَأَلُونِي فَأَعْطَيْتُ كُلَّ إِنْسَانٍ مَسْأَلَتَهُ مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِمَّا عِنْدِي إِلَّا كَمَا يَنْقُصُ الْمِخْيَطُ إِذَا أُدْخِلَ الْبَحْرَ، يَا عِبَادِي! إِنَّمَا هِيَ أَعْمَالُكُمْ أُحْصِيهَا لَكُمْ، ثُمَّ أُوَفِّيكُمْ إِيَّاهَا، فَمَنْ وَجَدَ خَيْرًا فَلْيَحْمَدْ اللَّهَ، وَمَنْ وَجَدَ غَيْرَ ذَلِكَ فَلَا يَلُومَنَّ إِلَّا نَفْسَهُ».

    قَالَ سَعِيدٌ: وكَانَ أَبُو إِدْرِيسَ الْخَوْلَانِيُّ إِذَا حَدَّثَ بِهَذَا الْحَدِيثِ جَثَا عَلَى رُكْبَتَيْهِ.

    “হে আমার বান্দাগণ! নিশ্চয় আমি আমার ওপর যুলুম হারাম করেছি, আমি তোমাদের মাঝেও তা হারাম করেছি অতএব তোমরা যুলুম কর না। হে আমার বান্দাগণ! তোমাদের প্রত্যেকেই গোমরাহ তবে আমি যাকে হিদায়েত দেই, অতএব আমার কাছে হিদায়েত তলব কর আমি তোমাদেরকে হিদায়েত দিব। হে আমার বান্দাগণ! তোমরা সকলে ক্ষুধার্ত তবে আমি যাকে খাদ্য দেই, অতএব আমার নিকট খাদ্য তলব কর আমি তোমাদেরকে খাদ্য দিব। হে আমার বান্দাগণ! তোমরা সকলে বিবস্ত্র তবে আমি যাকে বস্ত্র দান করি, অতএব আমার নিকট বস্ত্র তালাশ কর আমি তোমাদেরকে বস্ত্র দিব। হে আমার বান্দাগণ! তোমরা রাত ও দিনে ভুল কর, আমি তোমাদের সকল পাপ মোচন করি, অতএব আমার নিকট ক্ষমা চাও আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করব। হে আমার বান্দাগণ! তোমরা আমার ক্ষতি পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না যে আমার ক্ষতি করবে। আর না তোমরা আমার উপকার পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে যে আমার উপকার করবে। যদি তোমাদের পূর্বপুরুষ ও পরবর্তী পুরুষ এবং মানুষ ও জিন সকলে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে নেককার ব্যক্তির মত হয়ে যাও, তাও আমার রাজত্ব সামান্য বৃদ্ধি করবে না। হে আমার বান্দাগণ! যদি তোমাদের পূর্বপুরুষ ও পরবর্তী পুরুষ এবং মানুষ ও জিন সকলে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ লোকের মত হয়ে যাও, তাও আমার রাজত্ব সামান্য হ্রাস করবে না। হে আমার বান্দাগণ! যদি তোমাদের পূর্বপুরুষ ও পরবর্তী পুরুষ এবং মানুষ ও জিন এক ময়দানে দাঁড়িয়ে আমার নিকট প্রার্থনা করে, অতঃপর আমি প্রত্যেককে তার প্রার্থিত বস্তু প্রদান করি, তাও আমার নিকট যা রয়েছে তা হ্রাস করতে পারবে না, তবে সুই যে পরিমাণ পানি হ্রাস করে যখন তা সমুদ্রে প্রবেশ করানো হয়। হে আমার বান্দাগণ! এ তো তোমাদের আমল যা আমি তোমাদের জন্য সংরক্ষণ করি, অতঃপর তোমাদের তা পূর্ণ করে দেব। অতএব যে ভালো কিছু পেল সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে, যে অন্য কিছু পেল সে যেন নিজেকে ভিন্ন কাউকে দোষারোপ না করে”। (সহীহ মুসলিম, তিরমিযী ও ইবন মাজাহ) হাদীসটি সহীহ।

    আবু সাঈদ বলেন: আবু ইদরিস খাউলানি যখন এ হাদীস বলতেন: হাঁটু গেড়ে বসতেন।

    ১৪২. জাবের ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

    142- «بَلَغَنِي حَدِيثٌ عَنْ رَجُلٍ سَمِعَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاشْتَرَيْتُ بَعِيرًا ثُمَّ شَدَدْتُ عَلَيْهِ رَحْلِي, فَسِرْتُ إِلَيْهِ شَهْرًا حَتَّى قَدِمْتُ عَلَيْهِ الشَّامَ فَإِذَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُنَيْسٍ. فَقُلْتُ لِلْبَوَّابِ: قُلْ لَهُ: جَابِرٌ عَلَى الْبَابِ، فَقَالَ: ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ؟ قُلْتُ: نَعَمْ. فَخَرَجَ يَطَأُ ثَوْبَهُ فَاعْتَنَقَنِي وَاعْتَنَقْتُهُ فَقُلْتُ: حَدِيثًا بَلَغَنِي عَنْكَ أَنَّكَ سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْقِصَاصِ فَخَشِيتُ أَنْ تَمُوتَ أَوْ أَمُوتَ قَبْلَ أَنْ أَسْمَعَهُ, قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: « يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ -أَوْ قَالَ: الْعِبَادُ- عُرَاةً غُرْلاً بُهْمًا»، قَالَ: قُلْنَا: وَمَا بُهْمًا؟ قَالَ: «لَيْسَ مَعَهُمْ شَيْءٌ ثُمَّ يُنَادِيهِمْ بِصَوْتٍ يَسْمَعُهُ مِنْ قُرْبٍ: أَنَا الْمَلِكُ أَنَا الدَّيَّانُ, وَلَا يَنْبَغِي لِأَحَدٍ مِنْ أَهْلِ النَّارِ أَنْ يَدْخُلَ النَّارَ وَلَهُ عِنْدَ أَحَدٍ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَقٌّ حَتَّى أَقُصَّهُ مِنْهُ, وَلَا يَنْبَغِي لِأَحَدٍ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ أَنْ يَدْخُلَ الْجَنَّةَ، وَلِأَحَدٍ مِنْ أَهْلِ النَّارِ عِنْدَهُ حَقٌّ حَتَّى أَقُصَّهُ مِنْهُ حَتَّى اللَّطْمَةُ»، قَالَ: قُلْنَا: كَيْفَ وَإِنَّا إِنَّمَا نَأْتِي اللَّهَ -عَزَّ وَجَلَّ- عُرَاةً غُرْلاً بُهْمًا؟ قَالَ: «بِالْحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ».

    “আমার নিকট একটি হাদীসের সংবাদ পৌঁছেছে, যা কোনো এক ব্যক্তির নিকট রয়েছে যে তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে শুনেছে। অতঃপর আমি একটি উট খরিদ করি ও তাতে সফর করি, অতঃপর একমাস সফর করে শামে গিয়ে তার সাক্ষাত লাভ করি, দেখলাম তিনি আব্দুল্লাহ ইবন উনাইস।

    আমি দারোয়ানকে বললাম: তাকে বল: জাবের দরজায় অপেক্ষা করছে। তিনি বললেন: (জাবের) ইবন আব্দুল্লাহ? আমি বললাম: হ্যাঁ, তিনি নিজ কাপড় হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে বের হলেন, অতঃপর আমার সাথে আলিঙ্গন করলেন, আমিও তার সাথে আলিঙ্গন করলাম। আমি বললাম: আপনার কাছ থেকে আমার নিকট কিসাস সম্পর্কে একটি হাদীস পৌঁছেছে যে, আপনি তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শ্রবণ করেছেন, আমি আশঙ্কা করছিলাম, হয় আপনি মারা যাবেন, অথবা আমিই মারা যাব তা শ্রবণ করার আগে। তিনি বললেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “কিয়ামতের দিন মানুষদের অথবা বলেছেন: বান্দাদের, হাজির করা হবে, (উরাত) উলঙ্গ, (গুরলান) খৎনা বিহীন, (বুহমান) খালি হাত অবস্থায়”। তিনি বলেন: আমরা বললাম: বুহমান কি? তিনি বললেন: “তাদের সাথে কিছু থাকবে না। অতঃপর তিনি তাদেরকে নির্দিষ্ট আওয়াজ দ্বারা ডাক দিবেন যা নিকট থেকে শুনা যাবে: আমিই বাদশাহ, আমি প্রতিদান দানকারী, কোনো জাহান্নামী যার কোনো জান্নাতীর নিকট হক রয়েছে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ না আমি তার থেকে তাকে কিসাস পাইয়ে দিব। কোনো জান্নাতী যার নিকট কোনো জাহান্নামীর হক রয়েছে জান্নাতে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ না আমি তার থেকে তাকে কিসাস পাইয়ে দিব, এমনকি চড় পর্যন্ত”। তিনি বলেন: আমরা বললাম: কীভাবে তা সম্ভব হবে, আমরা তো তখন আল্লাহর নিকট উলঙ্গ, গুরলান বুহমান হাজির হব?[29] তিনি বললেন: নেকি ও পাপের মাধ্যমে”। (আহমদ, বুখারী ফিল আদাবুল মুফরাদ, আবু আসেম, হাকেম) হাদীসটি হাসান লি গায়রিহী।

     জীবের ছবি অঙ্কন করা হারাম ও চিত্রকরোদের প্রতি কঠোর হুশিয়ারি

    ১৪৩. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    143- «قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذَهَبَ يَخْلُقُ كَخَلْقِي فَلْيَخْلُقُوا ذَرَّةً أَوْ لِيَخْلُقُوا حَبَّةً أَوْ شَعِيرَةً».

    “আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তার চেয়ে বড় জালেম কে যে আমার সৃষ্টির ন্যায় সৃষ্টি করে, সে যেন একটি অণু অথবা শস্য দানা অথবা গমের দানা সৃষ্টি করে”। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) হাদীসটি সহীহ।

     ঝগড়াকারীদের শাস্তি

    ১৪৪. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    144- «تُفْتَحُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ فِي كُلِّ اثْنَيْنِ وَخَمِيسٍ» . قَالَ مَعْمَرٌ: وَقَالَ غَيْرُ سُهَيْلٍ: «وَتُعْرَضُ الْأَعْمَالُ فِي كُلِّ اثْنَيْنِ وَخَمِيسٍ, فَيَغْفِرُ اللَّهُ -عَزَّ وَجَلَّ- لِكُلِّ عَبْدٍ لَا يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا إِلَّا الْمُتَشَاحِنَيْنِ يَقُولُ اللَّهُ لِلْمَلَائِكَةِ: ذَرُوهُمَا حَتَّى يَصْطَلِحَا».

    “প্রত্যেক সোম ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজা খোলা হয়”। মা‘মার বলেন: সুহাইল ব্যতীত অন্যরা বলেছেন: “প্রত্যেক সোম ও বৃহস্পতিবার আমল পেশ করা হয়, অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক বান্দাকে ক্ষমা করে দেন যারা আল্লাহর সাথে শরীক করে না, তবে ঝগড়াকারী দুই ব্যক্তি ব্যতীত, আল্লাহ তা‘আলা ফিরিশতাদের বলেন: এদেরকে অবকাশ দাও, যতক্ষণ না তারা মীমাংসা করে নেয়”। (আহমদ) হাদীসটি হাসান।

     জ্বর ও রোগ-ব্যাধি কাফ্‌ফারা

    ১৪৫. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বলেন,

    145- «أَنَّهُ عَادَ مَرِيضًا -وَمَعَهُ أَبُو هُرَيْرَةَ- مِنْ وَعْكٍ كَانَ بِهِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : «أَبْشِرْ إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ: نَارِي أُسَلِّطُهَا عَلَى عَبْدِي الْمُؤْمِنِ فِي الدُّنْيَا لِتَكُونَ حَظَّهُ مِنْ النَّارِ فِي الْآخِرَةِ».

    “তিনি এক রোগীকে দেখতে যান, যে জ্বরের কারণে অসুস্থ ছিল, (আবু হুরায়রা ছিলেন তার সাথে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেন: “সুসংবাদ গ্রহণ কর, আল্লাহ বলেন: আমার আগুন[30] দুনিয়াতে আমি আমার মুমিন বান্দার ওপর প্রবল করি, যেন তা আখিরাতের আগুনের বিনিময় হয়ে যায়”। (আহমদ, ইবন মাজাহ ও তিরমিযী) হাদীসটি হাসান।

     বান্দা অসুস্থ হলে তার জন্য সেরূপ আমল লেখা হয় যেরূপ সে সুস্থ অবস্থায় করত

    ১৪৬. উকবা ইবন আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

    146- «لَيْسَ مِنْ عَمَلِ يَوْمٍ إِلَّا وَهُوَ يُخْتَمُ عَلَيْهِ، فَإِذَا مَرِضَ الْمُؤْمِنُ قَالَتْ الْمَلَائِكَةُ: يَا رَبَّنَا عَبْدُكَ فُلَانٌ قَدْ حَبَسْتَهُ, فَيَقُولُ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ: اخْتِمُوا لَهُ عَلَى مِثْلِ عَمَلِهِ حَتَّى يَبْرَأَ أَوْ يَمُوتَ».

    “দিনের এমন আমল নেই যার উপর মোহর এঁটে দেওয়া হয় না, বান্দা যখন অসুস্থ হয় ফিরিশতারা বলে: হে আমাদের রব, আপনার অমুক বান্দাকে আপনি অসুস্থ করে দিয়েছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তার জন্য তার অনুরূপ আমল লিখতে থাক, যতক্ষণ না সে ভালো হয় অথবা মারা যায়”। (আহমদ) হাদীসটি সহীহ।

    ১৪৭. আবুল আশআস সান‘আনি থেকে বর্ণিত,

    147- «أَنَّهُ رَاحَ إِلَى مَسْجِدِ دِمَشْقَ وَهَجَّرَ بِالرَّوَاحِ فَلَقِيَ شَدَّادَ بْنَ أَوْسٍ وَالصُّنَابِحِيُّ مَعَهُ, فَقُلْتُ: أَيْنَ تُرِيدَانِ -يَرْحَمُكُمَا اللَّهُ- قَالَا: نُرِيدُ هَاهُنَا إِلَى أَخٍ لَنَا مَرِيضٍ نَعُودُهُ, فَانْطَلَقْتُ مَعَهُمَا حَتَّى دَخَلَا عَلَى ذَلِكَ الرَّجُلِ، فَقَالَا لَهُ: كَيْفَ أَصْبَحْتَ قَالَ: أَصْبَحْتُ بِنِعْمَةٍ، فَقَالَ لَهُ شَدَّادٌ: أَبْشِرْ بِكَفَّارَاتِ السَّيِّئَاتِ وَحَطِّ الْخَطَايَا فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: «إِنَّ اللَّهَ -عَزَّ وَجَلَّ- يَقُولُ: إِنِّي إِذَا ابْتَلَيْتُ عَبْدًا مِنْ عِبَادِي مُؤْمِنًا فَحَمِدَنِي عَلَى مَا ابْتَلَيْتُهُ؛ فَإِنَّهُ يَقُومُ مِنْ مَضْجَعِهِ ذَلِكَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ مِنْ الْخَطَايَا, وَيَقُولُ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ: أَنَا قَيَّدْتُ عَبْدِي وَابْتَلَيْتُهُ وَأَجْرُوا لَهُ كَمَا كُنْتُمْ تُجْرُونَ لَهُ وَهُوَ صَحِيحٌ» .

    “তিনি দামেস্কের মসজিদের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ‘রাওয়াহ’ নামক স্থানে দুপুরে অবস্থান করেন, সেখানে তিনি সাদ্দাদ ইবন আউসের সাথে সাক্ষাত করেন, (তার সাথী) ‘সুনাবিহি’ তার সাথেই ছিল। আমি বললাম: কোথায় যাচ্ছেন, আল্লাহ আপনাদের ওপর রহম করুন, তারা বলল: এখানে আমাদের এক অসুস্থ ভাইয়ের সাথে সাক্ষাতের ইচ্ছা করছি, আমরা তাকে দেখতে যাব। আমি তাদের সাথে চললাম, অবশেষে তারা ঐ ব্যক্তির নিকট গেল। তারা তাকে বলল: কিরূপ সকাল করলেন? সে বলল: আল্লাহর নি‘আমতসহ। সাদ্দাদ তাকে বলল: গুনাহের কাফ্‌ফারা ও পাপ মোচনের সুসংবাদ গ্রহণ করুন, কারণ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “আমি যখন আমার কোনো মুমিন বান্দাকে পরীক্ষা করি, অতঃপর সে আমার মুসিবতের ওপর আমার প্রশংসা করে, নিশ্চয় সে ঐ বিছানা থেকে উঠে সে দিনের মত যে দিন তার মা তাকে বেগুনা জন্ম দিয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আমি আমার বান্দাকে আটকে রেখেছি, আমি তাকে মুসিবত দিয়েছি, অতএব তোমরা তার জন্য সাওয়াব লিখতে থাক, যেমন তার সাওয়াব লিখতে তার সুস্থ অবস্থায়”। (আহমদ) হাদীসটি হাসান লি গায়রিহী।

  • 0 comments:

    Post a Comment

    New Research

    Attention Mechanism Based Multi Feature Fusion Forest for Hyperspectral Image Classification.

    CBS-GAN: A Band Selection Based Generative Adversarial Net for Hyperspectral Sample Generation.

    Multi-feature Fusion based Deep Forest for Hyperspectral Image Classification.

    ADDRESS

    388 Lumo Rd, Hongshan, Wuhan, Hubei, China

    EMAIL

    contact-m.zamanb@yahoo.com
    mostofa.zaman@cug.edu.cn

    TELEPHONE

    #
    #

    MOBILE

    +8615527370302,
    +8807171546477