• ক্যালকুলাস অফ ভ্যারিয়েশন্সঃ ০১ – হাতছানি

    ভালবাসার মানুষটির জন্য লকেটবিহীন একটি চমৎকার নেকলেস কিনেছেন। আবেগাপ্লুত হয়ে সেটা তার গলায় পরিয়ে দেওয়ার প্রাক্কালে সে হঠাৎ জিগেস করে বসল, “আচ্ছা, নেকলেসটা যে কার্ভ অনুযায়ী বেঁকে আছে, তার ইকুয়েশনটা কী?” এতো মহাবিপদ! ঢোঁক গিলে দ্রুত গুগল দেবতার পুজোয় আছড়ে পড়ে জানা হয়ত গেল যে কার্ভটার নাম ক্যাটেনারী, কিন্তু পরের আবদারটা যদি হয়, “একটু বুঝিয়ে দাও না, কেন ওটা ক্যাটেনারী?”, তাহলেই হয়েছে। সাড়েসর্বনাশ। আগ বাড়িয়ে ডাউন দ্য উইকেট খেলতে গিয়ে প্রেমিকার হাতে করুণ স্টাম্পিং।
    chain dangling 2
    তবে সুখবর হল, একটু ক্যালকুলাস অফ ভ্যারিয়েশন্স জানা থাকলে আর ভয় নেই। ঝটপট উত্তর রেডি হয়ে যাবে।
    এই ক্যাটেনারী নেকলেসের প্রবলেমটা প্রথমে এ্যাপ্রোচ না করাই ভাল। আগে দুটো বিন্দু নিয়ে ভাবা যাক। P(x_1,y_1) এবংQ(x_2,y_2) বিন্দু দিয়ে যায় এরকম কত গুলো কার্ভ আমরা আঁকতে পারব? মানে P থেকে শুরু করে Q পর্যন্ত কত গুলো রাস্তা আমরা ডিফাইন করতে পারব?
    variational-paths
    অবশ্যই অসংখ্য। কিন্তু যদি জিগেস করা হয়, এদের মধ্যে সবচে’ ছোট পথ কোনটা হবে? মুহুর্তের উত্তরঃ নীল রঙের সোজা পথটা। P থেকে Q পর্যন্ত একটা সরলরেখা টেনে দিলেই তো হয়ে গেল। যেই সরলপথ পাওয়া যাবে, সেটাই সবগুলো পথের মধ্যে সবচে’ ছোট পথ। এরপরের হাস্যকর প্রশ্নটা হলঃ প্রমাণ কী?
    এখান থেকেই গল্পের শুরু। প্রমাণ আছে। এবং প্রমাণটা অপূর্ব। খানিকটা যে কঠিন না, তা নয়। তবে সেই প্রমাণে দাঁত বসানোর জন্য এইচএসসি লেভেলের ক্যালকুলাসই যথেষ্ট। যাদের মনে হচ্ছে, যে জিনিস দেখেই বোঝা যায়, তা প্রমাণ করে লাভটা কী? – তাদের জন্য একটা ছবি।
    brachistochrone
    ওপরের ছবির লাল, সবুজ আর নীল বল গুলো এক সাথে ছেড়ে দিলে কোন বলটা সবার আগে মাটিতে পৌঁছাবে? উত্তর না জানা থাকলে বলাটা কিন্তু খুব সহজ নয়। যারা এখনো মোটিভেটেড হচ্ছেনা, তাদের জন্য আরো একটা ছবি।
    catenary
    সাবানের বুদবুদ নিয়ে খেলেনি এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। কিন্তু ছবিটার মত করে যদি আমরা সাবানের ফিল্ম তৈরি করি, তাহলে সেই সার্ফেস বরাবর যেই কার্ভটা দ্যাখা যাচ্ছে তার ইকুয়েশন বের করাটাও কি খুব কঠিন?

    মজার ব্যাপার হল, এই সাবানের বুদবুদ থেকে শুরু করে নেকলেস বিড়ম্বনা পর্যন্ত সব প্রশ্নের উত্তরই বেরিয়ে পড়বে যদি আমরা প্রমাণ করতে পারি যে দুটো বিন্দুর মাঝখানে সবচে’ সংক্ষিপ্ত পথটা হচ্ছে তাদের সংযোজক সরলরেখা। শুধু তাই নয়, ক্লাসিকাল মেক্যানিক্সের লাগ্রাঞ্জিয়ান এবং হ্যামিল্টনিয়ান ফর্মুলেশনের প্রতি যদি হঠাৎ কারো আগ্রহ জন্মে, তাদের শুভযাত্রা শুরুও হবে এই প্রমাণ থেকেই। কোয়ান্টাম ফীল্ড থিওরীর দিকে যেতে চাইলেও।
    এই পোস্টটায় আর গণিতের দিকে পা না বাড়াই। বরং ছোটবালুকারকণাবিন্দুবিন্দুজলে একটা সিরিজই তৈরি করে ফেলি। পরের পোস্টগুলোর জন্য খাতা কলম যোগে বিপুল উদ্দীপনা সহকারে হাজির হওয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানানো যাচ্ছে।

    ক্যালকুলাস অফ ভ্যারিয়েশন্সঃ ০২ – আর্কলেংথ ও তার জাতভাই সমূহ

    ক্যালকুলাস অফ ভ্যারিয়েশন্স নিয়ে ঘাটতে গিয়ে প্রথমেই যেটা লক্ষ্য করলাম, তা হল, ফার্স্টইয়ারের ক্যালকুলাসে নতুন যা যা পড়েছিলাম, তার মোটামুটি সবই ভুলে গেছি! বিশেষ করে ক্যালকুলাস দিয়ে কিভাবে একটা কার্ভের লেংথ বের করতে হয়, সেই কার্ভকে রিভল্ভ করলে যেই জিনিসটা পাওয়া যায় তার সার্ফেস এরিয়া কিভাবে বের করতে হয় – এসবের কোনটারই হদিস মস্তিষ্কের ভেতর উঁকি দিয়ে পেলামনা। তাই এসবের ওপর ঘন্টাখানেক ব্যয় করতে হল। মনে তেমন কিছু পড়লনা, তবে নতুন করে শিখে ফেললাম। এই পোস্টটা তাদের জন্য, যারা প্রথমবর্ষের আর্কলেংথ বের করা প্রজাতির জিনিসপত্র ভুলে গ্যাছেন।
    শুরু করা যাক।
    arclength-demonstration-1-
    আমরা সবাই জানি, যে উপরের ছবিতে \y(x\)  কার্ভটির নিচে যে ধূসর জায়গাটি দ্যাখা যাচ্ছে, তার ক্ষেত্রফল হল,
    x=ax=by(x) dx
    ইকুয়েশনের আগে-পিছে কি কালো রঙের চারকোনার ভেতর প্রশ্নবোধক চিহ্ন দ্যাখাচ্ছে? দ্যাখালে হয় ক্ষমা, নয়ত ইগনোর। কেন যে ওটা দ্যাখাচ্ছে কে জানে। চন্দ্র চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সব ঠিকঠাক করবার।
    সে যা হোক, আলোচনায় ফিরি। আমাদের \y(x \) কার্ভের যতটুকু দ্যাখা যাচ্ছে, ততটুকুর দৈর্ঘ্য কত? অর্থাৎ, আমরা যদি \y(x \) বরাবর একটা সুতো বসাই, তাহলে সোজা করে টেনে ধরলে  সুতোটার দৈর্ঘ্য কত হবে? এটাও ইন্টিগ্রেশন থেকেই বেরিয়ে পড়বে। শুধু ওপরের ছবিটাকে একটু ম্যাগনিফাই করে দেখতে হবে।
    arclength-demonstration-2-curve-joining
    বাঁয়ের ছবিতে \y(x \) কার্ভের খুব ছোট একটা অংশ জুম করে বড় করেছি। ইন্টিগ্রেশনের সময় আমরা ইন্টিগ্র্যান্ডের ডোমেইনকে অনেক গুলো ছোট ছোট অংশে ভাগ করে ফেলি। যেমন, এই ক্ষেত্রে x-অক্ষের ওপর আমরা \x0,x1,x2,,x8\)িিি(ি,ি:/। এখন, যেকোন \xi\)\(y(xi \) নিঃসন্দেহে কার্ভের ওপর একটা পয়েন্ট। এই \y(x0, yx1, \ldots, yx8 \)  পয়েন্ট গুলো পরপর যোগ করে দিলে যেই রেখাটা পাওয়া যাবে, সেটা দেখতে এ্যাপ্রক্সিমেটলি \y(x \)-এর মতই হবে।
    উপরের ছবির ডানদিকের অংশে সেটাই করা হয়েছে। এরপর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে আমরা \( x\) এবং \( y\)-এর চেইঞ্জ গুলোকে ডিফাইন করিঃ
    Δx=xi+1xiΔy=f(xi+1)f(xi)=yi+1yi
    \( y_i\) এবং \(y_{i+1}\) এর সংযোজক সরলরেখা গুলোর নাম রাখি \(\Delta s\).
    ছবি থেকে এটা স্পষ্ট যে ছোট ছোট \(\Delta s\) গুলোকে যোগ করে দিলেই আমরা কার্ভের কাঙ্খিত দৈর্ঘ্য পেয়ে যাব। তাই কার্ভের দৈর্ঘ্য বা আর্কলেংথ বা \(s\) – যে নামেই ব্যাটাকে ডাকি না কেন, তা হবেঃ
    s=ds
    কন্টিনিউয়াম লিমিটে \(\Delta x \rightarrow 0, \Delta y \rightarrow 0 \) ধরে ক্যালকুলাসে কিন্তু ইতিমধ্যে প্রবেশ করেছি। এখন আবারো জুম করা ছবিটার দিকে তাকালে দ্যাখা যাবে, পীথাগোরাস উপস্থিত!
    arclength-demonstration-2-
    ds2=dx2+dy2ds=dx2+dy2=dx2(1+dy2dx2)
    ds=1+(dydx)2  dx
    সুতরাং আর্কলেংথের ফরমুলা রেডি!
    s=ds=x=ax=b1+(dydx)2  dx
    এই একই ভাবনা থেকে সার্ফেস অফ রিভলিউশনের ফরমুলাও বের করে ফেলা যায়। অর্থাৎ \y(x\) কার্ভটাকে \(x\)-অক্ষের চারদিকে ঘোরালে যেই পাতিল প্রজাতির সলিড জিনিসটা পাওয়াযাবে, তার পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল, বা সহজ বাংলায় সার্ফেস এরিয়া হবেঃ
    A=dA=x=ax=b2π y(x) 1+(dydx)2  dx
    surface-of-revolution
    ডিটেইলড ক্যালকুলেশনে আপাতত যাচ্ছিনা। খুবই সহজ, সবই এক, শুধু ফ্রাস্টামের আইডিয়াটা একটু থাকতে হবে। সামান্য গুগল করলে তো পাওয়া যাবেই, প্লাস পল’স অনলাইনেও লাইনবাইলাইন হাজির করা আছে।
    এবার আরেকটু মজা করা যাক। আমাদেরকে সারাজীবন যে কার্টেসিয়ান কোঅর্ডিনেটেই বসে থাকতে হবে তেমন তো কোন কথা নেই। সিলিন্ড্রিকাল বা স্ফেরিকাল কোঅর্ডিনেটেও তো চলে যেতে পারি। তখন এই আর্কলেংথের প্রবলেমটা হবে আরও নান্দনিক। যদি প্রশ্ন করা হয়, একটা সিলিন্ডারের গা বরাবর দুটো পয়েন্টের মধ্যে একটা ফাংশন  ডিফাইন করা আছে।
    এই লাল রঙের কার্ভটার দৌর্ঘ্য বের করতে হবে।তখন? এটাও একদমই সহজ। শুধু একটু বেশি মাথা খাটানো। সিলিন্ডারের গায়ের যেকোন বিন্দু আইডেন্টিফাই করার সবচে’ সহজ উপায় হল সিলিন্ড্রিকাল কোঅর্ডিনেট সিস্টেম \(r,θ,z\)। এবং সেটা শুধুই পোলার কোঅর্ডিনেট \(r,θ\)-এর \(z\)-এক্সিস বরাবর
    সুতরাং সিলিন্ডারের গায়ে যেকোন বিন্দুর স্থানাংক \(x,y,z\) এর জন্য,
    x=rcosθy=rsinθz=z
    সিলিন্ডারের গা বরাবর ছোট ছোট \(ds\) নিয়ে পীথাগোরাসের মহাবাক্য অনুযায়ী আর্কলেংথের ফরমুলা দাঁড়াবেঃ
    S=θ1θ2r+(dzdθ)2dθ
    লেটেকে আর ক্যালকুলেশন টাইপ করার ধৈর্য্য পাচ্ছিনা। হাতেই রংচং মেরে লিখে দিলাম।
    আমার রঙিন ক্যালকুলেশনের নিরীহ ভুলটার দিকে সবার কুনজর পড়ার আগেই কেটে পড়ি। ব্র্যাকেট গুলো বড় বেয়াদব। নিজের জায়গা ছেড়ে শুধু অন্যের জায়গায় গিয়ে বসে পড়ে।
    তবে কেটে পড়ার আগে বলে নেই, পরের পোস্ট থেকে শুরু হবে সত্যিকারের মজা!

    ক্যালকুলাস অফ ভ্যারিয়েশন্সঃ ৩ – পথের পাঁচালি


  • 0 comments:

    Post a Comment

    New Research

    Attention Mechanism Based Multi Feature Fusion Forest for Hyperspectral Image Classification.

    CBS-GAN: A Band Selection Based Generative Adversarial Net for Hyperspectral Sample Generation.

    Multi-feature Fusion based Deep Forest for Hyperspectral Image Classification.

    ADDRESS

    388 Lumo Rd, Hongshan, Wuhan, Hubei, China

    EMAIL

    contact-m.zamanb@yahoo.com
    mostofa.zaman@cug.edu.cn

    TELEPHONE

    #
    #

    MOBILE

    +8615527370302,
    +8807171546477