মালাউন শব্দটি আরবি শব্দ “ملعون” থেকে উদ্ভূত যার অর্থ অভিশপ্ত বা আল্লাহর অভিশাপপ্রাপ্ত।মালাউন একটি গালি যা বাংলাদেশে মূলত হিন্দুদের উদ্দেশ্য ব্যবহৃত হয়।কাজী রফিকুল হক সম্পাদিত বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত অভিধানের বইয়ে আরবি মালাউন শব্দের অর্থ দেওয়া আছে 'অভিশপ্ত', 'বিতাড়িত' এবং 'শয়তান'। আর ডক্টর মুহম্মদ এনামূল হক এবং শিবপ্রসন্ন লাহিড়ী সম্পাদিত 'বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান' গ্রন্থে 'মালাউন শব্দটির প্রথম অর্থ দেওয়া হয়েছে লানতপ্রাপ্ত, অভিশপ্ত, বিতাড়িত, কাফের। দ্বিতীয় অর্থ দেওয়া হয়েছে 'শয়তান' এবং তৃতীয় অর্থ মুসলমান কর্তৃক ভিন্ন সম্প্রদায়ের লোককে দেওয়া গালিবিশেষ। অন্যদিক বহুভাষাবিদ, পন্ডিত ড. মু. শহীদুল্লাহ সম্পাদিত 'বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান' এ 'মালাউন শব্দের অর্থ দেওয়া হয়েছে 'বিধর্মী' এবং 'অভিশপ্ত"। হিন্দুদের কোরান হাদিসে কোথাও মালাউন শব্দে ডাকা হয়নি। এমনকি ইহুদী নাসারাদেরও কোরান একটা স্থান দেয়া হয়েছে আহলে কিতাব বা কিতাবে বিশ্বাসী। আল্লাহ তালা কোন ধর্মের মানুষ সম্পর্কেই কোরানে অভিশাপ প্রদান করেনি । তবে শুধু একজনকেই আল্লাহর অভিশপ্ত বলা হয়েছে সে হল মারদুদ শয়তান । তাকেই মালাউন ঘোষণা করা আছে । কেননা, সেই ইবলিস হল আল্লাহর নিয়ামত থেবে বঞ্চিত। তার সন্মান সুখ্যাতি সকল কিছুই ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে তাই সে আল্লাহর অভিশাপপ্রাপ্ত।
বাকি থাকলো যারা মুসলীম ব্যতিত ভিন্নধর্মী, তাদেরকে আল্লাহ তালা ফুল ফল জল পানি ব্যবসা বানিজ্য বিজ্ঞান, সুখ শান্তি প্রভাব প্রতিপত্তি, এসবের কিসে থেকে তাদের আল্লাহ বঞ্চিত করে রেখেছেন?
তাই মুসলীম ব্যতীত অন্য ধর্মের মানুষকে আল্লাহ মালাউন বলেননি, এবং কাউকে বলা উচিতও নয় । আল্লাহ তালা শুধু অবিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে পরকালের আজাবের ভয় দেখিয়েছেন । অবিশ্বাসী অর্থ কাফের । কিন্তু হিন্দুরা কাফের নয়, এরা হল পৌত্বলিক। আরবীতে যাকে মুসরিক বলা হয়েছে । তাদের মালাউন বলা হয়নি ।
0 comments:
Post a Comment