গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
আয়াতে শিফা
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি নিরাময়ের জন্য শিফা স্বরূপ আয়াত শরীফসমুহ নিম্নরূপ:
২. وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ # التوبة: ١٤
৩. وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ [يونس: ٥٧
৪. يَخْرُجُ مِنْ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ [النحل: ٦٩
৫. وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ [الشعراء: ٨٠
৬. وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ [الإسراء: ٨٢
৭. قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاءٌ [فصلت: ৪৪
দোয়া বা মুনাজাত কবুল হওয়া প্রসঙ্গে
ادعونى استحب لكم
অর্থ: “তোমরা আমার নিকট দোয়া করো, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করবো।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
اجيب دعوة الداع اذا دعان
অর্থ: “তারা (বান্দা-বান্দী, উম্মত, জিন-ইনসান) যখন আমাকে ডাকে আমি তাদের ডাকে সাড়া দেই।”
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
ليس شيئ اكرم على الله من الدعاء
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া অপেক্ষা কোনো ইবাদতই অধিক মর্যাদাশীল ও সম্মানিত নয়।” (তিরমিযী শরীফ)
দোয়া কবুলের পাঁচটি বিশেষ রাত্রির মধ্যে পহেলা শাওওয়ালের রাত অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের রাতও একটি। কাজেই বিশ্বের সকল মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে, চাঁদ দেখে মাস শুরু করা।স্মরণিয়, মানুষ প্রথমত: চাঁদের তারিখ গণনার ত্রুটির কারণে পহেলা শাওওয়ালের রাতের নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।দ্বিতীয়ত: পহেলা শাওওয়ালের রাতের মর্যাদা ও ফযীলত না জানার কারণে এবং এই রাতের গুরুত্ব না বুঝার কারণে, এই রাতের নিয়ামত হাছিল করতে ব্যার্থ হচ্ছে।অতএব, সমস্ত মুসলমানগণের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে, পহেলা শাওওয়ালের ফযীলত ও মর্যাদা জেনে এবং গুরুত্ব অনুধাবন করে শরীয়তবিরোধী আনন্দ-উল্লাস থেকে বিরত থেকে শরীয়তসম্মতভাবে এই রাত অতিবাহিত করা।
প্রত্যেক মুসলমানের করণীয় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
“দুররুল মুখতার” কিতাবে উল্লেখ আছে যে, “তাকবীরে তাশরীক একবার বলা ওয়াজিব, তবে যদি (কেউ) একাধিকবার বলে, তাহলে তা ফযীলতের কারণ হবে। আর “ফতওয়ায়ে শামী” কিতাবে উল্লেখ আছে,
وقيل ثلاث مرات
অর্থ: কেউ কেউ বলেছেন (তাকবীরে তাশ্রীক) তিনবার।” “গায়াতুল আওতার শরহে দুররুল মুখতার” কিতাবে উল্লেখ আছে,
اور واجب ہے تکبیر تشریق صحیح ترقول میں ایکبار بسبب اسکے مامور ہونے کے اور اگر زیادہ کہےایکبار سے تو ہوگا ثواب.
অর্থ: “বিশুদ্ধ বর্ণনা মতে (আল্লাহ পাক-উনার পক্ষ থেকে) আদিষ্ট হওয়ার কারণে একবার তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। আর যদি একবারের চেয়ে অতিরিক্ত বলে তবে ছাওয়াবের অধিকারী হবে।”
হানাফী মাযহাব মতে, নামাযের ক্বাযা ও কাফফারা।
নামাযের ক্বাযার বিষয়টি যেমনিভাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে ঠিক তেমনি নামাযের কাফফারার বিষয়টিও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনার দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি নিরাময়ের জন্য শিফা স্বরূপ আয়াত শরীফসমুহ নিম্নরূপ:
১. বিসবিল্লাহসহ সুরা ফাতিহা শরীফ ১ বার /১১ বার /৭০ বার
২. وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ # التوبة: ١٤
৩. وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ [يونس: ٥٧
৪. يَخْرُجُ مِنْ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ [النحل: ٦٩
৫. وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ [الشعراء: ٨٠
৬. وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ [الإسراء: ٨٢
৭. قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاءٌ [فصلت: ৪৪
অসুস্থ হওয়ার পূর্বে সুস্থতাকে গণিমত মনে করা পবিত্র শরীয়ত উনার নির্দেশ। অসুস্থ হলে চিকিৎসার পাশাপাশি তাওবা ইসতেগফার করা এবং সুস্থ হওয়ার পর সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া জ্ঞাপন করা উচিত।
সকাল-সন্ধ্যা এই দু’য়া পাঠ করলে ঋণ পরিশোধ করা সহজতর হয়।
সকাল-সন্ধ্যা এই দু’য়া পাঠ করলে ঋণ পরিশোধ করা সহজতর হয়।
للَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِن ضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
উচ্চারনঃ “আল্লাহুম্মা ইন্নী আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুজনি ওয়া আউজুবিকা মিনাল আ’যজি ওয়াল কাসালি ওয়া আউজুবিকা মিনাল যুবনি ওয়াল বুখলি ওয়াআউজুবিকা মিন গলাবাতিদ্দাইনি ওয়াক্বহরির রিযাল”।
অর্থঃ “হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি দুশ্চিন্তা থেকে ও দুর্ভাবনা থেকে। কাপুরুষতা ও অলসতা থেকে আমি আপনার আশ্রয় প্রর্থনা করি। আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি ভীরুতা ও কৃপপনতা থেকে এবং আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি ঋনের ভার এবং তজ্জনিত মানুষের চাপ থেকে”।
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি কোনো হক্কানী ওলীআল্লাহ উনার পিছনে নামায আদায় করলো, সে যেনো হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পিছনে নামায পড়লো। আর যে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পিছনে নামায আদায় করলো তাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমা করে দিবেন। সুবহানাল্লাহ!
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
ادعونى استحب لكم
অর্থ: “তোমরা আমার নিকট দোয়া করো, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করবো।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
اجيب دعوة الداع اذا دعان
অর্থ: “তারা (বান্দা-বান্দী, উম্মত, জিন-ইনসান) যখন আমাকে ডাকে আমি তাদের ডাকে সাড়া দেই।”
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
ليس شيئ اكرم على الله من الدعاء
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া অপেক্ষা কোনো ইবাদতই অধিক মর্যাদাশীল ও সম্মানিত নয়।” (তিরমিযী শরীফ)
সুতরাং দোয়াই সকল ইবাদত-বন্দেগীর মূল। তাই প্রতিটি ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য যেমন কিছু তর্জ-তরীক্বা ও নিয়ম-নীতি রয়েছে, ঠিক তদ্রুপ দোয়া করার জন্যও কিছু নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীক্বা রয়েছে। সেগুলো জেনে সেই অনুযায়ী দোয়া বা মুনাজাত করলে অবশ্যই সেই দোয়া মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কবুল এবং মঞ্জর হবে। ইনশাআল্লাহ। নিম্নে কতিপয় তর্জ-তরীক্বা উল্লেখ করা হলো:
(১) হালাল খাদ্য গ্রহণ করা দোয়া কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত।
(২) মিথ্যা ও যাবতীয় পাপ কাজ পরিহার করা।
(৩) দুরূদ শরীফ পাঠের মাধ্যমে মুনাজাত শুরু করা এবং মাঝখানে ও শেষেও বেশি বেশি দুরূদ শরীফ পাঠ করা। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন-
ان الدعاء موقوف بين السماء و الارض حتي تصلي نبيك فصلوا في اول الدعاء و اوسطها و اخرها.
অর্থ: “দোয়া বা মুনাজাত আসমান ও যমীন উভয়ের মধ্যখানে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে (সেই দোয়া মহান আল্লাহ পাক উনার পর্যন্ত পৌঁছে না) যতক্ষণ পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করা না হয়। সুতরাং তোমরা দোয়া বা মুনাজাতের শুরুতে, মধ্যখানে ও শেষে দুরূদ শরীফ পাঠ করো।”
(৪) সুন্নতী তরতীব অনুযায়ী দোয়া বা মুনাজাত করা।
(৫) মুনাজাত করার সময় উভয় হাত সিনা বা বুক পর্যন্ত উত্তোলন করা।
(৬) উভয় হাত মিলিত অবস্থায় রাখা, যাতে কোনো ফাঁক না থাকে।
(৭) হাতের তালু আসমান বরাবর রাখা। কেননা নামায উনার ক্বিবলা যেমন পবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে, তদ্রƒপ মুনাজাত উনার ক্বিবলা হচ্ছে আসমান। তাই দুই হাতের তালু আসমান মুখী করে রাখতে হবে।
(৮) দোয়া বা মুনাজাত করার সময় অমনোযোগী না থাকা এবং অলসতা ও গাফলতী না করা।
(৯) হাক্বীক্বী হুসনে যন বা সুধারণা এবং দৃঢ় ইয়াক্বীন বা বিশ্বাসের সাথে দোয়া বা মুনাজাত করা যে- মহান আল্লাহ পাক তিনি অবশ্যই আমার দোয়া কবুল করবেন। কেননা ان عند الظن
عبدى بي “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দার ধারণা অনুযায়ী।”
(১০) যিনি মুনাজাত করবেন উনার সাথে যারা মুনাজাতে শরীক হবেন, তারা দোয়া করার সময় ‘আমীন’ ‘আমীন’ বলবেন।
(১১) নেককার, পরহেযগার, হক্কানী আলিম, আল্লাহওয়ালা ও আল্লাহওয়ালী ব্যক্তিত্ব উনাদের সাথে শরীক হয়ে দোয়া বা মুনাজাত করা।
(১২) পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পর, জুমুয়া, ঈদ, তারাবীহ ইত্যাদি নামাযের পর এবং দ্বীনী মাহফিল বা দ্বীনি মজলিস উনার পর সম্মিলিতভাবে হাত তুলে দোয়া বা মুনাজাত করলে সেটাও কবুল হয় বলে উল্লেখ রয়েছে। আবার মধ্য রাতের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত দোয়া কবুল হওয়ার সময়। আর সর্বোচ্চ খাছভাবে এবং সমস্ত দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ দিন ও রাত্রি হলেন মহাপবিত্র ১২ই রবিউল আউওয়াল শরীফ।
(১৩) নিম্নোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ পাঠ করে মুনাজাত শেষ করা সুন্নত।”
(১৩) নিম্নোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ পাঠ করে মুনাজাত শেষ করা সুন্নত।”
سبحان ربك رب العزة عما يصفون و سلام علي المرسلين والحمد لله رب العلمين.
২. শবে বরাত,
৩. শবে ক্বদর,
৪.ঈদুল ফিতর ও
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, আপনাকে তারা চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে। আপনি বলুন, চাঁদ মানুষের জন্য (ইবাদত) ও হজ্জের সময় নিরূপক।’
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা কোনো অন্যায় কাজ দেখলে হাতে বাধা দাও; সম্ভব না হলে মুখে বাধা দাও; তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে অন্তরে ঘৃণা করে দূরে সরে থাকো। তবে এটা হচ্ছে দূর্বল ঈমানের পরিচয়।’ অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘এরপর ঈমানের কোন স্তর নেই।’ অর্থাৎ যারা এই তিন স্তরের বাহিরে থাকবে তারা মুসলমান হিসেবে গণ্য হবেনা।
সউদী ওহাবী সরকার চাঁদ না দেখে মনগড়াভাবে সউদী আরবে মাস সঠিক তারিখে শুরু না করাতে ফরয রোযা তরক হওয়াসহ লাইলাতুল ক্বদর এবং দোয়া কবুলের বিশেষ রাত ঈদের রাতের নিয়ামত থেকে মানুষ বঞ্ছিত হতে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
দুই পবিত্র মসজিদে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের মুসলমানসহ সউদী আরবের এবং বিশ্বের সকল মুসলমানগণের জন্য এ বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ করা ফরয ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।
জীবনের সঞ্চিত, কষ্টার্জিত অর্থে হজ্জ করতে যাওয়া বিশ্বের অগণিত মুসলমানের এ বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট ফিকির করা প্রয়োজন।বিশ্বের সচেতন মুসলমানগণের প্রতিবাদের মুখে হয়তো সউদী ওহাবী সরকার তাদের এই ভ্রান্ত পদ্ধতি থেকে অবশ্যই ফিরে আসবে।
মুসলমান
পরিপূর্ণ আনুগত্যের সাথে অত্মসমর্পণ কারী।
মুসলমান দুই প্রকার। যথা:-
১। আমলে কামিল
২। আমলে ফাসিক।
২। আমলে ফাসিক।
আমলে কামিল
যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সমস্ত হুকুম-আহকাম মানে, এবং তদানুযায়ী আমলও করে থাকে।
আমলে ফাসিক
যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার হুকুম-আহকামসমূহ স্বীকার করে কিন্তু আমল করেনা।
যেমন: পাঁচ ওয়াক্ত নামায কায়েম করা, শরয়ী পর্দা করা, হালাল রুজি কামাই করা ও ভক্ষণ করা ফরজ। যারা স্বীকার করেন কিন্ত নফ্সের পায়রবী কিংবা শয়তানের ধোকায় এ ফরজ আমল সমূহ সঠিকভাবে পালন করছেন না কিন্তু এ জন্য নিজদেরকে গুনাহগার বলে মনে করেন, পবিত্র শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে তাদেরকে বলা হয়েছে ফাসিক।
আর এ সমস্ত বিষয়কে যারা অস্বীকার করবে, পবিত্র শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে তাদেরকে বলা হয়েছে কাফির। (সমূহ আক্বায়ীদের কিতাব)
সুতরাং যা ২/৩ ওয়াক্ত নামায পড়ে, নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়েনা বা শুধু জুমুয়ার নামায পড়ে থাকে, তারা ফরজ তরক করার কারণে ফাসিকের অন্তর্ভূক্ত। তবে এ কারণে তাদেরকে তিরস্কার করা যাবেনা। পাঁচ ওয়াক্ত নামায নিয়মিত পড়ার জন্য তাদেরকে নসীহত বা উৎসাহিত করা আবশ্যক।
(১) সত্যিকার আল্লাহ ওয়ালা, আল্লাহ ওয়ালি হয়ে যাওয়া। পবিত্র কুরআন শরীফে বলা হয়েছে, كُونُواْ رَبَّانِيِّينَ অর্থঃ “তোমরা সকলেই আল্লাহওয়ালা আল্লাহ্ওয়ালী হয়ে যাও।” [সূরা আল ইমরান-৭৯]
অর্থ্যাৎ প্রত্যেক মুসলমানকেই আল্লাহওয়ালা আল্লাহ্ওয়ালী হতে হবে। মাথার তালু থেকে পায়ের তলা, হায়াত থেকে মউত পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে শরীয়ত অনুযায়ি পরিচালিত হতে হবে। তবেই মহান আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত (শান্তি) বর্ষিত হবে।
অর্থ্যাৎ প্রত্যেক মুসলমানকেই আল্লাহওয়ালা আল্লাহ্ওয়ালী হতে হবে। মাথার তালু থেকে পায়ের তলা, হায়াত থেকে মউত পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে শরীয়ত অনুযায়ি পরিচালিত হতে হবে। তবেই মহান আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত (শান্তি) বর্ষিত হবে।
(২) মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শক্র সম্পর্কে জানা ও সচেতন হওয়া।
মহান আল্লাহ পাক সূরা মায়িদা-এর ৮২তম আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন,
لَتَجِدَنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَدَاوَةً لِّلَّذِينَ آمَنُواْ الْيَهُودَ وَالَّذِينَ أَشْرَكُواْ অর্থ: “মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে ইহুদী অতপর মুশরিক।” অর্থাৎ ইসলাম ও মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো প্রথমত: ইহুদীরা, দ্বিতীয়ত: মুশরিকরা আর তৃতীয়ত: হচ্ছে নাছারারা। এক কাথায় সকল বিধর্মীরাই ইসলাম ও মুসলমানের শত্রু।
মহান আল্লাহ পাক সূরা মায়িদা-এর ৮২তম আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন,
لَتَجِدَنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَدَاوَةً لِّلَّذِينَ آمَنُواْ الْيَهُودَ وَالَّذِينَ أَشْرَكُواْ অর্থ: “মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে ইহুদী অতপর মুশরিক।” অর্থাৎ ইসলাম ও মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো প্রথমত: ইহুদীরা, দ্বিতীয়ত: মুশরিকরা আর তৃতীয়ত: হচ্ছে নাছারারা। এক কাথায় সকল বিধর্মীরাই ইসলাম ও মুসলমানের শত্রু।
(৩) সত্যিকার ওলী আল্লাহগণের সোহবত ইখতিয়ার করা।
মহান আল্লাহ্ পাক উনার কালাম পাকে ইরশাদ করেন,
وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُم بِالْغَدٗةِ وَالْعَشِىِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهٗ অর্থঃ- “ঐ সমস্ত লোকদের ছোহ্বতকে লাযেম করে নাও; যারা সকাল-সন্ধা আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির জন্য যিকর-আযকারে মশগুল।” (সূরা কাহ্ফ/২৮)
মহান আল্লাহ্ পাক উনার কালাম পাকে ইরশাদ করেন,
وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُم بِالْغَدٗةِ وَالْعَشِىِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهٗ অর্থঃ- “ঐ সমস্ত লোকদের ছোহ্বতকে লাযেম করে নাও; যারা সকাল-সন্ধা আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির জন্য যিকর-আযকারে মশগুল।” (সূরা কাহ্ফ/২৮)
তাকবীরে তাশরীক
‘আল্লাহ আকবার, আল্লাহু আকবার। লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার। আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
পবিত্র যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আছর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পর যে তাকবীর পাঠ করা হয় তাকেই তাকবীরে তাশরীক বলে। জামায়াতে বা একাকী, মুসাফির অথবা মুকীম, শহর অথবা গ্রামে প্রত্যেককেই প্রতি ফরয নামাযের পর একবার তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব আর তিনবার পাঠ করা মুস্তাহাব-সুন্নত।
তাকবীরে তাশরীক উনার ইতিহাস
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্টই উল্লেখ আছে, ‘আমি দুই যবেহ উনার সন্তান।’ অর্থাৎ একজন হচ্ছেন হযরত ইসমাঈল জাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি আর অন্যজন হচ্ছেন হযরত খাজা আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম।
হযরত ইসমাঈল জাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র বিলাদত শরীফ লাভ করলেন এবং যখন হাঁটা হাঁটির বয়সে উপনীত হলেন তখন হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ইসমাঈল জাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে মিনায় নিয়ে গিয়ে বললেন, ‘হে আমার প্রিয় বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি আপনাকে যবেহ বা পবিত্র কুরবানী করছি। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী?’ হযরত ইসমাঈল জাবীবুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি জবাব দেন, ‘হে আমার সম্মানিত পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি তা বাস্তবায়িত করুন। ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।’ সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যখন হযরত ইসমাঈল জাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার গলা মুবারক উনার মধ্যে ছুরি চালাতে থাকেন; মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত! যতই ছুরি চালানো হচ্ছে হযরত ইসমাঈল জাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার গলা মুবারক কিন্তু কাটছে না। সুবহানাল্লাহ! হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ছুরির ধার পরীক্ষা করার জন্য ছুরিটি একটি পাথরে আঘাত করলেন। সাথে সাথে পাথরটি দ্বিখ-ণ্ডিত হয়ে গেলো। হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে ছুরি! তুমি পাথরকে দ্বিখ-ণ্ডিত করে দিলে অথচ হযরত ইসমাঈল জাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার গলা মুবারক কাটতে পারছো না? মহান আল্লাহ পাক তিনি ছুরির যবান খুলে দেন। ছুরি বললো, ‘হে মহান আল্লাহ পাক উনার খলীল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম! আপনি একবার কাটার জন্য আদেশ করেন আর আমার রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সত্তরবার কাটতে নিষেধ করছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ইসমাঈল জাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে যবেহ করার চেষ্টায় নিয়োজিত ছিলেন ঠিক এমতাবস্থায় মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বেহেশত থেকে একটি দুম্বা এনে হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট দেয়ার নির্দেশ মুবারক দিলেন।
হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি যখন দুম্বা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলেন দেখলেন, হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার প্রাণাধিক প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাঈল জাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার গলা মুবারক উনার মধ্যে ছুরি মুবারক চালাচ্ছেন। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আশ্চর্যান্বিত হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার বড়ত্ব, মহত্ব প্রকাশ করতে গিয়ে বলে উঠলেন, ‘আল্লাহ আকবার, আল্লাহু আকবার।’ একথা বলে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ইসমাঈল জাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সরিয়ে ছুরির নিচে দুম্বাটি দিয়ে দিলেন। হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে তখন তিনিও মহান আল্লাহ পাক উনার একত্ববাদের ঘোষণা দিয়ে বললেন, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার’।
এদিকে হযরত ইসমাঈল জাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিও যখন বুঝতে পারলেন যে, তিনি যবেহ না হয়ে উনার পরিবর্তে একটি দুম্বা যবেহ হচ্ছে তিনিও তখন মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা করে বললেন, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’ সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে এটাই তাকবীরে তাশরীক নামে মশহুর।’
এদিকে হযরত ইসমাঈল জাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিও যখন বুঝতে পারলেন যে, তিনি যবেহ না হয়ে উনার পরিবর্তে একটি দুম্বা যবেহ হচ্ছে তিনিও তখন মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা করে বললেন, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’ সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে এটাই তাকবীরে তাশরীক নামে মশহুর।’
“দুররুল মুখতার” কিতাবে উল্লেখ আছে যে, “তাকবীরে তাশরীক একবার বলা ওয়াজিব, তবে যদি (কেউ) একাধিকবার বলে, তাহলে তা ফযীলতের কারণ হবে। আর “ফতওয়ায়ে শামী” কিতাবে উল্লেখ আছে,
وقيل ثلاث مرات
অর্থ: কেউ কেউ বলেছেন (তাকবীরে তাশ্রীক) তিনবার।” “গায়াতুল আওতার শরহে দুররুল মুখতার” কিতাবে উল্লেখ আছে,
اور واجب ہے تکبیر تشریق صحیح ترقول میں ایکبار بسبب اسکے مامور ہونے کے اور اگر زیادہ کہےایکبار سے تو ہوگا ثواب.
অর্থ: “বিশুদ্ধ বর্ণনা মতে (আল্লাহ পাক-উনার পক্ষ থেকে) আদিষ্ট হওয়ার কারণে একবার তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। আর যদি একবারের চেয়ে অতিরিক্ত বলে তবে ছাওয়াবের অধিকারী হবে।”
হানাফী মাযহাব মতে, নামাযের ক্বাযা ও কাফফারা।
কাজ্বা নামায দুপ্রকার-
১) কাজ্বায়ে আদা
২) কাজ্বায়ে উমরী।
কাজ্বায়ে আদা দুধরনের-
প্রথমতঃ নামায যদি পাঁচ ওয়াক্ত বা তার চেয়ে কম কাজ্বা হয়, তাহলে তরতীব অনুযায়ী কাজ্বা আদায় করে তারপর ওয়াক্তিয়া নামায পড়তে হবে। যেমন কারো যদি ফজর, যোহর, আছর, মাগরীব, ইশার নামায কাজ্বা হয়, তাহলে পরবর্তী ফজরের নামায পড়ার পূর্বে উক্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামায পর্যায়ক্রমে কাজ্বা আদায় করে তারপর ফজর নামায পড়তে হবে, অন্যথায় ফজর নামায আদায় হবেনা।
দ্বিতীয়তঃ যদি ৬ (ছয়) ওয়াক্ত বা তদুর্ধ নামায কাজ্বা হয়, তাহলে ওয়াক্তিয়া নামাজ পড়ার সময় কাজ্বা নামাযের তরতীব রক্ষা না করলেও চলবে। বরং কাজ্বা নামায সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী হারাম ওয়াক্ত বাদে যেকোন সময় আদায় করলেই নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে।
তবে তরতীবওয়ালা নামাযের ক্ষেত্রে কাজ্বা আদায় করতে গেলে যদি ওয়াক্তিয়া নামাযের সময় কম থাকার কারণে ওয়াক্তিয়া নামায ফওত হওয়ার আশঙ্কা হয়, তাহলে তরতীব রক্ষা না করে বরং ওয়াক্তিয়া নামায পড়ে নিতে হবে। যেমন কারো মাগরিব ও ইশার নামায কাজ্বা হয়ে গিয়েছে এবং ফজরের ওয়াক্তে এমন সময় ঘুম হতে উঠেছে- সুর্য উদয় হতে ৫/৭ মিনিট বাকী, এখন ওযু করে যদি কাজ্বা নামায আদায় করতে যায়, তাহলে আর ফজরের ফরজ নামায পড়া যায়না, এমতাবস্থায় তরতীব রক্ষা করার প্রয়োজন নেই। বরং ফজরের নামায পড়ে নিতে হবে।
তরতীব শর্ত ভঙ্গের কারণসমূহ:-
তিন কারণে তরতীব শর্ত ভঙ্গ হয়।
১) পাঁচ ওয়াক্তের বেশী কাজ্বা থাকলে,
২) ওয়াক্ত কম থাকলে,
৩) তরতীবের কথা ভূলে গেলে।
কাজ্বা নামাযের নিয়ত
আমি ফজরের দুরাকায়াত বা জোহর, আছর, এশার চার রাকায়াত বা মাগরিব, বিতর তিন রাকায়াত ফরজ/ওয়াজিব নামায ক্বিবলামুখী হয়ে কাজ্বা আদায় করতেছি, আল্লাহু আকবার।
উমরী কাজ্বা
যে নামায থাকা সম্বন্ধে নামাযী ব্যক্তি সন্দেহে রয়েছে, তার কাজ্বা নামায বাকী আছে কিনা? এ সন্দেহের কারণে যে কাজ্বা নামায পড়া হয়, উহাকে উমরী কাজ্বা বলে। উমরী কাজ্বার ক্ষেত্রে মাগরীব ও বিতর নামায তিন রাকায়াতর স্থলে চার রাকায়াত পড়তে হয়।
যেমন- মাগরীব এবং বিতর নামায নিয়ম মোতাবেক যথারীতি শেষ করে সালাম ফিরানোর পূর্বে দাঁড়িয়ে আর এক রাকায়াত (চতুর্থ রাকায়াত) নামায সুরা মিলায়ে পড়তে হবে। অতঃপর রুকু সিজদা করে তাশাহুদ, দরূদ শরীফ ও দোয়া মাশুরা পড়ে সালাম ফিরায়ে নামায শেষ করতে হবে। (আলমগীরী, বাহরুর রায়েক, হিদায়া, ফতহুল ক্বাদীর ইত্যাদি)
যেমন- মাগরীব এবং বিতর নামায নিয়ম মোতাবেক যথারীতি শেষ করে সালাম ফিরানোর পূর্বে দাঁড়িয়ে আর এক রাকায়াত (চতুর্থ রাকায়াত) নামায সুরা মিলায়ে পড়তে হবে। অতঃপর রুকু সিজদা করে তাশাহুদ, দরূদ শরীফ ও দোয়া মাশুরা পড়ে সালাম ফিরায়ে নামায শেষ করতে হবে। (আলমগীরী, বাহরুর রায়েক, হিদায়া, ফতহুল ক্বাদীর ইত্যাদি)
নামাযের ক্বাযার বিষয়টি যেমনিভাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে ঠিক তেমনি নামাযের কাফফারার বিষয়টিও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনার দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে।
যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال لا يصلى احد من احد ولا يصوم احد من احد ولكن يطعم عنه مكان كل يوم مد من حنطة
অর্থ : রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, একজন আরেকজনের পক্ষ থেকে নামায আদায় করবে না এবং একজন আরেকজনের পক্ষ থেকে রোযা রাখবে না। বরং প্রতিদিনের (রোযার) পরিবর্তে তার পক্ষ থেকে এক মুদ করে গম খাদ্য হিসেবে প্রদান করবে। (নাসায়ী শরীফ)
অনুরূপ একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ হযরত ইমাম বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সূত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বাণী হিসেবে উদ্ধৃত করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার রোযা ক্বাযা করে যে ব্যক্তি ইনতিকাল করবে তার পক্ষ থেকে প্রতিদিনের পরিবর্তে অর্ধ সা (দুই মুদ) গম খাদ্য হিসেবে প্রদান করতে হবে।
উপরে উল্লেখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনার উপর ভিত্তি করে হানাফী মাযহাবে যে মাসয়ালা গ্রহণ করা হয়েছে তা হচ্ছে, একজনের ক্বাযাকৃত বা অনাদায়ী নামায আরেকজন আদায় করে দিলে তা আদায় হবে না। অনুরূপ একজনের ক্বাযাকৃত রোযা আরেকজন রাখলে তাও আদায় হবে না। এক্ষেত্রে ক্বাযাকৃত নামায ও রোযা উভয়ের পরিবর্তে ফিদইয়া বা কাফফারা অভাবগ্রস্তদেরকে প্রদান করতে হবে।
যেমন এ প্রসঙ্গে উছূল শাস্ত্রের প্রসিদ্ধ কিতাব নূরুল আনওয়ার কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
ووجوب الفدية فى الصلوة للاحتياط
অর্থ: আর নামাযের ক্ষেত্রে ফিদইয়া ওয়াজিব হওয়ার বিষয়টি সতর্কতার ভিত্তিতে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
আরো বর্ণিত রয়েছে
يجب على الوارث ان يفدى بعوض كل صلوة ما يفدى لكل صوم على الاصح
অর্থ: বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী ওয়ারিছগণের উপর প্রত্যেক নামাযের পরিবর্তে একেকটি রোযার সমপরিমাণ ফিদইয়া আদায় করা ওয়াজিব হবে।
মোট কথা হলো, রোযার ফিদইয়ার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وعلى الذين يطيقونه فدية طعام مسكين
অর্থ: যারা রোযা রাখতে অপরাগ বা অক্ষম তারা রোযা রাখার পরিবর্তে ফিদইয়া স্বরূপ কোন মিসকীনকে খাদ্য দান করবে। (সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮৪)
অর্থাৎ এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার হুকুমটি এমন একটি কারণের সাথে সম্পর্কিত, যে কারণটি রোযার ক্ষেত্রে যেমন রয়েছে তেমনি নামাযের ক্ষেত্রেও রয়েছে, আর তা হচ্ছে অপারগতা। অপরপক্ষে রোযা যেরূপ উদ্দেশ্যপূর্ণ শারীরিক ইবাদত, তদ্রƒপ নামাযও উদ্দেশ্যপূর্ণ শারীরিক ইবাদত; বরং রোযা অপেক্ষা নামায অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কাজেই সম্মানিত শরীয়ত যেমন ফিদইয়াকে রোযার স্থলাভিষিক্ত নির্ধারণ করেছে, তদ্রƒপ উহা নামাযেরও স্থলাভিষিক্ত হতে পারে। তবে ক্বিয়াসের ভিত্তিতে নয়; বরং সতর্কতার দিক বিবেচনায় ফিদইয়ার হুকুমকে নামাযের দিকে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই আশায় যে, মৃত ব্যক্তি যেইসব নামায ক্বাযা করেছে উহার পরিবর্তে এ ফিদইয়া মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফে যথেষ্ট হবে। নতুবা অন্ততঃপক্ষে ছদকার ছওয়াব তো সে পাবেই।
বস্তুতঃ হানাফী মাযহাবে নামাযের জন্য ফিদইয়া (কাফফারা) ওয়াজিব করা হয়েছে সতর্কতার দিক বিবেচনা করে, ক্বিয়াসের উপর ভিত্তি করে নয়। আর এক্ষেত্রে আমরা ফিদইয়া কবুল হওয়ার আশা পোষণ করি।
স্মরণীয় যে, ফিদইয়ার পরিমাণ হচ্ছে এক ফিতরা অর্থাৎ অর্ধ সা গম বা আটা অথবা তার মূল্য; যা বর্তমানে গ্রাম হিসেবে ১৬৫৭ গ্রাম প্রায়। তবে উত্তম হলো দুই কেজি পরিমাণ আটা বা তার মূল্য প্রদান করা।
উল্লেখ্য, ফরযের ক্বাযা আদায় করা ফরয এবং ওয়াজিবের ক্বাযা আদায় করা ওয়াজিব। তা নামায হোক কিংবা রোযা হোক। এ হিসেবে একদিনের রোযার জন্য একটি ফরয। আর একদিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জন্য পাঁচ ফরয এবং এক ওয়াজিব।
অতএব, কারো যদি পুরো একদিনের নামায ক্বাযা হয়ে যায়, এবং সে যদি তা আদায় না করে ইনতিকাল করে তাহলে তার কাফফারা বা ফিদইয়া বাবদ পাঁচ ফরয ও এক ওয়াজিবের জন্য মোট ছয় ফিতরা পরিমাণ আটা বা তার মূল্য গরীব মিসকীনদের দান করে দিতে হবে। অর্থাৎ ফরয ও ওয়াজিব প্রতি ওয়াক্ত নামাযের জন্য অর্ধ সা বা তার মূল্য অভাবগ্রস্তদেরকে প্রদান করা হচ্ছে পবিত্র শরীয়ত উনার নির্দেশ।
দলীলসমূহ: মুসলিম শরীফ, নাসায়ী শরীফ, মিশকাত শরীফ, তাফসীরে মাযহারী শরীফ, আযযিয়াদাত, নূরুল আনওয়ার, ফতওয়ায়ে আলমগীরী, ফতওয়ায়ে শামী ইত্যাদি।
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ব্যতীত অন্য কেহই
সরাসবি মাটির থেকে তৈরী নন।
সরাসবি মাটির থেকে তৈরী নন।
মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যখন আপনার পালন কর্তা ফেরেস্তাদের বললেন, আমি মাটির মানূষ সৃষ্টি করবো” (সূরা মায়িদা-৭১)।
ব্যাখ্যা: (”তাফসীরে সামারকান্দী” এর ৩য় জি: ১৪১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে।) “ নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টি করবো মাটি থেকে বাশার” অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে।
ব্যাখ্যা: (”তাফসীরে সামারকান্দী” এর ৩য় জি: ১৪১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে।) “ নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টি করবো মাটি থেকে বাশার” অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে।
মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি মানুষকে উত্তম কাঁদামাটি থেকে শুকনো ঠন ঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছি”। (সূরা হিজর-২৬)
ব্যাখ্যা: আল্লামা ইমাম বাগবী রহমতুল্লাহি আলািইহি “তাফসীরে বাগবী” এর ৩য় জি: ৯৪ প্রষ্ঠায় লিখেন-
অর্থ: ”নি:সন্দেহে আমি ইনসানকে অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে শুকনো মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি”।
হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত অন্য কেউই সরাসরি মাটির থেকে তৈরি নন।
বরং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি উনার কুদরত দ্বারা প্রত্যেকেই তার মায়ের রেহেম শরীফ-এ কুদরতীভাবে তৈরি করেছন। সুবহানাল্লাহ্।
ব্যাখ্যা: আল্লামা ইমাম বাগবী রহমতুল্লাহি আলািইহি “তাফসীরে বাগবী” এর ৩য় জি: ৯৪ প্রষ্ঠায় লিখেন-
অর্থ: ”নি:সন্দেহে আমি ইনসানকে অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে শুকনো মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি”।
হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত অন্য কেউই সরাসরি মাটির থেকে তৈরি নন।
বরং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি উনার কুদরত দ্বারা প্রত্যেকেই তার মায়ের রেহেম শরীফ-এ কুদরতীভাবে তৈরি করেছন। সুবহানাল্লাহ্।
মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “ তিনিই দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু যিঁনি উনার প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সুন্দর করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন । অত:পর তিনি উনার বংশধর সৃষ্টি করেন সন্মানিত পানির নির্যাস থেকে”। (সূরা সাজদা-৬,৭,৮)
মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ”তিনি পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন মানবকে অত:পর তাকে রক্তগত, বংশ ও বৈবাহিক সম্পর্কশীল করেছেন । আপনার পালনকর্তা সবকিছুই করতে সক্ষম”। (সূরা ফুরকান- ৫৪)
মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ”আমি কী তোমাদেরকে সন্মানিত পানি হতে সৃষ্টি করিনি”। (সূরা মুরসালাত-২০)
মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “অত:পর মানুষের দেখা উচিত সে কী বস্তু হতে সৃষ্টি হয়েছে । সে সৃষ্টি হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে” (সূরা তারিক্ব-৫,৬)।
মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “ মহান আল্লাহ্ পাক তিনি তোমাদের আকৃতি গঠন করে থাকেন মায়ের রেহেম শরীফ-এ যেভাবে ইচ্ছা”।(সূরা আল ইমরান-৬)
অতএব, প্রমানিত হইল যে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত আর কোনো মানুষ-ই সরাসরি মাটির থেকে তৈরি নয়।
ইমাম, মুজতাহিদগণ ইসলামী শরীয়ত উনার বিধানকে ৮টি ভাগে বিভক্ত করেছেন।
ইসলামী শরীয়ত উনার বিধান সমূহ
ইমাম, মুজতাহিদগণ ইসলামী শরীয়ত উনার বিধানকে ৮টি ভাগে বিভক্ত করেছেন।
১. ফরয: এমন সব বিধান যা অকাট্ট্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত এবং যা অস্বীকার করার অবকাশ নেই। যেমন: ফরয নামায, রমদ্বান শরীফ উনার রোযা ও ইলমে তাছাউফ ও ইসলামী শরীয়ত উনার ইলম অর্জন করা ইত্যাদি।
ফরয দু’প্রকার। যথাঃ
ফরয দু’প্রকার। যথাঃ
ক) ফরযে আইন: যে সব কাজ প্রত্যেক বালেগ-বালেগা, বুদ্ধিমান-বুদ্ধিমতী নর-নারীর উপর সমভাবে ফরয তাকে ফরযে আইন বলে। যেমন: নামায আদায় করা ও যাকাত দেয়া ইত্যাদি।
খ) ফরযে কিফায়া: যা কিছু লোক আদায় করলেই সকলে গুনাহ হতে বেঁচে যায় তাকে ফরযে কিফায়া বলে। যেমন: জানাযা নামায পড়া, মৃত ব্যক্তির কাফন-দাফন করা, জিহাদ করা ইত্যাদি।
২. ওয়াজিব: ইসলামী শরীয়ত উনার যে সকল হুকুম দলীলে যন্নীর দ্বারা সাব্যস্ত সেগুলোকে ওয়াজিব বলা হয়। যেমন: বিতর নামায, ছদকাতুল ফিত্র ও কুরবানী ইত্যাদি।
৩. সুন্নত: মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ যা বলেছেন, করেছেন বা অন্যের কোনো কথা বা কাজের প্রতি সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন তাকে পবিত্র সুন্নত বলে।
সুন্নত দু’প্রকার। যথা:
সুন্নত দু’প্রকার। যথা:
ক) সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ: যে সমস্ত কাজ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ সবসময় করেছেন এবং করার তাকীদ করেছেন যা বিনা ওযরে কোনো সময় ছাড়েননি। যেমন: আযান, ইকামত, খতনা করা ইত্যাদি।
খ) সুন্নতে গায়বে মুয়াক্কাদাহ: যে সকল কাজ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ করেছেন, কোনো কোনো সময় ছেড়েও দিয়েছেন সেই সমস্ত কাজকে সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদাহ (সুন্নতে যাযেদাহ) বলে। যেমন: আছর ও ঈশার নামাযের ফরযের পূর্বে ৪ রাকাত সুন্নত নামায ইত্যাদি।
৪. নফল (মুস্তাহাব): ফরয ও ওয়াজিবের চেয়ে অতিরিক্তি যা করা হয় তাই নফল।
৫. হারাম: যা ফরযের বিপরীত। যা অকাট্ট্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত। যেমন: ছবি উঠানো, বেপর্দা হওয়া ইত্যাদি।
৬. মাকরূহ: মাকরূহ যা দলীলে যন্নী দ্বারা প্রমাণিত। ইহা দু’প্রকার। যথা:
ক) মাকরূহে তাহ্রীমী: মাকরূহে তাহ্রীমী ওয়াজিবের বিপরীত যা হারামের কাছাকাছি। যেমন: তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে আদায় করা।
খ) মাকরূহে তানযিহী: যা পরিত্যাগ করা উত্তম তথা তাকওয়ার অন্তর্ভুক্ত। যেমন: বিনা অযুতে মসজিদে প্রবেশ করা ইত্যাদি।
৭. মুবাহ: ঐ সমস্ত নতুন কাজ যা শরীয়তে নিষেধ নেই। যেমন- পোলাও, বিরিয়ানী, বুট ইত্যাদি খাওয়া। ট্রেন, মোটরগাড়ী, প্লেন ইত্যাদি যানবাহনে চড়া।
৮. বিদ্য়াত: এমন বিষয় যার ভিত্তি শরীয়তে তথা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসে নেই তাকে বিদ্য়াত বলে।
বিদ্য়াত দু’প্রকার। যথা:
বিদ্য়াত দু’প্রকার। যথা:
ক) বিদ্য়াতে হাসানাহ্: যা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর নতুন উদ্ভব হয় এবং তা দ্বীনের সাহায্য করে থাকে অথবা সাহায্যকারী না হলেও দ্বীনের কোনো ক্ষতি করে না তাই বিদ্য়াতে হাসানাহ্। যেমন: নাহু, ছরফের কিতাব, তারাবীহ্ নামায জামায়াতে পড়া ইত্যাদি।
খ) বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ: যে নতুন বিষয় উদ্ভব হওয়ার কারণে দ্বীনের কিছুমাত্রও ক্ষতি হয়, তাই বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্। যেমন: ইহুদী, নাছারা ও ভ- মাওলানাদের কু-প্রথা, টাই, কিস্তি, টুঁপি ইত্যাদি বিধর্মী ও বিদ্য়াতীদের পোশাক পরিধান করা ইত্যাদি।
নারীর পাশাপাশি পর্দা পুরুষের ওপরও ফরজ ।
১. আল্লাহ তায়ালা বলেন হে নবী! মুমিন পুরুষদের বলে দিন তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনমিত রাখে এবং যৌন পবিত্রতা রক্ষা করে চলে। এটাই তাদের জন্য পবিত্রতম পন্থা। নিশ্চয়ই তারা যা কিছু করে আল্লাহ তা অবহিত’ (সূরা আন নূর : ৩০)।
২. জারির ইবনে আবদিল্লাহ বাজালি রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে কোনো নারীর প্রতি হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সাথে সাথেই দৃষ্টি সরিয়ে নেবে (সহিহ মুসলিম)।
৩.বুরাইদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-কে বললেন, হে আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! দৃষ্টির ওপর দৃষ্টি ফেলবেননা না। হঠাৎ যে দৃষ্টি পড়ে ওটা তোমার ক্ষমার্হ; কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টির জন্য ক্ষমাহীন পাপ (হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আবু দাউদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪. আবু উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যার দৃষ্টি কোনো স্ত্রী লোকের সৌন্দর্যের প্রতি পতিত হয়, অতঃপর দৃষ্টি সরিয়ে নেয়, আল্লাহ তায়ালা এর বিনিময়ে তাকে এমন এক ইবাদত দান করেন, যার মজা বা স্বাদ সে তার অন্তরেই উপভোগ করে ( হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহি )।
৫. রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন, সাবধান! কোনো (পর) পুরুষ যেন কোনো (পর) নারীর সাথে নির্জনে অবস্থান না করে। কেননা যখনই তারা (নিরিবিলিতে) মিলিত হয়, শয়তান তাদের তৃতীয়জন হয় এবং (উভয়কে) কুকর্মে লিপ্ত করানোর প্রচেষ্টায় সে তাদের পিছু লেগে যায় ( তিরমিজি শরিফ)।
কোনো (পর) পুরুষ যেন কোনো মহিলার সাথে নির্জনে মিলিত না হয়। তবে মাহরাম ব্যক্তির (ব্যাপারটি) স্বতন্ত্র। আর কোনো মহিলা যেন মাহরাম ছাড়া একাকী তিন দিনের পথ (৪৮ মাইল) পথ ভ্রমণ না করে (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)।চার শ্রেণীভুক্ত মানুষের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছে
لعن الله من لعن والده ولعن الله من ذبح لعير الله ولعن الله من اوى محدثا ولعن الله من غير منارالأرض.
অর্থ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি তার পিতাকে লা’নত (অভিশাপ) দেয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে লা’নত করেন। যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক ব্যতীত অন্য কারো জন্য (উদ্দেশ্যে) পশু যবেহ (কুরবানী) করে, তাকেও মহান আল্লাহ পাক তিনি লা’নত করেন। যে ব্যক্তি কোনো নব উদ্ভাবন (বিদয়াত) প্রচলনকারীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় প্রদান করে, তাকেও মহান আল্লাহ পাক তিনি লা’নত করেন এবং যে ব্যক্তি যমীনের সীমানা চিহ্ন (আইল) পরিবর্তন করে, তাকেও মহান আল্লাহ পাক তিনি লা’নত করেন। (ছহীহ মুসলিম শরীফ)
উপরোক্ত হাদীছ শরীফ উনার থেকে লক্ষণীয় যে, চার শ্রেণীভুক্ত মানুষের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত বা অভিশাপ। যেমন-
১. পিতা-মাতাকে অভিশম্পাত প্রদানকারী ব্যক্তি।
২. মহান আল্লাহ পাক ভিন্ন অন্য কারো উদ্দেশ্যে পশু যবেহ বা কুরবানীকারী ব্যক্তি।
৩. বিদয়াত প্রচলনকারী ব্যক্তিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় প্রদানকারী ব্যক্তি।
৪. অন্যের জমির আইল ধ্বংস করে জমি দখলকারী ব্যক্তি।
অতএব, উপরিউক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত বা অভিশাপ থেকে পরিত্রাণ লাভ করেত হলে পিতা-মাতাকে অভিশাপ করা যাবে না; মহান আল্লাহ পাক ছাড়া তিনি অন্য কারো উদ্দেশ্যে পশু যবেহ বা কুরবানী করা যাবে না; কোনো নব উদ্ভাবন (বিদয়াত) প্রচলনকারী ব্যক্তিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া যাবে না এবং কারো জমির আইল ভেঙ্গে জমি দখল করা যাবে না।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে এসব থেকে বেঁচে থাকার তাওফীক দান করুন। আমীন!
মুসলমানদের উচিত এভাবে দোয়া করা-
ﺍَﻟﻠّٰﻬُﻢَّ ﺍَﻫْﻠِﻚِ ﺍﻟْﻜَﻔَﺮَﺓَ ﻭَﺍﻟْﻔَﺴَﻘَﺔَ ﻭَﺍﻟْﻔَﺠَﺮَﺓَ ﻭَﺍﻟْـﻤُﺒْﺘَﺪِﻉَﺓَ ﻭَﺍﻟْـﻤُﺸْﺮِﻛِﻲَﻥْ . ﺍَﻟﻠّٰﻬُﻢَّ ﺷَﺘِّﺖْ ﺷَـﻤْﻠَﻬُﻢْ . ﺍَﻟﻠّٰﻬْﻢَّ ﻣَﺰِّﻕْ ﺟَـﻤْﻌَﻬُﻢْ . ﺍَﻟﻠّٰﻬُﻢَّ ﺩَﻣِّﺮْ ﺩِﻳَﺎﺭَﻫُﻢْ . ﻭَﺍﺧْﺬُﻝْ ﻣَﻦْ ﺧَﺬَﻝَ ﺍﻟْـﻤُﺴْﻠِﻤِﻴْﻦَ ﻭَﺍﺧْﺬُﻝْ ﻣَﻦْ ﺧَﺬَﻝَ ﺩِﻳْﻦَ ﺳَﻴِّﺪِﻧَﺎ ﺣَﺒِﻴْﺒِﻨَﺎ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻬُﻌَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ .
উচ্চারণ : “আল্লাহুম্মা আহলিকিল কাফারতা ওয়াল ফাসাক্বতা ওয়াল ফাযারতা ওয়াল মুবতাদি‘আতা ওয়াল মুশরিকীন। আল্লাহুম্মা শাত্তিত শামলাহুম। আল্লাহুম্মা মাযযিক্ব যাম‘আহুম। আল্লাহুম্মা দাম্মির দিয়ারাহুম। ওয়াখজুল মান খ্বজালাল মুসলিমীনা ওয়াখজুল মান খ্বজালা দীনা সাইয়্যিদিনা হাবীবিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।”
অর্থ: “আয় আল্লাহ পাক! আপনি কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনএবং বিদয়াতীদের ধ্বংস করুন। আয় আল্লাহ পাক! তাদের চক্রান্তসমূহ নস্যাৎ করে দিন। ইসলাম বিরোধীদের ঐক্য বিনষ্ট করে দিন। তাদের বাসস্থানগুলো গুঁড়িয়ে দিন। মুসলমানদের লাঞ্ছিতকারীদেরক আপনি লাঞ্ছিত করুন। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বীন তথা ইসলামকে হেয় প্রতিপন্নকারীদেরকে আপনি অপমানিত করুন।”
মুসলমানদের উচিত এভাবে দোয়া করা-
ﺍَﻟﻠّٰﻬُﻢَّ ﺍَﻫْﻠِﻚِ ﺍﻟْﻜَﻔَﺮَﺓَ ﻭَﺍﻟْﻔَﺴَﻘَﺔَ ﻭَﺍﻟْﻔَﺠَﺮَﺓَ ﻭَﺍﻟْـﻤُﺒْﺘَﺪِﻉَﺓَ ﻭَﺍﻟْـﻤُﺸْﺮِﻛِﻲَﻥْ . ﺍَﻟﻠّٰﻬُﻢَّ ﺷَﺘِّﺖْ ﺷَـﻤْﻠَﻬُﻢْ . ﺍَﻟﻠّٰﻬْﻢَّ ﻣَﺰِّﻕْ ﺟَـﻤْﻌَﻬُﻢْ . ﺍَﻟﻠّٰﻬُﻢَّ ﺩَﻣِّﺮْ ﺩِﻳَﺎﺭَﻫُﻢْ . ﻭَﺍﺧْﺬُﻝْ ﻣَﻦْ ﺧَﺬَﻝَ ﺍﻟْـﻤُﺴْﻠِﻤِﻴْﻦَ ﻭَﺍﺧْﺬُﻝْ ﻣَﻦْ ﺧَﺬَﻝَ ﺩِﻳْﻦَ ﺳَﻴِّﺪِﻧَﺎ ﺣَﺒِﻴْﺒِﻨَﺎ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻬُﻌَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ .
উচ্চারণ : “আল্লাহুম্মা আহলিকিল কাফারতা ওয়াল ফাসাক্বতা ওয়াল ফাযারতা ওয়াল মুবতাদি‘আতা ওয়াল মুশরিকীন। আল্লাহুম্মা শাত্তিত শামলাহুম। আল্লাহুম্মা মাযযিক্ব যাম‘আহুম। আল্লাহুম্মা দাম্মির দিয়ারাহুম। ওয়াখজুল মান খ্বজালাল মুসলিমীনা ওয়াখজুল মান খ্বজালা দীনা সাইয়্যিদিনা হাবীবিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।”
অর্থ: “আয় আল্লাহ পাক! আপনি কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনএবং বিদয়াতীদের ধ্বংস করুন। আয় আল্লাহ পাক! তাদের চক্রান্তসমূহ নস্যাৎ করে দিন। ইসলাম বিরোধীদের ঐক্য বিনষ্ট করে দিন। তাদের বাসস্থানগুলো গুঁড়িয়ে দিন। মুসলমানদের লাঞ্ছিতকারীদেরক আপনি লাঞ্ছিত করুন। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বীন তথা ইসলামকে হেয় প্রতিপন্নকারীদেরকে আপনি অপমানিত করুন।”
0 comments:
Post a Comment