উম্মুল মু’মিনীন খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম
উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম
উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পিতা খুওয়াইলিদ ইবনে আসাদ ইবনে আব্দুল উযযা ইবনে কুসাই। এ অনুযায়ী উনার পবিত্র নসব মুবারক চতুর্থ ধাপে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নসব মুবারক উনার সাথে মিলিত হয়েছে। উনার পিতা বনী আসাদের সাইয়্যিদ ছিলেন। হারবুল ফিজারে তিনি ছিলেন আপন গোত্রের অধিনায়ক। উনার মাতা ফাতেমা বিনতে জায়েদ। তিনিও কুরাঈশী ছিলেন। হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নসব মুবারকের দিক থেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বাধিক নিকটবর্তী। তাছাড়া মুবারক খিদমতে আসার ধারাবাহিকতায় তিনিই প্রথম।পবিত্র শৈশব ও কৈশোর কাল মুবারক
উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক কর্তৃক পূর্ব হতেই মনোনীত। সঙ্গত কারণেই উনার পবিত্র হায়াত মুবারক অন্যান্যদের থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম হওয়াই স্বাভাবিক। আইয়ামে জাহিলিয়ার সেই কঠিন সময়ে হাতে গোনা যে সব লোক দ্বীনে হানীফে দায়িম ছিলেন উনাদের মধ্যে হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি অন্যতমা। পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণের পর হতেই তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম। উনার খুব ছুরতী মুবারক সকলকে আশ্চার্যান্বিত করে। উনার হিকমত পূর্ণ ক্বওল শরীফ সকলকে ভাবিয়ে তোলে। উনার স্বতন্ত্র খুছুছিয়ত মুবারক পুরো মক্কা শরীফ জুড়ে উনাকে সুপরিচিতা ও সম্মানিতা হিসেবে অধিষ্ঠিত করে। উনার উসওয়াতুন হাসানাহ চারিত্রিক মাধুর্যতা মুবারকের উৎকৃষ্টতা উনাকে ত্বহিরা লক্বব মুবারকে মশহূর করেছে।
উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পিতা খুওয়াইলিদ ছিলেন পুরো আরব জাহানের বড় ব্যবসায়ীদের একজন। পিতার ইন্তেকালের পর ওয়ারিশ সত্বে তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হন। আবার ক্রমান্বয়ে দু’স্বামীর নিকট হতেও তিনি অনেক সম্পত্তি লাভ করেন। এই অঢেল সম্পত্তি নিয়ে তিনি ব্যবসা পরিচালনা করেন। সুদূর বসরা-সিরিয়া পর্যন্ত উনার বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই বৃহত্তম বাণিজ্যিক কাফেলাকে সততা ও আমানতদারীর সাথে শৃঙ্খলা, যোগ্যতা, সূক্ষ কৌশলের মাধ্যমে পরিচালনার জন্য সুযোগ্য ও বিশেষ বৈশিষ্টপূর্ণ একজন লোক দরকার। কিন্তু অনেক খোজাখুজির পরেও এমন সুযোগ্য লোক নির্ধারণ সম্ভব হয়নি। পরিশেষে দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো ‘আল আমীন’ লক্বব মুবারকে মশহূর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি।
উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অনুরোধের প্রেক্ষিতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বৃহত্তম বানিজ্যিক কাফেলার তত্ত্বাবধান মুবারক গ্রহণ করেন। এ কাফেলাকে রহমত বরকতে পরিপূর্ণ করেন। অল্প সময়ের ব্যবধানে সে সম্পত্তি কয়েক গুণ বৃদ্ধি হয়ে যায়। কিতাবে উল্লেখ করা হয়, নূরে মুজাস্সাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তত্ত্বাবধান মুবারকের দরূণ উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্পত্তি এত পরিমাণে বৃদ্ধি পায় যে সমগ্র মক্কা শরীফ উনার সমস্ত ব্যবসায়ীদের যত সম্পদ, উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার এককভাবে তার চেয়ে অনেক বেশী সম্পদ ছিল। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উম্মুল মু’মিনীন হিসেবে পূর্ব হতেই নির্ধারিত। তথাপি কতিপয় আনুষ্ঠানিকতা দরকার। আনুষ্ঠানিক নবুওয়ত প্রকাশের ১৫ বছর পূর্বে নূরে মুজাস্সাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন ২৫ বছর,তখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার আগ্রহের দরূণ উনাকে শাদী মুবারক করেন। উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সমস্ত সম্পদ নূরে মুজাস্সাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে হাদিয়া করেন। বলা হয়,উনার উরুস মুবারকের দিনে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য স¦র্ণের পাত বিছিয়ে দেওয়া হয়। স্বর্ণের সেই পাত সমূহ মাড়িয়ে তিনি হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক রাখেন। সুবহানাল্লাহ!
প্রসিদ্ধ, গ্রহণযোগ্য এবং তারযীহপ্রাপ্ত মতে,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাতজন আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। উনাদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।
আনুষ্ঠানিকভাবে ওহী নাযিল মুবারক নাযিল হওয়া শুরু হলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বপ্রথম উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে অবহিত করেন। তিনিই সর্বপ্রথম পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করেন। হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনয়নের ক্ষেত্রে কায়িনাতের সমস্ত মহিলা হতে অগ্রগামী। (কানজুল উমাল)
আনুষ্ঠানিক নবুওয়াত মুবারক প্রকাশের পূর্ব হতেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রবিত্র হেরা গুহায় অবস্থান মুবারক গ্রহণ করেন। সেই সময় উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম প্রায়ই মুবারক খিদমতে গমন করতেন। তারই ধারাবহিহিকতায় একদিন তিনি যাচ্ছিলেন, তিনি পৌছার পূর্বেই হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আপনার খিদমত মুবারকে আসতেছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে উনাকে সালাম জানাবেন। অতপর, উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি যখন পৌছলেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিষয়টি উনাকে জানালেন। অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জবান মুবারকে সালাম মুবারক জানিয়েছেন।সুবহানাল্লাহ।
পবিত্র ইসলাম উনার সূচনালগ্নে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং ইসলাম উনার খিদমতে উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল ত্যাগ উনাকে কায়িনাতবাসীর জন্য উসওয়াতুন হাসানাহ বানিয়েছে। যা হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে।
উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার আলোচনা মুবারক করতেন, তখন উনার অনেক ছানা-ছীফত মুবারক করতেন। একদা এমনি পরিস্থিতিতে আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি তো পবিত্র বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করেছেন। এখন মহান আল্লাহ পাক আপনাকে অনেক উম্মুল মু’মিনীন হাদিয়া করেছেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দেখুন! সমস্ত মানুষ যখন আমাকে অস্বীকার করেছে, তখন কেবল তিনিই আমার প্রতি ঈমান এনেছিলেন। সকলই যখন আমাকে সত্য রসূল হিসেবে গ্রহণ করেনি, তখন কেবল তিনিই আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। সকলই যখন আমাকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করেছে, তখন কেবল তিনিই আমার যাবতীয় খিদমত মুবারকের আঞ্জাম প্রদান কেেছন। কেবল তিনিই আমাকে স্বান্তনা প্রদান করেছেন। (তাবারানী)
প্রত্যক্ষ দর্শী উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি অনেক অহী মুবারকের প্রত্যক্ষদর্শী। উনার খিদমত মুবারকের প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে অনেক আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছে। আনুষ্ঠানিক অহী মুবারক নাযিল হলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে বিষয়টি জানিয়ে উনাকে কম্বল মুবারকে আবৃত করার আদেশ মুবারক প্রদান করেন। মুবারক আদেশ পালনার্থে উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে কম্বল মুবারকে আবৃত করেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে শাদী মুবারক করেন, তখন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক ছিল ৪০ বছর। আনুষ্ঠানিক নবুওওয়াত প্রকাশকালে উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক ৫৫ বছর। আনুষ্ঠানিক নবুওওয়াত প্রকাশের প্রথম দশ বছর সর্ব প্রকার খিদমতের তিনি আঞ্জাম দিয়েছেন। কাফির মুশরিকদের জুলুম-নির্যাতন যখন চরম পর্যায়ে পৌছলো, তখনও তিনি উনার খিদমতে ছিলেন অবিচল। কাফিররা যখন মুসলমানগণ উনাদেরকে শিয়াবে আবু তালিবে তিন বছর অবরুদ্ধ করে রাখলো, তখনও তিনি ছিলেন দৃঢ়চিত্ত। তিনি উনার ধন-সম্পদ, জান-মাল, প্রভাব-প্রতিপিত্তি সমস্ত কিছু বিসর্জন দিয়ে মুবারক খিদমতে একনিষ্টভাবে আঞ্জাম প্রদান করেছেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নবুওওয়াত উনার ঘোষণার দশম বছরে হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম পবিত্র ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ৬৫ বছর বয়স মুবারকে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার বছরকে আমুল হুযন নামে আখ্যায়িত করা হয়।উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সুদীর্ঘ ২৫ বছর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দেন। উনার সমস্ত সম্পদই মুবারক খিদমতে ব্যয় করেন। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার-প্রসারে উনার সুমহান অবদান বেমেছাল নযীর স্থাপন করেছেন। পারিবারিক, সামাজিক, শারীরিক, মানষিক এবং অর্থনৈতিক সর্ব দিক থেকেই তিনি এককভাবে খিদমত মুবারক করেছেন।
উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহে উমরী মুবারক
পবিত্র বিলাদত শরীফ
সর্বাধিক মশহুর মতে, উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আমুল ফীলের ১৫ বছর পূর্বে এবং আনুষ্ঠানিক নবুওওয়াত প্রকাশের ৫৫ বছর পূর্বে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মাঝে পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেন।
পবিত্র নসব মুবারক
উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পিতা খুওয়াইলিদ ইবনে আসাদ ইবনে আব্দুল উযযা ইবনে কুসাই। এ অনুযায়ী উনার পবিত্র নসব মুবারক চতুর্থ ধাপে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নসব মুবারক উনার সাথে মিলিত হয়েছে। উনার পিতা বনী আসাদের সাইয়্যিদ ছিলেন। হারবুল ফিজারে তিনি ছিলেন আপন গোত্রের অধিনায়ক। উনার মাতা ফাতেমা বিনতে জায়েদ। তিনিও কুরাঈশী ছিলেন। হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নসব মুবারকের দিক থেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বাধিক নিকটবর্তী। তাছাড়া মুবারক খিদমতে আসার ধারাবাহিকতায় তিনিই প্রথম।পবিত্র শৈশব ও কৈশোর কাল মুবারক
উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক কর্তৃক পূর্ব হতেই মনোনীত। সঙ্গত কারণেই উনার পবিত্র হায়াত মুবারক অন্যান্যদের থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম হওয়াই স্বাভাবিক। আইয়ামে জাহিলিয়ার সেই কঠিন সময়ে হাতে গোনা যে সব লোক দ্বীনে হানীফে দায়িম ছিলেন উনাদের মধ্যে হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি অন্যতমা। পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণের পর হতেই তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম। উনার খুব ছুরতী মুবারক সকলকে আশ্চার্যান্বিত করে। উনার হিকমত পূর্ণ ক্বওল শরীফ সকলকে ভাবিয়ে তোলে। উনার স্বতন্ত্র খুছুছিয়ত মুবারক পুরো মক্কা শরীফ জুড়ে উনাকে সুপরিচিতা ও সম্মানিতা হিসেবে অধিষ্ঠিত করে। উনার উসওয়াতুন হাসানাহ চারিত্রিক মাধুর্যতা মুবারকের উৎকৃষ্টতা উনাকে ত্বহিরা লক্বব মুবারকে মশহূর করেছে।
বিবাহ
উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি যেহেতু বিশেষ বৈশিষ্টে বৈশিষ্ট মন্ডিত হয়েই বেড়ে উঠেছেন, সেহেতু অনেকেই উনার খিদমতে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে। উনার অভিভাবক সব প্রস্তাবই নাকচ করে দেয়। পরিশেষে আবু হালা হিন্দা ইবনে সুয়ারা আততামিমীর সাথে উনার প্রথম শাদী অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কয়েক বছরের মাথায় আবু হালা মৃত্যুবরণ করেন। এ সংসারে এক ছেলে এবং এক মেয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। অল্প বয়সে কন্যা হালা ইন্তেকাল করেন। আর ছেলে হযরত হিন্দা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সুদীর্ঘ হায়াত মুবারক লাভ করেন। প্রাথমিক যুগে ইসলাম গ্রহণকারীগণ উনাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। জঙ্গে জামালে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দ্বিতীয় বিবাহ অনুষ্ঠিত হয় আতিক ইবনে আবিদের সাথে। তিনিও কয়েক বছরের মাথায় দুনিয়া হতে চির বিদায় নেন। এ সংসারে একজন কন্যা জন্ম গ্রহণ করেন।
উম্মুল মু’মিনীন হওয়ার ইঙ্গিত পরপর দু’বার বিধবা হওয়ায় উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বেশ কষ্ট অনুভব করেন। যাবতীয় কার্যকলাপে বেশ অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়। এরই মাঝে সংঘটিত হয় এক দ্বৈব ঘটনা।
পবিত্র মক্কা শরীফে মহিলাদের বিশেষ অনুষ্ঠান চলছিল। সকলেই বেশ আনন্দিত সময় কাটাচ্ছিল। কিন্তু উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন গম্ভীর। এমতাবস্থায় এক আগন্তুক জাহির হলেন। তিনি ঘোষণা দিলেন, “হে কুরাঈশ মহিলাগণ! অতি শীঘ্রই পবিত্র মক্কা শরীফে আখেরী নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন। উনার নাম মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত আহমদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আপনাদের মধ্যে যার পক্ষে সম্ভব আপনারা উনার খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম প্রদানের কোশেশ করবেন।” এই ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর হতে উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আখেরী নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকেন। তিনি আখেরী নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক করার দৃঢ় ইচ্ছা অন্তরে লালন করতে থাকেন।
উম্মুল মু’মিনীন হওয়ার ইঙ্গিত পরপর দু’বার বিধবা হওয়ায় উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বেশ কষ্ট অনুভব করেন। যাবতীয় কার্যকলাপে বেশ অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়। এরই মাঝে সংঘটিত হয় এক দ্বৈব ঘটনা।
পবিত্র মক্কা শরীফে মহিলাদের বিশেষ অনুষ্ঠান চলছিল। সকলেই বেশ আনন্দিত সময় কাটাচ্ছিল। কিন্তু উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন গম্ভীর। এমতাবস্থায় এক আগন্তুক জাহির হলেন। তিনি ঘোষণা দিলেন, “হে কুরাঈশ মহিলাগণ! অতি শীঘ্রই পবিত্র মক্কা শরীফে আখেরী নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন। উনার নাম মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত আহমদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আপনাদের মধ্যে যার পক্ষে সম্ভব আপনারা উনার খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম প্রদানের কোশেশ করবেন।” এই ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর হতে উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আখেরী নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকেন। তিনি আখেরী নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক করার দৃঢ় ইচ্ছা অন্তরে লালন করতে থাকেন।
ব্যবসা-বাণিজ্য
উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পিতা খুওয়াইলিদ ছিলেন পুরো আরব জাহানের বড় ব্যবসায়ীদের একজন। পিতার ইন্তেকালের পর ওয়ারিশ সত্বে তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হন। আবার ক্রমান্বয়ে দু’স্বামীর নিকট হতেও তিনি অনেক সম্পত্তি লাভ করেন। এই অঢেল সম্পত্তি নিয়ে তিনি ব্যবসা পরিচালনা করেন। সুদূর বসরা-সিরিয়া পর্যন্ত উনার বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই বৃহত্তম বাণিজ্যিক কাফেলাকে সততা ও আমানতদারীর সাথে শৃঙ্খলা, যোগ্যতা, সূক্ষ কৌশলের মাধ্যমে পরিচালনার জন্য সুযোগ্য ও বিশেষ বৈশিষ্টপূর্ণ একজন লোক দরকার। কিন্তু অনেক খোজাখুজির পরেও এমন সুযোগ্য লোক নির্ধারণ সম্ভব হয়নি। পরিশেষে দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো ‘আল আমীন’ লক্বব মুবারকে মশহূর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি।
উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অনুরোধের প্রেক্ষিতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বৃহত্তম বানিজ্যিক কাফেলার তত্ত্বাবধান মুবারক গ্রহণ করেন। এ কাফেলাকে রহমত বরকতে পরিপূর্ণ করেন। অল্প সময়ের ব্যবধানে সে সম্পত্তি কয়েক গুণ বৃদ্ধি হয়ে যায়। কিতাবে উল্লেখ করা হয়, নূরে মুজাস্সাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তত্ত্বাবধান মুবারকের দরূণ উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্পত্তি এত পরিমাণে বৃদ্ধি পায় যে সমগ্র মক্কা শরীফ উনার সমস্ত ব্যবসায়ীদের যত সম্পদ, উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার এককভাবে তার চেয়ে অনেক বেশী সম্পদ ছিল। সুবহানাল্লাহ!
হাবীবী খিদমত মুবারকে তাশরীফ
উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উম্মুল মু’মিনীন হিসেবে পূর্ব হতেই নির্ধারিত। তথাপি কতিপয় আনুষ্ঠানিকতা দরকার। আনুষ্ঠানিক নবুওয়ত প্রকাশের ১৫ বছর পূর্বে নূরে মুজাস্সাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন ২৫ বছর,তখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার আগ্রহের দরূণ উনাকে শাদী মুবারক করেন। উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সমস্ত সম্পদ নূরে মুজাস্সাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে হাদিয়া করেন। বলা হয়,উনার উরুস মুবারকের দিনে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য স¦র্ণের পাত বিছিয়ে দেওয়া হয়। স্বর্ণের সেই পাত সমূহ মাড়িয়ে তিনি হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক রাখেন। সুবহানাল্লাহ!
মোহর মুবারক
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র শাদী মুবারক উনার সময় উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে কি পরিমাণ মোহর প্রদান করেছেন, তা নিয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। কারো মতে, মোহর মুবারক হিসেবে ১২ উকিয়া এবং এক নশ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কারো মতে, মোহর মুবারক ছিল পাঁচশত দিরহাম। আর কতেকের মতে, মোহর মুবারক ছিলো বিশটি উট। তবে মোহর মুবারকের বিষয়টি একখানা হাদীছ শরীফ দ্বারা সহজেই স্পষ্ট করা যায়। পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে,
عن حضرت ابى سلمة رضى الله تعالى عنه انه قال سالت عائشة عليها السلام كم كان صداق رسول الله صلى الله عليه وسلم قالت كان صدافه لازواجه عليهن السلام نتى عشرة اوقتة ونشا قالت اند رى ما الش قال قلت لا قالت نصف اوقية فتلك خمس ماة درهم.
অর্থ: হযরত আবু সালামাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কর্তৃক প্রদত্ত মুবারক মহর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মোহর মুবারক ছিলো বার উকিয়া ও এক নাশ। তিনি বললেন, আপনি কি এক নাশের পরিমাণ সম্পর্কে জানেন। আমি বললাম, ‘না’। তিনি বললেন, এক নাশ এর পরিমাণ হলো অর্ধ উকিয়া। যা ছিলো মোট পাঁচশত দিরহাম। (মুসলিম শরীফ) অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সহ সমস্ত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মুবারক মোহর ছিলো পাঁচশত দিরহাম। তবে কারো কারো মতে, উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মু হাবীবাহ আলাইহাস সালাম উনার মুবারক মোহর আরো বেশি ছিলো। যা বাদশাহ নাজ্জাসী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে পরিশোধ করেছিলেন। পাঁচশত দিরহাম হলো একশত সোয়া একত্রিশ তোলা রৌপ্যের সমান। যা মোহরে যাহরা আলাইহাস সালাম নামে বিখ্যাত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিবাহের ক্ষেত্রে আমভাবে এরূপ মোহর নির্ধারণ করতেন। বর্তমান সময়ে মুহইস সুন্নাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি এই মুবারক সুন্নত জারী করেছেন। উনার মুবারক পৃষ্ঠপোষকতায় যত বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে, সবই মোহরে যাহরা আলাইহাস সালাম উনার ভিত্তিতে হয়ে থাকে।
অলীমা মুবারক
শাদী মুবারককে কেন্দ্র করে যে খাবারের আয়োজন করা হয়, তাকে আরবীতে অলীমা বলা হয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র শাদী মুবারক অনুষ্ঠানে অলীমা উপলক্ষে ব্যাপক খাবারের আয়োজন করা হয়। সে দিন মক্কা শরীফবাসী সকলকে তৃপ্তিসহকারে মেহমানদারী করানো হয়। বিশ্বখ্যাত ইতিহাস গ্রন্থসমূহে এ বিষয়ে যথেষ্ট আলোচনা করা হয়েছে। যা বলাই বাহুল্য। উল্লেখ্য যে, পবিত্র ২২শে জুমাদাল উলা শরীফ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার শাদী মুবারক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ তারিখে উনারা অলীমা মুবারকের আয়োজন করেছেন। এ তারিখেই উনাদের উরুস মুবারক সম্পন্ন হয়েছে। সুবহানাল্লাহ। সীরাতে হালাবিয়্যাহ তে উল্লেখ করা হয়,
وفرح أبو طالب فرحا شديدا
অর্থ: খাজা আবু ত্বলিব আযীমুশ শান শাদী মুবারক উনার দিন অত্যধিক খুশি হন, সীমাহীন খুশি প্রকাশ করেন। সে দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনারা যে খুশি মুবারক প্রকাশ করেছেন, তা আর কখনোই করেননি। কাজেই, এ দিন একদিকে সর্বাধিক খুশি প্রকাশের দিন। অপরদিকে এদিন আখাছছুল খাছ নিয়ামত লাভের দিন। তাই, এদিনকে হাকীকী ভাবে তা’যীম করা সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম
প্রসিদ্ধ, গ্রহণযোগ্য এবং তারযীহপ্রাপ্ত মতে,নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাতজন আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। উনাদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।
ইবনু রসূল আল আউয়াল হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম
সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের প্রায় সাড়ে ১২ বছর পূর্বে ২রা রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা সকালে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় সাড়ে ২৭ বছর। আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় সাড়ে ৪২ বছর। অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার ২ বছর ৩ মাস ১০ দিন পর ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আহ্বান মুবারক-এ সাড়া দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের প্রায় ১০ বছর ৮ মাস পূর্বে ২রা রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ ভোর রাত্রে মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে পূর্ণ ২২ মাস অবস্থান মুবারক করেছেন। উনার নাম মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কুনিয়াত মুবারক আবুল কাসিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল।
সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের প্রায় সাড়ে ১২ বছর পূর্বে ২রা রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা সকালে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় সাড়ে ২৭ বছর। আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় সাড়ে ৪২ বছর। অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার ২ বছর ৩ মাস ১০ দিন পর ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আহ্বান মুবারক-এ সাড়া দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের প্রায় ১০ বছর ৮ মাস পূর্বে ২রা রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ ভোর রাত্রে মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে পূর্ণ ২২ মাস অবস্থান মুবারক করেছেন। উনার নাম মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কুনিয়াত মুবারক আবুল কাসিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল।
বিনতু রসূল আল উলা সাইয়্যিদাতুনাহযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় সোয়া ২৯ বছর এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় সোয়া ৪৪ বছর, তখন তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পরিপূর্ণ নকশা বা মিছাল মুবারক ছিলেন। উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বোন হযরত হালাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার ছেলে সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল আস ইবনে রবী আলাইহিস সালাম উনার সাথে দশ বছর বয়স মুবারকে আল উলা বিনতুম মিন বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাদী মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। ৮ম হিজরীর ৮ই মুহররমুল হারাম শরীফ পবিত্র মদীনা শরীফে সাইয়্যিদাতুন নিসা আল উলা আলাইহাস সারাম তিনি দীর্ঘদিন মারিদ্বী শান মুবারক জাহির করে পবিত্র বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় সোয়া ২৯ বছর এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় সোয়া ৪৪ বছর, তখন তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পরিপূর্ণ নকশা বা মিছাল মুবারক ছিলেন। উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বোন হযরত হালাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার ছেলে সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল আস ইবনে রবী আলাইহিস সালাম উনার সাথে দশ বছর বয়স মুবারকে আল উলা বিনতুম মিন বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাদী মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। ৮ম হিজরীর ৮ই মুহররমুল হারাম শরীফ পবিত্র মদীনা শরীফে সাইয়্যিদাতুন নিসা আল উলা আলাইহাস সারাম তিনি দীর্ঘদিন মারিদ্বী শান মুবারক জাহির করে পবিত্র বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করেন।
ইবনু রসূল আছ ছানী হযরত তাইয়্যিব আলাইহিস সালাম
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৩১ বছর এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৪৬ বছর, তখন তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি অল্প বয়স মুবারকে ৮ই রবীউল আউয়াল শরীফ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৩১ বছর এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৪৬ বছর, তখন তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি অল্প বয়স মুবারকে ৮ই রবীউল আউয়াল শরীফ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
ইবনু রসূল আছ ছালিছ হযরত ত্বহির আলাইহিস সালাম
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৩২ বছর এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৪৭ বছর, তখন তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি অল্প বয়স মুবারকে ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৩২ বছর এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৪৭ বছর, তখন তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি অল্প বয়স মুবারকে ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
বিনতু রসূল আছ ছানিয়া সাইয়্যিদাতুনাহযরত রুকাইয়া আলাইহাস সালাম
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৩৩ বছর এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৪৮ বছর, তখন তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক তখন ছয় বছর, তখন আবু লাহাবের বারবার আরজীর প্রেক্ষিতে তার বড় ছেলে উতবার সাথে উনার আক্বদ সম্পন্ন হয়। কিন্তু উনার সাথে তার উরুস হয়নি। আনুষ্ঠানিক নবুওয়ত প্রকাশের চতুর্থ বছর শুরুতে সূরা লাহাব নাযিল হলে আবু লাহাব গোস্বায় এই বিবাহে বিচ্ছেদ ঘটায়। পরবর্তীতে স্বয়ং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক নির্দেশে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত উসমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট উনাকে শাদী মুবারক দেন। দ্বিতীয় হিজরীর রমাদ্বান শরীফ। যখন বদর জিহাদের জোড় প্রস্তুতি চলছিল, তখন সাইয়্যিদাতুন নিসা আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম তিনি মারিদ্বী শান মুবারক গ্রহণ করেন। বদর জিহাদের পরের দিন ১৮ই রমাদ্বান শরীফ যখন বিজয়ের সংবাদ পবিত্র মদীনা শরীফ উনার দ্বারপান্তে, তখন প্রায় ২২ বছর বয়স মুবারকে হযরত সাইয়্যিদাতুন নিসা আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৩৩ বছর এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৪৮ বছর, তখন তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক তখন ছয় বছর, তখন আবু লাহাবের বারবার আরজীর প্রেক্ষিতে তার বড় ছেলে উতবার সাথে উনার আক্বদ সম্পন্ন হয়। কিন্তু উনার সাথে তার উরুস হয়নি। আনুষ্ঠানিক নবুওয়ত প্রকাশের চতুর্থ বছর শুরুতে সূরা লাহাব নাযিল হলে আবু লাহাব গোস্বায় এই বিবাহে বিচ্ছেদ ঘটায়। পরবর্তীতে স্বয়ং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক নির্দেশে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত উসমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট উনাকে শাদী মুবারক দেন। দ্বিতীয় হিজরীর রমাদ্বান শরীফ। যখন বদর জিহাদের জোড় প্রস্তুতি চলছিল, তখন সাইয়্যিদাতুন নিসা আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম তিনি মারিদ্বী শান মুবারক গ্রহণ করেন। বদর জিহাদের পরের দিন ১৮ই রমাদ্বান শরীফ যখন বিজয়ের সংবাদ পবিত্র মদীনা শরীফ উনার দ্বারপান্তে, তখন প্রায় ২২ বছর বয়স মুবারকে হযরত সাইয়্যিদাতুন নিসা আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
বিনতু রসূল আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলসুম আলাইহাস সালাম
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৩৫ বছর এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৫০ বছর, তখন সাইয়্যিদাতুনা তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আবু লাহাবের বারবার অনুরোধের প্রেক্ষিতে তার ছেলে উতাইবার সাথে উনার আক্বদ সম্পন্ন হয়। কিন্তু সাইয়্যিদাতুন নিসা আছ ছানিয়া আলাইহাস সালাম উনার ন্যায় উনার উরুস হয়নি। তার পূর্বেই পবিত্র সূরা লাহাব শরীফ নাযিল হলে আবু লাহাবের আক্বদ ভেঙ্গে দেয়। সাইয়্যিদাতুন নিসা আছ ছানিয়া হযরত রকাইয়া আলাইহাস সালাম তিনি ২য় হিজরীর ১৮ই রমাদ্বান শরীফ পবিত্র বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট সাইয়্যিদাতুন নিসা আছ ছালিছা উনাকে তৃতীয় হিজরীতে শাদী মুবারক প্রদান করেন। নবম হিজরীতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাবুক জিহাদ হতে ফিরে আসার পর পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার ৬ তারিখ সাইয়্যিদাতুন নিসা আছ ছালিছা আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৩৭ বছর এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন প্রায় ৫২ বছর, তখন তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ নকশা মুবারক। দ্বিতীয় হিজরীর শেষাংশে উনাকে হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার নিকট শাদী মুবারক দেওয়া হয়। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে প্রায় ছয় মাস অবস্থান মুবারক করেন। ১১ হিজরীর ৩রা রমাদ্বান শরীফ তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
বিস্তারিত জানতে নাম মুবারকের উপর ক্লিক করুন
প্রথম মুসলমান
প্রথম মুসলমান
আনুষ্ঠানিকভাবে ওহী নাযিল মুবারক নাযিল হওয়া শুরু হলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বপ্রথম উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে অবহিত করেন। তিনিই সর্বপ্রথম পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করেন। হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনয়নের ক্ষেত্রে কায়িনাতের সমস্ত মহিলা হতে অগ্রগামী। (কানজুল উমাল)
আসমানী সালাম
আনুষ্ঠানিক নবুওয়াত মুবারক প্রকাশের পূর্ব হতেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রবিত্র হেরা গুহায় অবস্থান মুবারক গ্রহণ করেন। সেই সময় উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম প্রায়ই মুবারক খিদমতে গমন করতেন। তারই ধারাবহিহিকতায় একদিন তিনি যাচ্ছিলেন, তিনি পৌছার পূর্বেই হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আপনার খিদমত মুবারকে আসতেছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে উনাকে সালাম জানাবেন। অতপর, উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি যখন পৌছলেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিষয়টি উনাকে জানালেন। অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জবান মুবারকে সালাম মুবারক জানিয়েছেন।সুবহানাল্লাহ।
খিদমতে একক ব্যক্তিত্ব
পবিত্র ইসলাম উনার সূচনালগ্নে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং ইসলাম উনার খিদমতে উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল ত্যাগ উনাকে কায়িনাতবাসীর জন্য উসওয়াতুন হাসানাহ বানিয়েছে। যা হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে।
উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার আলোচনা মুবারক করতেন, তখন উনার অনেক ছানা-ছীফত মুবারক করতেন। একদা এমনি পরিস্থিতিতে আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি তো পবিত্র বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করেছেন। এখন মহান আল্লাহ পাক আপনাকে অনেক উম্মুল মু’মিনীন হাদিয়া করেছেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দেখুন! সমস্ত মানুষ যখন আমাকে অস্বীকার করেছে, তখন কেবল তিনিই আমার প্রতি ঈমান এনেছিলেন। সকলই যখন আমাকে সত্য রসূল হিসেবে গ্রহণ করেনি, তখন কেবল তিনিই আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। সকলই যখন আমাকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করেছে, তখন কেবল তিনিই আমার যাবতীয় খিদমত মুবারকের আঞ্জাম প্রদান কেেছন। কেবল তিনিই আমাকে স্বান্তনা প্রদান করেছেন। (তাবারানী)
প্রত্যক্ষ দর্শী উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি অনেক অহী মুবারকের প্রত্যক্ষদর্শী। উনার খিদমত মুবারকের প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে অনেক আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছে। আনুষ্ঠানিক অহী মুবারক নাযিল হলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে বিষয়টি জানিয়ে উনাকে কম্বল মুবারকে আবৃত করার আদেশ মুবারক প্রদান করেন। মুবারক আদেশ পালনার্থে উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে কম্বল মুবারকে আবৃত করেন।
শিয়াবে আবু তালিব
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে শাদী মুবারক করেন, তখন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক ছিল ৪০ বছর। আনুষ্ঠানিক নবুওওয়াত প্রকাশকালে উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক ৫৫ বছর। আনুষ্ঠানিক নবুওওয়াত প্রকাশের প্রথম দশ বছর সর্ব প্রকার খিদমতের তিনি আঞ্জাম দিয়েছেন। কাফির মুশরিকদের জুলুম-নির্যাতন যখন চরম পর্যায়ে পৌছলো, তখনও তিনি উনার খিদমতে ছিলেন অবিচল। কাফিররা যখন মুসলমানগণ উনাদেরকে শিয়াবে আবু তালিবে তিন বছর অবরুদ্ধ করে রাখলো, তখনও তিনি ছিলেন দৃঢ়চিত্ত। তিনি উনার ধন-সম্পদ, জান-মাল, প্রভাব-প্রতিপিত্তি সমস্ত কিছু বিসর্জন দিয়ে মুবারক খিদমতে একনিষ্টভাবে আঞ্জাম প্রদান করেছেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নবুওওয়াত উনার ঘোষণার দশম বছরে হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম পবিত্র ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ৬৫ বছর বয়স মুবারকে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার বছরকে আমুল হুযন নামে আখ্যায়িত করা হয়।উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সুদীর্ঘ ২৫ বছর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দেন। উনার সমস্ত সম্পদই মুবারক খিদমতে ব্যয় করেন। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার-প্রসারে উনার সুমহান অবদান বেমেছাল নযীর স্থাপন করেছেন। পারিবারিক, সামাজিক, শারীরিক, মানষিক এবং অর্থনৈতিক সর্ব দিক থেকেই তিনি এককভাবে খিদমত মুবারক করেছেন।
মহান আল্লাহ পাক, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মুবারক শান উপলব্ধি করে, হুসনে যন পোষণ করত: উনাদের হক্ব হাক্বীক্বীভাবে আদায় করার তাওফীক দান করুন। আমীন!
0 comments:
Post a Comment