রাসুল (সা.) এ সাথে আয়েশা (রাঃ) এর বিবাহ নিয়ে নাস্তিকদের অভিযোগের জবাব
ধরেই নিই উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) এর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সঙ্গে বিবাহের সময় তাঁর বয়স ৬ বছর ছিল। তাতে হয়েছে কি? এতে প্রগতিশীলদের (?) এতো গাত্রজ্বালা করে কেন?
বিবাহের সময় যদি আয়েশা (রাঃ) এর বয়স যদি ৬ বছরই হয়, তাহলে বলতে হবে যখন নবীজী মারা যান তখন আয়েশা (রাঃ) এর বয়স ছিল ১৮ বছর। অন্যান্য স্ত্রীদের থেকে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে আয়েশার প্রেম ছিল অনেক গভীর। আর আয়েশা (রাঃ) ও নবীকে নিজের প্রাণের থেকে বেশী ভালবাসতেন । তাহলে দেখা যায় ৬ বছর বয়সে আয়েশা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বিবাহ করে কোনদিন আফশোস করেননি যে তিনি একজন ৫০ বছরের বৃদ্ধকে বিবাহ করে ভূল করেছেন। বরং তিনি রাসুলুল্লাহকে বিবাহ করে নিজেকে ধন্য মনে করেছেন।
একদিনকার ঘটনা হল, হযরত আয়েশা (রাঃ) মহানবী (সাঃ)কে স্নান করিয়ে দিচ্ছিলেন। স্নান করানোর সময় চৌবাচ্চার পায়ার নিচে আয়েশা (রাঃ) এর পায়ে চাপা পড়ে যায় এবং তাঁর পায়ের আঙ্গুল ফেটে রক্ত বেরিয়ে পড়ে। নবীজী এই রক্ত দেখে উঠে পড়েন। উঠে দেখেন আম্মা আয়েশার চোখ লাল হয়ে গেছে নবীজী আয়েশাকে দেখে বলেন যে এটা কিসের রক্ত। তখন আম্মা আয়েশা বলেন, আপনাকে যখন স্নান করাচ্ছিলাম তখন চৌবাচ্চার পায়া আঙ্গুলের নিচে চাপা পড়ে যায়। আপনি চৌবাচ্চায় বসার সাথে সাথে আমার আঙ্গুলের পায়ের মাথা ফেটে যায়। তখন নবীজী বললেন, তুমি আগে আমাকে বলনি কেন আমি তোমাকে চৌবাচ্চা ছেড়ে দিতাম। তখন আয়েশা যে কথাটি বলেছিলেন সেটা কোন প্রগতিশীল (?) অন্তত: তাকেঁ নিয়ে কল্পনাও করতে পারবেনা।
আয়েশা (রাঃ) বলেছিলেন, হে নবী, এটা তো একটা ছোট্ট আঙ্গুল ফাটার যন্ত্রনা। যদি আপনি আমার কলেজায় বসে কলিজা ফাটিয়ে দিতেন তবুও আমি বলতে পারতাম না হে নবী আপনি উঠেন। আমি আমার কলিজার চেয়েও আপনাকে বেশী ভালবাসি।
দেখুন মা আয়েশা (রাঃ) কতখানি হুযুর (সাঃ) কে ভাল বাসতেন। আর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও মা আয়েশা (রাঃ)কে ভালবেসে ‘হুমাইরা’ বলে ডাকতেন। এই আয়েশা (রাঃ) ছেষট্টি বছর বয়সে ১৭ই রমজান সাতান্ন হিজরীতে জান্নাতবাসিনী হন। অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর এন্তাকালের পর আম্মাজান আয়েশা (রাঃ) ৩৯ বছরৎ বেঁচে ছিলেন এবং তিনি এর পর আর কখনো বিবাহ করেন নি।
এই আয়েশা (রাঃ) নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) কে এতোটাই ভালোবাসতেন যে তিনি মুহাম্মাদ (সাঃ) এর শানে বলেছিলেন,
লাব্বামী জুলাইখাতা লাউ রায়ীনা জাবীনাহু, লা সারনা বিল ক্বাতে কুলুবাহুম লা ইলাল ইয়াদি।
-মিশরের মহিলারা হজরত ইউসুফ (আঃ) এর রুপ দেখে নিজেদের হাত কেটে নিয়েছিল, তারা যদি আমার নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর রুপ দেখত তাহলে তারা নিজেদের কলিজা কেটে ফেলত।
আমার প্রশ্ন হল, আম্মাজান আয়েশা (রাঃ) ৬ বছর বয়সে বিবাহ করে রাসুলুল্লাহর প্রতি কোন অভিযোগ করলেন না তাহলে প্রগতিশীলরা (?) অভিযোগ করে কোন মুখে? হাদীস শরীফে আছে যে আয়েশা (রাঃ) কম বয়সে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) কে বিবাহ করার জন্য গর্ব করেছেন।
শুধুমাত্র সেসময়ই নয়, সব যুগেই বালিকা মেয়েকে বিবাহ করা সামাজিকভাবে বৈধ। তাহলে এই প্রগতিশীলরা (?) শুধুমাত্র রাসুল (সা.) এর সাথে আয়শা (রা.) এর বিবাহ নিয়ে এত চিৎকার করে কেন?? [নিশ্চয় কোন ধান্দা আছে.....]
এবার দেখি এসব প্রগতিশীল (?) ব্যক্তিবর্গ যাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এতদূর এসেছে (?), তাদের সেইসব আদর্শদের স্ত্রীদের বৈবাহিত সময়ের বয়স কত।
?- ভারতবর্ষের খ্যাতনামা ব্যাক্তি মহাত্মা গান্ধী বিবাহ করেছিলেন ১০ বছরের বালিকা কস্তুবাকে।
?- সাহিত্যিক শিবনাথ শাস্ত্রী বিবাহ করেছিলেন ১০ বছরের বালিকাকে।
?- ঋষি বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথমা স্ত্রীর বয়স ছিল ৬ বছর।
?- মহর্ষী দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিবাহ হয়েছিল ৬ বছরের বালিকার সাথে।
?- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিবাহ করেছিলেন নিরক্ষ ও ১১ বছরের বালিকার সঙ্গে।
?- হিন্দুদের বিখ্যাত ধর্মীয় নেতা কেশবচন্দ্র সেন বিবাহ করেছিলেন ৯ বছরের বালিকার সঙ্গে।
প্রগতিশীলরা (?) উপরোক্ত মহাপুরুষদের বিবাহ নিয়ে তেমন কোন শোরগোল করেন না। যত শোরগোল করেন মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর বিবাহকে কেন্দ্র করে। ফাইজলামির একটা সীমা আছে।
যখন নবীজী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) আয়েশা (রাঃ)কে বিবাহ করেছেন তখন কেউ প্রতিবাদ করেন নি যে নবীজী একজন শিশুকে বিবাহ করছেন। এমনকি তৎকালীন যুগের কাফের কোরাইশরাও কোন অভিযোগ করেনি। আবু জেহেল, আবু লাহাব, উৎবা, শায়বা, মুগীরা প্রভৃতিরা মহানবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রাণের শত্রু ছিল তারাও নবীজীর এই বিবাহকে নিয়ে কোন প্রতিবাদ বা কটুক্তি করেনি যা আজকের যুগে আবু লাহাব, আবু জেহেলের উত্তরসূরীরা করছে। মনেহয় আজকের যুগের এইসকল নামধারী প্রগতিশীলরা আবু জেহেল, আবু লাহাব, উৎবা, শায়বা, মুগীরা প্রভৃতিদের থেকেও নিকৃষ্ট।
বিয়ের সময় হযরত মা আয়েশা (রা)-এর বয়স ৬ বছর ছিল- তথ্যটি যে ভুল সে মর্মে জানতে নিচের লিংক লক্ষ্যনীয়-
0 comments:
Post a Comment