• ইউনিভার্সাল কমন এনসেস্টর থিওরি



    যে কোন বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে চলে। পর্যবেক্ষন, প্রশ্নকরণ, হাইপোথিসিস, পরীক্ষানিরীক্ষা, অবশেষে উপসংহার (যে হাইপোথিসিসটি কি ভুল না কি ঠিক?); ঠিক হলে তা ‘রুল’ এর মর্যাদা পাবে।
    এখন, অবজারভেশন হল পৃথিবীতে অসংখ্য জীবিত স্বত্ত্বা বিরাজমান। প্রশ্ন হল এগুলো কোথা হতে কিভাবে এল? হাইপোথিসিস পর্যায়ে এসেই অবজারভারদের দুটো ভাগ। এক ভাগের মতে প্রথম কোষ বা 'ইউনিভার্সাল কমন এনসেস্টর' এসেছে অজৈবজনন (Abiogenesis) প্রক্রিয়ায় এবং অন্যান্য প্রানী এসেছে ডারউইনবাদী প্রক্রিয়ায়। আরেকভাগের মতে প্রত্যেকটি প্রানীই পৃথক ভাবে সৃজিত হয়েছে একজন সর্বজ্ঞ স্রষ্টা দ্বারা। 
    এবার হাইপোথিসিস গুলো পরীক্ষা করে প্রমাণ করার পালা। এই পর্যায়ে এসেই বিপত্তি। বিবর্তনবাদীরা দেখাতে সক্ষম নন কিভাবে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে এক প্রজাতি থেকে আরেক প্রজাতি এসেছে। তারা সর্বচ্চো যেটা দেখাতে পারেন একটি প্রজাতি কিভাবে আর্টিফিসিয়াল সিলেকশনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটাতে পারে। কিন্তু এতে একটি প্রজাতি আরেকটিতে পরিবর্তন হয় না। মাইক্রোইভোলিউশনের যে উদাহরণ দেন সেখানেও কোন প্রজাতি পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার বা করে ফেলার উদাহরণ নেই। এ পর্যায়ে এসে তারা তাই বিভিন্ন কল্পনার আশ্রয় নেয়া শুরু করেন। একটি হাইপোথিসিসকে ডিফেন্ড করেন আরেকটি হাইপোথিসিস দিয়ে। এভাবে কল্পনা সমাহার নিয়ে খুলে ফেলেন আলাদা ডিসিপ্লিন।
    অন্য দিকে যারা বলছেন স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন তাদের পক্ষেও এটা এক্সপেরিমেন্টালী দেখানো সম্ভব নয়। তবে সম্ভব হল 'ইনডাইরেক্ট ইনফারেন্স' টানা। ঠিক যেমনি একটি ডিজাইন দেখলে একজন ডিজাইনারের হাত আমরা সাথে সাথেই বুঝে নেই, তেমনি স্রষ্টাকে চিনতে সৃষ্টি জগতের ডিজাইনগুলো  দেখে নেয়া এবং দেখিয়ে দেয়াই এদের জন্য যথেষ্ঠ।
    এখন এ পর্যায়ে বিবর্তনবাদীদের তাদের তত্ত্ব প্রমাণ করতে হলে অবশ্যই দেখাতে হবে যে কোন ডিজাইন দূর্ঘটনা ক্রমে তৈরী হয় এবং ডারউইনবাদী প্রক্রিয়ায় একটি ডিজাইন থেকে আরেকটি ডিজাইন একা একা দূর্ঘটনার মধ্য দিয়ে আনগাইডেড প্রক্রিয়ায় (Randomly) আবির্ভূত হয়।  যেহেতু জীবের ফিজিওলজি থেকে শুরু করে মলিকিউলার বায়োলজি পর্যন্ত অনেক কিছুই এখন জানার সুযোগ হয়েছে, সেহেতু কিভাবে একা একাই পরিবর্তন হতে পারে সেগুলো প্রয়োজনীয় ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, গণিত দিয়ে ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব তাদের।
    অর্থাৎ এ পর্যায়ে এসে দেখা যায়, যে হাইপোথিসিস গুলো দাড় করানো হল, ওগুলো নিয়ে ডারউইনবাদী ও ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনবাদীদের আলোচনা ও তর্কবিতর্ক চলে তত্ত্বগত পর্যায়ে। আর যে প্রশ্নগুলো দাড় করানো হয়েছে সেগুলো হল ‘দর্শনগত’ পর্যায়ের।
    যেখানে ১৫০ অ্যামাইনো এসিডের একটি মাঝারি সাইজের প্রোটিন আসার বিষয়টি ডারউইনবাদীদের পক্ষে ব্যাখ্যা করা অসম্ভব, সেখানে হাজার হাজার প্রোটিন, লিপিড, কার্বহাইড্রেট, নিউক্লিউটাইড এবং সর্বপোরি নার্ভাস সিস্টেমে ইনস্টলকৃত প্রোগ্রামকে ব্যাখ্যা করার কথা বললে যে তাদের 'ডেলিরিয়াম' শুরু হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক তা তাদের লেখা ও মন্তব্যেই বুঝা যায়।
    যাই হোক, এ আলোচনায় দ্বিতীয় দল যদিও ‘একজন বুদ্ধিমান স্বত্ত্বার’ প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে পারে, একজন ‘অদৃশ্য’ সর্বজ্ঞ স্বত্ত্বায় বিশ্বাস স্থাপন করতে সাহায্য করতে  পারে, কিন্তু উক্ত স্বত্ত্বার পরিচয় পুরোপুরি তুলে ধরতে পারে না।  তাই, এই পরিচয়টা তুলে ধরা জন্যই এগিয়ে এসেছে মহাগ্রন্থ ‘আল কোরআন’; এজন্যই কি আল্লাহ তাআলা বলেন:
    “আলিফ লাম মীম ৷ এটি আল্লাহর কিতাব, এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই ৷ এটি হিদায়াত সেই ‘মুত্তাকী’দের জন্য, যারা ‘অদৃশ্যে বিশ্বাস’ করে…” (সূরা বাকারা: ১-৩)

    প্রশ্ন হল উপসংহার কি? জ্বি, এই চূড়ান্ত প্রশ্নগুলোর উপসংহার টানা হবে আখিরাতে। দুনিয়ায় যদি এর প্রমাণ দিয়ে দেয়া হত তাহলেতো ‘অদৃশ্যে বিশ্বাসের’ প্রয়োজনীয়তাই থাকত না এবং বলা হত না:“তিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যেন তিনি পরীক্ষা করে নিতে পারেন কাজের দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে কে উত্তম।” (সূরা মূলক: ২)
     ইন্টিলিজেন্ট ডিজাইন ডারউইনিয়ান বিবর্তনবাদের বিপরীতে তুলনামূলকভাবে অধিকতর গ্রহণশীল। কিন্তু এটা পুরোপুরি গ্রহণ করাটা প্রশ্নসাপেক্ষ!

    একমত। এ কারণে আমি এটিকে সৃষ্টিতে 'ইন্টেলিজেন্স' খুঁজে পাওয়ার একটি মেথডিক্যাল ওয়ে হিসেবে নিতেই আগ্রহী। আর এই ইন্টেলিজেন্স যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সেটাতো স্বয়ং তাঁর গ্রন্থ কোরআন থেকেই জানা যায়।

     ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন থিওরীর সাথে 'শ্যানন ইনফরমেশন', 'ইরিডিউসিবল কমপ্লেক্সিটি' 'স্পেসিফাইড কমপ্লেক্সিটি', 'প্যাটার্ন রিকগনিশন', এই বিষয়গুলো জড়িত, যা একটু বিস্তারিত আলোচনার দাবি রাখে। ID এর অন্যতম প্রণেতা বিল ডেম্বস্কি যে তত্ত্বটি দাড় করিয়েছেন তা হল 'ইনটেলিজেন্স' ডিটেকশনেরর একটি মেথডিক্যাল ওয়ে। যেহেতু বিজ্ঞানের মেথডের সাথে এক্সপেরিমেন্টেশনের ব্যাপার আছে। তেমনি ID-র একটি এক্সপেরিমেন্টেশনের ভিত্তি দাড় করানোর সুযোগ আছে।

    ছোট একটি উদাহরণ দেই: মানুষ বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী প্রাণী। তার বুদ্ধি কিভাবে বুঝা যায়? সে একটি স্পেসিফিক প্যাটার্নকে রিকগনাইজ করতে পারে এবং ইনফার করতে পারে যে আরেকটি বুদ্ধিমান সত্ত্বাই কেবল এই স্পেসিফিক প্যাটার্ন তৈরী করেছে। যেমন কেউ যদি ফুলের বাগানে ফুল গাছগুলো এমন ভাবে বপন করে যে তা 'বাংলাদেশ' লেখার মত দেখায়। তাহলে আমরা সেটা দেখা মাত্রই বুঝবো যে সেটি একটি ইন্টেলিজেন্ট স্বত্ত্বা তৈরী করেছে। এখন এরকম একটি বাগান তৈরী করতে যদি ৪ রঙের ফুল ব্যবহার করা হয় এবং যদি ১০০০টি গাছ লাগে তাহলে শ্যানন ইনফরশেন হল, গাছগুলো ৪^১০০০ ভাবে লাগানো সম্ভব। কিন্তু স্পেসিফাইড কম্প্লেক্সিটি হল, অল্প কিছু প্যাটার্ন ই 'বাংলাদেশ' লেখাকে রিসেম্বেল করবে। সেটা সম্ভব শুধুমাত্র এমন একটি বুদ্ধিমান সত্ত্বা দাড়া যে পূর্বেই উক্ত প্যাটার্নে কিছু 'ইনফরমেশন' এট্রিবিউট করেছে বা যে 'ইনফরমেশন' টা জানে। 'বাংলাদেশ' শব্দ দেখলেই আমাদের দেশকে বুঝতে পারাটা আমরা এই নির্দিষ্ট সাংকেতিক চিহ্ন এর সাথে এসোসিয়েট করে নিয়েছি তথা এট্রিবিউট করেছি। 
    উদাহরণে দেখা যাচ্ছে কোন স্থানে যদি আমরা এমন একটি প্যাটার্ন দেখতে পাই যেটা   স্পেসিফাইড ইনফরমেশন বহন করে তখন আমরা বুঝে নেই যে উক্ত প্যাটার্নের পেছনে এমন একজন আছে যে উক্ত তথ্যটি জানে এবং যে বুদ্ধিমান। ইন্টেলিজেন্ট ডিটেকশনের এই পদ্ধতিটি অবজারভেবল। আমাদের আশে পাশে অহরহ এটি ঘটছে। ঠিক তেমনি ডিএনএ, প্রোটিন ইত্যাদি গঠনে আমরা একটি স্পেসিফিক প্যাটার্ন ডিটেক্ট করতে পারি যা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ  এবং অনেক সুপিরিওর লেভেলের স্পেসিফাইড তথ্য বহন করে। (এর মধ্যে বেসিক সায়েন্টিফিক রুল যেমন কেমিকেল বণ্ড, কেমিক্যাল ইন্টারএকশনের ল, ফিজিক্যাল রুল, গণিত, টাইম ফ্যাক্টরের সাথে সমন্বয়করণ ইত্যাদি অন্তর্ভূক্ত); সুতরাং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দেখানো যায় যে এর পেছনে একজন সুপিরিওর ইন্টেলিজেন্স এবং সর্বময় জ্ঞানের অধিকারী স্বত্ত্বা বিদ্যমান।
     
    কিন্তু বিবর্তনবাদীদের জন্য এর বিপরীতে কোন অবজারভেবল উদাহরণ নেই যে কিভাবে একটি ডিজাইন আরেকটি ডিজাইনে পরিবর্তন হয়েছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে, কিভাবে নতুন স্পেসিফিক ইনফরমেশন ইন্টলিজেন্ট ইন্টারভেনশন ছাড়া সৃষ্টি হয়। এ কারণে তাদের যুক্তিগুলো কাল্পনিক ও হাইপোথিটিক্যাল যেগুলোর কোন প্র্যাকটিক্যাল এক্সাম্পল নেই।
    সেটা স্পেসিফিক। তবে এই শর্তটিকে যদি আরেকটি সিস্টেমের সাথে জুড়ে দেয়া যায় তাহলে তা হবে কমপ্লেক্স। উদাহরণ, ধরি ছয়টি ছক্কাকে একটি ছক্কা দিয়ে তৈরী ছক্কা গেট বা দরজার সাথে সম্পৃক্ত করে দেয়া হল। শর্ত হল ছয়টি ছক্কাতে ছয় পড়লেই দরজাটি খুলবে। এ অবস্থায় ছয়টি ছয় পড়ার বিষয়টি স্পেসিফিক এর সাথে কমপ্লেক্সও। কারণ এখানে ছয়টি ছক্কা পড়ার শর্তের সাথে জড়িত এমন একটি দরজার সম্ভাব্যতার বিষয়টিও চলে আসছে, যেটা সমভাবেই অসম্ভব। অর্থাৎ দুটো স্পেসিফিক সিস্টেমকে জুড়ে একটি কমপ্লেক্স সিস্টেম তৈরী করা হয়েছে। লক্ষ্যনীয় এখানে এই যে আইডিয়াটা অর্থাৎ ছয়টি ছক্কা পড়তে হবে, সেটি পড়লে একটি দরজা খুলবে, এই আইডিয়াটা কোন পারপাসফুল সিস্টেমে র‍্যানডমলি এসোসিয়েট হতে পারে না।
    আমাদের সিস্টেমটি আরও কম্প্লেক্স হয়ে যায় যদি দরজার সাথে আরেকটি স্পেসিফিক সিস্টেম জুড়ে দেয়া হয়। ধরি, এই ছক্কা দিয়ে নির্মিত আরেকটি সুইচ ভিতরে আছে। দরজা ওপেন হলে সেই সুইচটি এক্টিভেট হয়। ধরি এই সুইচটি ৬ টি ছক্কা দিয়ে নির্মিত। সুইচটি ইনএকটিভেট থাকা অবস্থায় প্রতিটি ছক্কায় ৩ পড়া অবস্থায় থাকে। লক্ষ্য করুন, এই সুইচটির ইনএকটিভ অবস্থাটাও কিন্তু স্পেসিফিক। কারণ সবগুলোতে যদি ৩ পড়া অবস্থায় না থাকে সুইচটি ডিসফাংশনাল হয়ে যাবে।  মনে করি দরজা খুললে সুইচের শেষের ছক্কাটি ৩ এর পরিবর্তে ৪ এ ঘুরে যায় এবং সুইচটি একটিভেট হয়। এবার আপনি নিজেই দেখুন এরকম একটি কমপ্লেক্স সিস্টেম র‍্যানডমলি তৈরী হওয়ার সম্ভাব্যতা কোথায় গিয়ে দাড়াল?




  • 0 comments:

    Post a Comment

    New Research

    Attention Mechanism Based Multi Feature Fusion Forest for Hyperspectral Image Classification.

    CBS-GAN: A Band Selection Based Generative Adversarial Net for Hyperspectral Sample Generation.

    Multi-feature Fusion based Deep Forest for Hyperspectral Image Classification.

    ADDRESS

    388 Lumo Rd, Hongshan, Wuhan, Hubei, China

    EMAIL

    contact-m.zamanb@yahoo.com
    mostofa.zaman@cug.edu.cn

    TELEPHONE

    #
    #

    MOBILE

    +8615527370302,
    +8807171546477