• অভিজিৎ রায় কি মুক্তমনা ছিল?

    নোট: 'মুক্ত-মনা' আসলে ইংরেজী Free-thinker শব্দের একটি বিকৃত প্রতিশব্দ। Free-thinker শব্দের সঠিক প্রতিশব্দ হবে মুক্ত-চিন্তক বা মুক্ত-চিন্তাবিদ কিংবা স্বাধীন-চিন্তক বা স্বাধীন-চিন্তাবিদ – সংক্ষেপে মুক্তচিন্তক। যাইহোক… সত্য উদ্ঘাটনের স্বার্থে এখানে কিছু যৌক্তিক প্রশ্ন উত্থাপন করা হচ্ছে।

    ১. অভিরায় কি মুক্তমনা ছিল?
    যারা অভিরায়কে 'মুক্তমনা' মনে করে তাদের প্রতি প্রশ্ন: ঠিক কোন্‌ সংজ্ঞানুযায়ী সে 'মুক্তমনা' ছিল? সেই সংজ্ঞা কে দিয়েছে? সেই সংজ্ঞানুযায়ী হিটলার, পল পট, নরেন্দ্র মোদি, হিন্দুত্ববাদের জনক ও নাস্তিক সাভারকার, গীয়ার্ট ওয়াইল্ডার্স, ফারাবী, বাংলা ভাই-রা 'মুক্তমনা' হতে পারবে কি-না? উত্তর যদি 'না' হয়, তাহলে কেন নয়?

    ২. অভিরায় ঠিক কী নিয়ে প্রশ্ন-সংশয়-মুক্তচিন্তা করেছে?
    অভিরায়ের অন্ধ মুরিদদের দাবি অনুযায়ী তাদের গুরুজী নাকি একাধারে 'যুক্তিবাদী', 'সংশয়বাদী', 'প্রশ্নবাদী', 'মুক্তমনা', 'ক্রিটিক্যাল থিঙ্কার', ইত্যাদি ছিল। নিচে কিছু উদাহরণ ও প্রশ্নের মাধ্যমে খুব সংক্ষেপে ব্যাপারটা ক্ষতিয়ে দেখা যাক:
    –অভিরায় নিজেকে 'মুক্তমনা নাস্তিক' দাবি করে মুসলিমদেরকে 'অন্ধ বিশ্বাসী' আখ্যা দিয়ে হেয় করেছে এই বলে যে, মুসলিমরা তাদের বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন-সংশয়-মুক্তচিন্তা করে না। কিন্তু সে কি তার নিজের বিশ্বাস 'নাস্তিকতা' নিয়ে কোনো রকম প্রশ্ন-সংশয়-মুক্তচিন্তা করেছে? না! নাস্তিকতাও যে ভুল হতে পারে- এই ধরণের কোনো অপশন কি তার অভিধানে ছিল? না! বিজ্ঞান কি স্রষ্টার অনস্তিত্ব প্রমাণ করেছে? না, প্রশ্নই আসে না! তাহলে অভিরায়ের নাস্তিকতার ভিত্তি অন্ধ বিশ্বাস ছাড়া অন্য কিছু ছিল কি? এমনকি পারিবারিকসূত্রে প্রাপ্ত নিজ ধর্মের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন-সংশয়-চ্যালেঞ্জ করেও তার কোনো লেখা নেই!
    –অভিরায় 'বিবর্তনবাদী' সেজে নিজ ধর্মের সৃষ্টিতত্ত্বকে চেপে যেয়ে ইসলাম ও মুসলিমদেরকে 'বিজ্ঞান-বিরোধী' প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সে কি বিবর্তন তত্ত্বের সত্যতা নিয়ে কোনো রকম প্রশ্ন-সংশয়-মুক্তচিন্তা করেছে? না! প্রকৃতপক্ষে, বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে তার 'সংশয়ী' মনে সারা জীবনে একটি প্রশ্নও জাগ্রত হয়নি! সর্বনাশের কথা! এই কথা এমনকি তালেবান মাদ্রাসার ছাত্ররা শুনলেও অভিরায়ের অন্ধ পূজারীদের খবর আছে! অথচ সারা বিশ্বের অসংখ্য শিক্ষিত-সচেতন মানুষ বিবর্তন তত্ত্বের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন-সংশয়-চ্যালেঞ্জ করছে- যাদের মধ্যে অনেক বিজ্ঞানী-গবেষকও আছেন। এমনকি খোদ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষ বিবর্তনবাদের কল্পকাহিনীতে বিশ্বাস করে না। অভিরায় তাহলে কতবড় অন্ধ বিশ্বাসী ছিল, ভেবে দেখুন! অথচ সে তার গ্যাং নিয়ে মুসলিমদেরকে কথায় কথায় 'অন্ধ বিশ্বাসী' বলে হেয় করেছে। পুরাই মগজিতের মুল্লুক আরকি!
    –অভিরায় কি হুমায়ুন আজাদ, প্রবীর ঘোষ, আরজ আলী মাতুব্বর, তসলিমা নাসরিনের লেখা নিয়ে কোনো রকম সমালোচনা বা প্রশ্ন-সংশয় করেছে? না! অভিরায় বরং তাদের লেখাকে 'বেদবাক্য' ধরে নিয়ে প্রমোট করেছে।
    –অভিরায় কি রিচার্ড ডকিন্স, স্যাম হ্যারিস, ক্রিস্টোফার হিচেন্স, লরেন্স ক্রাউস, ও ভিক্টর স্টেঙ্গারের মতো পশ্চিমা নাস্তিকদের লেখা নিয়ে কোনো রকম সমালোচনা বা প্রশ্ন-সংশয় করেছে? উরেব্বাপ! প্রশ্নই ওঠে না! অভিরায় বরং তাদেরকে 'ঈশ্বর-দেবতা'-র আসনে বসিয়ে দিয়ে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রমোট করেছে। শেষের দিকে কিছু প্রমাণ দেয়া হলো।
    –যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসে অভিরায় কি ইহুদী ধর্ম ও খ্রীষ্ট ধর্মের সত্যতা নিয়ে তাদের সাথে কোথাও কোনো বিতর্ক করেছে? না! সে কি এই ধর্ম দুটোকে অযৌক্তিক, অবৈজ্ঞানিক, অমানবিক, ভায়োলেন্ট, নারী-বিদ্বেষী, ইত্যাদি প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে? মাথা খারাপ নাকি! এই সৎ-সাহস তার কখনোই ছিল না। অথচ সে কিন্তু ফারাবীর সাথে ইসলামের নবীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বিতর্ক করেছে! তার আগে আরো কয়েকজন দেশী-বিদেশী মুসলিম ব্লগারের সাথেও বিতর্ক করেছে। ইসলামকে কথায় কথায় 'অযৌক্তিক', 'অবৈজ্ঞানিক', 'অমানবিক', 'ভায়োলেন্ট', 'নারী-বিদ্বেষী', 'ভাইরাস', ইত্যাদি প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। তার ঘৃণাবিদ্বেষ আর আক্রমণের মূল দুটি লক্ষ্যবস্তু ছিল মানবতার নবী ও কুরআন। হাজারো প্রমাণের মধ্যে গোটা দু'য়েক নমুনা এখানে ও এখানে পাওয়া যাবে।
    তাহলে দেখা যাচ্ছে অভিরায় নিজে অপ্রমাণিত নাস্তিকতা, বিবর্তনবাদের হাস্যকর সব কল্পকাহিনী, আর তার নাস্তিক-অজ্ঞেয়বাদী গুরুদের লিখা অসংখ্য বই-পুস্তকের মধ্যে মাথা গুঁজে রেখে মুসলিমদেরকে কথায় কথায় 'অন্ধ বিশ্বাসী', 'ধর্মান্ধ', 'বিশ্বাসের ভাইরাসে আক্রান্ত', ইত্যাদি বলে হেয় করেছে। 
    অভিরায়ের 'প্রশ্ন-সংশয়-মুক্তচিন্তা-ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং-ইত্যাদি' তাহলে ঠিক কী নিয়ে ছিল? ইতোমধ্যে ব্যাপারটা সকলেরই জেনে যাওয়ার কথা। তার 'প্রশ্ন-সংশয়-মুক্তচিন্তা-ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং-ইত্যাদি' ছিল মূলত ইসলাম নিয়ে। তার বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রায় পুরোটাই ছিল ইসলাম ও মুসলিমদের বিশ্বাসের বিপরীতে- স্রেফ বিরোধীতা করার উদ্দেশ্যে। তার অন্ধ মুরিদরাও একই পথ অনুসরণ করছে। তাতে অবশ্য আমার কোনো আপত্তি বা সমস্যা নেই। আমি বরং মনে করি ইসলামের বিরুদ্ধে যত বেশি লেখালেখি-সমালোচনা-চ্যালেঞ্জ আসবে, মুসলিমরা তত বেশি ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা ও চিন্তা করার সুযোগ পাবে। কিন্তু দিনের আলোর মতো এই সত্যকে তারা স্বীকার না করে বরং উল্টোদিকে মুসলিমদেরকে 'অন্ধ বিশ্বাসী' বলে হেয় করে এই বলে যে, মুসলিমরা তাদের বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন-সংশয় করেনা! এইটা তো চরম অসততা- নিজের সারা গায়ে গু নিয়ে অন্যের জুতার তলায় কাদা খোঁজার মতো আরকি! তাছাড়া একটি ধর্মকে সত্য হিসেবে বিশ্বাস করার পর সেই ধর্ম নিয়ে আবার প্রশ্ন-সংশয় করার কথা বলাই তো চরম বেকুবীপনা!
    বাস্তবতা হচ্ছে 'নাস্তিক-মুক্তমনা'রূপী অভিরায় আর তার অন্ধ মুরিদদের চেয়ে মুসলিমরা অনেক বেশি প্রশ্নবাদী ও সংশয়বাদী। ইট'স আ ফ্যাক্ট। এর প্রমাণ হচ্ছে মুসলিমরা শুধুমাত্র একটি গ্রন্থ (কুরআন) ছাড়া ইচ্ছে করলে এই দুনিয়ার সবকিছু নিয়েই প্রশ্ন-সংশয় করতে পারে। অন্যদিকে অভিরায় আর তার মুরিদদের ধর্মগ্রন্থের সংখ্যা গুনে শেষ করা যাবে না! উদাহরণস্বরূপ- হুমায়ুন আজাদ, প্রবীর ঘোষ, আরজ আলী মাতুব্বর, তসলিমা নাসরিন, রিচার্ড ডকিন্স, স্যাম হ্যারিস, সালমান রুশদী, ক্রিস্টোফার হিচেন্সের মতো শত শত লোকজনের লিখা বই-পুস্তকগুলো অভিরায় আর তার মুরিদদের কাছে ধর্মগ্রন্থের মতোই 'প্রশ্ন-সংশয়ের ঊর্ধে' হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে! 😀
    অভিরায় তো আর নাই। কাজেই তাকে আর চ্যালেঞ্জ দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তার মুরিদরা অভিরায়কে ব্যক্তি-আক্রমণ ও গালিগালাজ তো দূরে থাক, এমনকি তার লেখা থেকে ভুল-ভ্রান্তি-মিথ্যাচার-ভণ্ডামী-প্রতারণা-ঘৃণাবিদ্বেষ-ইত্যাদি উল্লেখ'সহ সমালোচনামূলক কিছু লেখা মুক্তমনা ব্লগ বা ফেসবুকে পোস্ট করার মতো সাহস দেখাতে পারবে কি? তারা অভিয়ারকে 'সকল প্রকার ভুল-ভ্রান্তির ঊর্ধে একজন ঈশ্বর' হিসেবে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে কি-না, প্রমাণ হয়ে যাক?

    ৩. অভিরায় কি বাক-স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিল?
    অভিরায় তার নিজ ব্লগে গ্যাং নিয়ে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে মগের মুল্লুক স্ট্যাইলে যাচ্ছেতাই লিখলেও, মুসলিমদেরকে সেখানে কঠোর মডারেশনের মধ্যে দিয়ে যেতে হতো। মুসলিমরা চাইলেই সেখানে লেখা পোস্ট করতে কিংবা এমনকি মন্তব্যও করতে পারতো না। মাঝেমধ্যে দু-একটি মন্তব্য প্রকাশ করা হলেও মন্তব্যকারীর উপর তার গ্যাং নিয়ে হামলে পড়া হতো। এমনকি ইসলাম-বিরোধী নাস্তিক হওয়া সত্ত্বেও অভিরায় কিংবা তার 'মুক্তমনা' কাল্টের সামান্যতম সমালোচনাকারীকেও সেখানে গ্যাং আক্রমণ করে ব্যান করা হয়েছে। 
    শুধু তা-ই নয়, অভিরায়ের ফেসবুকের অধিকাংশ পোস্ট ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে হওয়া সত্ত্বেও তার কমেন্ট অপশন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ তার 'গুড ফ্রেন্ডলিস্টে' না থাকলে কেউ তার পোস্টে মন্তব্য করতে পারবে না। সোজা কথায়- মুসলিমরা তার ফেসবুকে ব্যান ছিল, এখনো আছে, অনন্তকালের জন্য প্রমাণ হিসেবে থেকে যাবে! তার মানে সে মুসলিমদের মুখ চেপে ধরে রেখে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে 'বাক-স্বাধীনতা'র চর্চা করেছে! এই হচ্ছে তার 'বাক-স্বাধীনতা'র নমুনা!

    ৪. অভিরায় কি স্রোতের প্রতিকুলে, নাকি অনুকুলে দাঁড় বেয়েছে?
    অভিরায় লেখালেখি শুরু করেছে মূলত ৯/১১-পরবর্তী সময় থেকে- বলা যায় ৯/১১-কে পুঁজি করেই। প্রথম কয়েক বছর অমুসলিম-অধ্যুষিত সিঙ্গাপুরে বসে লিখেছে, আর শেষের কয়েক বছর খ্রীস্টান-অধ্যুষিত যুক্তরাষ্ট্রে বসে লিখেছে। গা-বাঁচানোর জন্য ছুটছাট জিনিস বাদ দিলে সে মূলত ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে লিখেছে। ৯/১১-পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে লিখাকে কেউই স্রোতের প্রতিকুলে বলবে না। সত্যি বলতে, খ্রীস্টান-অধ্যুষিত ও ইহুদী-প্রভাবিত যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসে সে এমন কিছু করেনি যেটি স্রোতের প্রতিকুলে হিসেবে গণ্য হতে পারে। তার মুরিদরা কোনো প্রমাণ দেখাতে পারবে না।

    ৫. অভিরায় কি দ্বিতীয় বিদ্যায় আস্থা রেখেছিল?
    অভিরায় নিজেকে 'মুক্তমনা নাস্তিক' দাবি করে তার ওয়েবসাইটে "আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়…" জাতীয় উক্তি ঝুলিয়ে রেখে দল-বল নিয়ে মুসলিমদেরকে 'অন্ধ বিশ্বাসী' বলে হেয় করতো। কিন্তু সে নিজে কি দ্বিতীয় বিদ্যায় আস্থা রেখেছিল? নাস্তিকতা বিষয়ে তার কোনো 'দ্বিতীয় বিদ্যা' ছিল কি? এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা বিষয়ে তার কোনো 'দ্বিতীয় বিদ্যা' ছিল কি? বিবর্তনবাদ বিষয়ে তার কোনো 'দ্বিতীয় বিদ্যা' ছিল কি? ইসলাম বিষয়েই বা তার কোনো 'দ্বিতীয় বিদ্যা' ছিল কি? এই সবগুলো প্রশ্নেরই উত্তর হচ্ছে "না"! নিজেকে 'মুক্তমনা নাস্তিক' দাবি করে অন্যদেরকে দ্বিতীয় বিদ্যায় আস্থা রাখার জন্য তাগিদ দিয়ে নিজে সকল বিষয়ে প্রথম বিদ্যায় অন্ধ বিশ্বাসী হয়ে থাকাটা কি মহা-প্রতারণার মধ্যে পড়ে না?  

    ৬. অভিরায় কি সৎ, অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী ছিল?
    অভিরায় ব্রাহ্মণ পরিবার থেকে নিজেকে 'মুক্তমনা নাস্তিক' দাবি করে বিভিন্ন ঘটনাকে পুঁজি করে কথায় কথায় ইসলামকে 'ভাইরাস' ও 'জঙ্গি-সন্ত্রাসী ধর্ম' প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। মুসলিমদেরকে কথায় কথায় 'বিশ্বাসের ভাইরাসে আক্রান্ত রুগী', 'জঙ্গি', 'সন্ত্রাসী', 'মৌলবাদী', 'ধর্মান্ধ', 'অন্ধ বিশ্বাসী', ইত্যাদি বলেছে। 'ধর্ম'কে ভাইরাস ও জঙ্গি-সন্ত্রাসের উৎস বানিয়ে দিয়ে তার ডজনেরও বেশি পোস্টের সবগুলোই ছিল ইসলাম ও মুসলিমদের নিয়ে। 'ধর্ম' নিয়ে তার বাকি লেখাগুলোও মূলত ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগ্যাণ্ডামূলক।
    অথচ তার জন্মস্থান বাংলাদেশেই হিন্দু নারীরা পিতা ও স্বামীর সম্পত্তির কোনো অংশ পায় না। তাদের তালাকের কোনো অধিকার পর্যন্ত নেই। অভিরায় এগুলো নিয়ে একটি লাইনও কখনো লিখেনি। এমনকি নির্যাতিত-নিপীড়িত-অবহেলিত দলিত-শূদ্রদের করুণ আর্তনাদও তার কানে কখনো পৌছেনি! অথচ সে ইরান-সৌদি নারীদের অধিকার নিয়ে মায়াকান্না করেছে! মুসলিম নামধারী ইসলামবিদ্বেষীদের অধিকারের ব্যাপারে সে সদা-সর্বদা সোচ্চার ছিল। এরকম প্রমাণ আরো অনেক আছে। এর পরও সে যদি সৎ, অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী হয়- তাহলে সারা দুনিয়ায় অসৎ, সাম্প্রদায়িক, মানবতা-বিরোধী কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না।
    সত্যি বলতে, তার মুরিদ-পূজারীরা তার নাস্তিকতার পক্ষেও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারবে না! তার উল্টোটাই বরং একাধিকবার দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে লিখার উদ্দেশ্যে সে নিজেকে 'মুক্তমনা নাস্তিক' দাবি করে গা বাঁচানোর জন্য সেভাবেই লিখেছে, এই আরকি। তার স্বগোত্রীয়দের প্রায় সকলেই কম-বেশি একই কৌশল প্রয়োগ করে। তারা অনলাইনে 'নাস্তিক', 'মুক্তমনা', 'বিজ্ঞানমনস্ক', 'বিবর্তনবাদী', 'মানবতাবাদী', 'সেক্যুলার', 'নারীবাদী', ইত্যাদি সেজে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিথ্যা-প্রপাগ্যাণ্ডা ছড়িয়ে, কেউ কেউ আবার নিজ ধর্মকে কৌশলে জাতে তোলারও চেষ্টা করে। অনলাইনে তাদের মধ্যে সহসা কোনো ধার্মিক বা আস্তিক খুঁজে পাওয়া যায় না!

    ৭. অভিরায় কি তার মুরিদদেরকে বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা বা লেখালেখি করতে উৎসাহিত করেছে?
    মোটেও না। তার খাসি মুরিদদের লেখাগুলো যাচাই করলে যেকেউ তা বুঝতে পারবেন। কেউ কেউ বরং তার মুরিদ হওয়ার পর বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা/লেখালেখি ছেড়ে দিয়ে ইসলাম নিয়ে গুবেষণা শুরু করেছে। অভিরায় আসলে তার মুরিদদেরকে ইসলাম ও মুসলিম-বিদ্বেষী জাম্বি বানিয়ে গেছে। তার মুরিদ হওয়ার আগে তাদের ইসলাম ও মুসলিম-বিদ্বেষী থাকার পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। অভিরায়ের মাধ্যমেই তাদের ইসলাম ও মুসলিম-বিদ্বেষে হাতেখড়ি হয়েছে। অনেকেই সেটা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের কেউই বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা কিংবা এমনকি লেখালেখিও করে না।

    ৮. অভিরায়ের কাছে সবচেয়ে বেশি 'ভয়ঙ্কর' কী ছিল?
    বর্তমান বিশ্বে যে পরিমাণ পারমাণবিক বোমা আছে সেগুলো দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে সারা দুনিয়ার মানুষকে নিশ্চিহ্ণ করে দেওয়া সম্ভব। এর কিছু প্রমাণ হিরোশিমা, নাগাসাকি, ভিয়েতনাম, ইরাক, ও আফগানিস্তানে ইতোমধ্যে দেখা গেছে। তাছাড়াও আরো অনেক মারণাস্ত্র আছে যেগুলো দিয়ে অল্প সময়ে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা সম্ভব, করা হচ্ছেও। অভিরায় সর্বশেষ যে দেশের নাগরিক ছিল সেই যুক্তরাষ্ট্রেই বন্দুক দিয়ে নিয়মিত মানুষ হত্যা করা হয়। অথচ তার কাছে "কুরআন" নামে কাগজ-কালি-কলম দিয়ে লিখা একটি গ্রন্থ ছিল সবচেয়ে বেশি 'ভয়ঙ্কর'! তবে তার কাছে আরো বেশি ভয়ঙ্কর ছিল সেই গ্রন্থে উল্লেখিত মৃত্যুপরবর্তী জীবনের শাস্তি, যদিও সে মৃত্যুপরবর্তী জীবনে বিশ্বাসই করতো না! তাহলে তার উদ্দেশ্য কী ছিল? উদ্দেশ্য ছিল ইসলামকে একটি 'ভয়ঙ্কর' ও 'বিদ্বেষী ধর্ম' হিসেবে উপস্থাপন করা। 

    ৯. অভিরায় কি 'Intellectually fulfilled atheist' ছিল?
    "Although atheism might have been logically tenable before Darwin, Darwin made it possible to be an intellectually fulfilled atheist" – Richard Dawkins
    রিচার্ড ডকিন্স থেকে কপি করে অভিরায়ের 'আহমেদ' নামধারী ২য় স্ত্রীর দাবি অনুযায়ী তার গুরুজীও 'Intellectually fulfilled atheist' ছিল! – যদিও তার মৃত্যুর পর কোথাও তাকে 'নাস্তিক' হিসেবেই পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়নি! তথাপি 'Intellectually fulfilled atheist' আসলে কী জিনিস, এইটা খায় না পিন্দে, অভি'র সারা জীবনের লেখাতে নাস্তিকতার পক্ষে এমন কোনো যুক্তি-প্রমাণ দেওয়া হয়েছে কি-না যেটি তার নিজস্ব চিন্তাপ্রসূত- জানতে চাওয়া হলে আজ পর্যন্তও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি! তাছাড়া কিছু 'Intellectually unfulfilled' বা অজ্ঞ-নির্বোধ নাস্তিকের নাম জানতে চাওয়া হলেও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি!
    এছাড়াও অভি-পূজারীদের দাবি অনুযায়ী তাদের গুরুজী একাধারে 'বিজ্ঞানমনস্ক', 'যুক্তিবাদী', 'প্রগতিশীল', 'অসাম্প্রদায়িক', 'সেক্যুলার', 'মানবতাবাদী', 'মুক্তচিন্তার মানুষ', ইত্যাদি ছিল। অথচ কিছু বিজ্ঞান-বিরোধী, অ-যুক্তিবাদী, সাম্প্রদায়িক, প্রতিক্রিয়াশীল, বদ্ধচিন্তার মানুষ, নন্‌-সেক্যুলার, ও মানবতা-বিরোধী নাস্তিকের নাম জানতে চাওয়া হলেও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি! শুধু তা-ই নয়, অভি-পূজারীদের আরো দাবি অনুযায়ী তাদের গুরুজীর পরিণতি নাকি গ্যালিলিওর মতো হয়েছে! কিন্তু কী এমন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের ফলস্বরূপ তাদের গুরুজীর এই পরিণতি হলো, কে বা কারা এই পরিণতির জন্য দায়ি- তার পক্ষেও কোনো প্রমাণ দেয়া হয়নি! এই হচ্ছে অভিরায়ের মস্তক-ধোলাই মুরিদ-পূজারীদের অবস্থা!

    নোট: মুসলিমদেরকে ঠ্যাঙ্গানোর উদ্দেশ্যে পশ্চিমা শ্বেতাঙ্গ কিছু বিজ্ঞানীকে 'ঈশ্বর-দেবতা' বানিয়ে দিয়ে অভিরায় তাদেরকে প্রমোট করেছে। সে তো তার পেগ্যান বিশ্বাস থেকেই বেরোতে পারেনি! পেগ্যান ধর্মেও মানুষের 'ঈশ্বর' হয়ে ওঠার অনেক কাহিনী আছে!
    ishwar



     debota2

     debota3

     debota4

     debota5
    একদিকে মুসলিমদেরকে 'বিজ্ঞান-বিরোধী' প্রমাণ করা এবং অন্যদিকে বিজ্ঞানের নামে অসচেতন মুসলিমদেরকে নাস্তিকতায় (পরোক্ষভাবে তার ধর্মে) ধর্মান্তরিত করার উদ্দেশ্যে এইসব সাদা চামড়ার বিজ্ঞানীদের কিছু উটকো কথাবার্তাকে 'আধুনিক ঈশ্বর-দেবতার অভ্রান্ত বাণী' ধরে নিয়ে সেগুলোর সাথে গোচনা মিশিয়ে 'আধুনিক বিজ্ঞান' হিসেবে চালিয়ে দিয়ে বাংলা ভাষায় পরিবেশন করা হয়েছে। তার অন্ধ মুরিদরা মনে করেছে তাদের গুরুজী নিজস্ব গবেষণালব্ধ খ্যাঁটি বিজ্ঞান প্রচার করছে!
    প্রশ্ন: এই পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা কি কোনোভাবে অবগত যে, তাদেরকে 'ঈশ্বর-দেবতা'র আসনে বসিয়ে দিয়ে তাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে এক ভণ্ড নাস্তিক তার গ্যাং নিয়ে মুসলিমদের উপর সুযোগ বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়েছে?
  • 0 comments:

    Post a Comment

    New Research

    Attention Mechanism Based Multi Feature Fusion Forest for Hyperspectral Image Classification.

    CBS-GAN: A Band Selection Based Generative Adversarial Net for Hyperspectral Sample Generation.

    Multi-feature Fusion based Deep Forest for Hyperspectral Image Classification.

    ADDRESS

    388 Lumo Rd, Hongshan, Wuhan, Hubei, China

    EMAIL

    contact-m.zamanb@yahoo.com
    mostofa.zaman@cug.edu.cn

    TELEPHONE

    #
    #

    MOBILE

    +8615527370302,
    +8807171546477