• ফ্যাসিবাদ

    ফ্যাসিবাদ মোকাবেলার কথা ভাবছেন? একটু থামুন, আগে ভাবুন...
    ফ্যাসিবাদ কী এবং কেন প্রতিরোধ করতে ...

    গত ২৩ জুন, ২০২০ সালে আমি ফেসবুকে একটি পোষ্ট দিয়েছিলাম। সেই পোষ্টের নিচে অনেকের পরিচিত ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হক মাত্র দুটি কমেন্ট করেছেন। তার কমেন্ট দুটি ধরে খুব সহজে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট ব্যাখ্যা করা সম্ভব মনে করছি। তাই এই নোট লিখছি। আমি খুব ভাল জাবাব দিছি বা নিজে খুব জিতে গেছি বা কোন রকম আত্ম-অহংকে তুষ্ট করার জন্য এই নোট লিখিত হচ্ছে না। আমার কোন লেখা-লিখিই তা করে না। ফলে আশা করি ব্যক্তিগত তর্কযুদ্ধ হিসেবে বিষয়টা না দেখে, আমি যে রাজনৈতিক সংকটকে ব্যাখ্যার জন্য এই আলাপটা শুরু করছি তা প্রিয় বন্ধুরা আমলে নিবেন। তর্কতুলবেন। শেয়ার করবেন।
    চলুন আগে পড়ে নিই মূল পোষ্টটি-
    আন্দোলন ও বিরোধীতা করে ওরা যে ভাবে ফ্যাসিবাদকে শক্তি যোগাচ্ছে:
    জিজিটাল আইন বাতিল চাই মার্কা একটা আদুরে আন্দোলন দেখছি এখন। মূলত কিছু চিহ্নিত শাহবাগীরাই এই আন্দোলনের অগ্রভাগে আছে।
    আইনটা যখন করা হয় তখন এরা মনে করেছিল, দেশে যেহেতু প্রযুক্তির জোরায় শুরু হইছে আমাদের কোন অসুবিধা নাই। আমরাই সুবিধা নিবো। সাংষ্কৃতিক ভাবে এটা তাদের হেল্পই করবে- এমনটা মনে করেছিল।
    তখন আমরা প্রতিবাদ করেছি। বলেছি, ফ্যাসিবাদকে আরও শক্তি যোগাবে এই আইন। ডিজিটাল শব্দটাই একটা শাসনের হাতিয়ার। এর সাথে মানুষ ও দেশের কল্যাণের কোন সম্পর্ক নাই। নেটের খরচ ও নানান ভাবে জনগনের টাকা লুটার কৌশল ছাড়া এটা আর কনো উপকার মানুষকে দিবে না। এখন তো দেখতেই পাচ্ছেন। মোবাইল কলে কর, কল রেট, এতোট ব্যায়বহুল ভাবে ডাটার মাধ্যমে ইন্টারনেট দুনিয়াতে নাই এখন। সিমের সাথে এটা দিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের দেশে আলাদা আলাদা করে প্রচুর টাকা নিয়ে ব্যবহার করতে হয় মোবাইল নেট। ফলে ডিজিটালে টাল হয়ে এরা এই লুটপাট ও সন্ত্রাসের জালটা আড়াল করে রেখছিল মূলত।
    আমরা বলেছিলাম, এটা ব্যক্তিগত ক্ষোভ মিটাতে ব্যবহার হবে। কিন্তু আমাদের রাজাকার বলা হয়েছে তখন।
    ইনু হেসে হেসে তাদের শান্তনা দিছে। তখন যারা একটু আপত্তি করেছিল, তাদের বলা হয়েছে, এটা সংশোধন করা হবে। কেউ এটা বাতিল চায় নাই। সংশোধন করে এই আইন জারি হোক এমনই ছিল আজকের প্রতিবাদকারীদের চাওয়া।
    ফলে সরকার দেখছিল যে সমর্থন তো আছে। তাই এই গান্ডুদের কনভিন্স করতে ইনুর বয়ানই যথেষ্ট ছিল।
    এখন গোদের উপর বিষফোড়ার মতো অবস্থা হয়েছে ওদের। ফ্যাশনেবল আন্দোলন করতেছে। ফ্যাবাদের বিরুদ্ধে ঘরে বসে গলায় প্লে কার্ড ধরে আন্দোলন। এতো আরম করে আন্দোলন করার সুযোগ আর কোন জাতি পায় না।
    এই অশিক্ষত শিক্ষক ও একটিভিস্টরাই বাংলাদেশকে আজকের এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে। তাই ওদের অবস্থা দেখলে এখন ভালই কৌতুক হয়।
    ডিজিটাল আইন কেন, সাহস থাকে তো বল,
    ‘ডিজিটাল ফ্যাসিবাদ চলবে না। কোন ভোট চোরকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না। ফ্যাসিবাদ নিপাত যাক।চেতনা রনামে সন্ত্রাস চলবে না।’
    উন্নয়ণের নামে লুটেরাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য আসেন আন্দোলন করি- এটাতো একবারও বলে না।
    ডিজিটাল ফ্যাসিবাদ সমস্যা না ওদের কাছে, সমস্যা হলো ডিজিটাল আইন- বুঝেন অবস্থা।
    যে আইন করার কোন বৈধতাই নাই এই সরকারের- এটা নিয়ে কোন কথা নাই ওদের। কারণ কোন অনির্বাচিত/ ভোটচোর সরকার কোন আইন করে জনগনের উপর চাপিয়ে দিলে জনগন তা মানতে বাধ্য না। কিন্তু ওরা এমন ভাবে আন্দোলন করে যাতে মনে হয় এই অবৈধদের যা খুশি ‘আইন’ করার অধিকার আছে। খালি আইনটা আমাদের মনমতো হলেই ভাল হতো। ফলে তাদের এই সীমিত আন্দোলন আন্দোলন খেলার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ নিজের বৈধতা ও নিজেকে এখনও অথরিটি আকারে দেখার সুযোগ পায়।
    আশা করি এবার বুঝতে পারছেন, এই আন্দোলনকারী ফটকাগুলাই এই দেশে ফ্যাসিবাদের কালচারাল এজেন্ট। এরাই এটাকে জিয়ায়ে রেখেছে। সংক্ষেপে এতটুকুই থাক আজ।
    -রেজাউল করিম রনি, ২৩ জুন, ২০২০।
    এই পোষ্টের প্রেক্ষিতে ফাহমিদুল হক কমেন্ট করেছেন-
    Fahmidul Haq: এত হিংসা নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা করবেন কিভাবে?
    আর আমার জবাব ছিল-
    নাহ, বুদ্ধিবৃত্তির চর্চার লাইসেন্স তো আপনাদের হাতে উঠায় দিছে জাতি- তাই না?
    আপনারা যেই ভাবে বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা করেন আমি সেইভাবে করি না। আমার তরিকা আলাদা। সেটা বুঝতে হলে পরীশ্রম করতে হবে? নিজেরে মূল ধারা আর আমরা প্রান্তিক বা আপনাদের স্বীকৃতি চাইছি এমন মনে করবেন না। আপনাদের আমি অথরিটি মনে করি না। ফলে ডন্ট ট্রাই টু জাজ মি। কোন রকম বেয়াদবি করবেন না- মাইন্ড ইট।
    আমি আপনাদের মতো পুতুপুত কালচারাল চর্চা করি না। পাওয়ার থিংকার বলতে যা বুঝায় সেটা আমার তরিকা। সেটাই চেষ্টা করি। নিজেরে বিশাল কিছুও মনে করি না। কেউ আমরে না পড়লেও কোন সমস্যা নাই। আমি যদি সত্যিই চিন্তার শর্তপূরণ করি এটা দরকারী হবে। কারো মনযোগ আকর্ষণের চেষ্টার প্রয়োজন নাই আমার।

    ফলে বিরোধীতা ও তর্ক থাকবে কিন্তু অথরিটিগিরি ও এলিটিজম দেখাবেন না। আপনাদের আমি পড়িও না গনিও না। আপনাদের চিন্তা ও তৎপরতার ২ পয়সার গুরুত্ব নাই আমার কাছে। কারণ আপনারা অশিক্ষাকে শিক্ষা মনে করেন ও ট্রেডিশনকে আকড়ে ধরে ফ্যাসিবাদকেই সার্ভ করেন শেষ পন্ত।

    আপনারা আমারে পড়েন কি না পড়েন , তাতেও আমার কোন আগ্রহ নাই। আপনাদের বলি শাহবাগের পরাজিত শক্তি। আপনারা পরাজিত ইতোমধ্য। আপনারা এই দেশের শাহবাগী ও সাংস্কৃতিক ভাবে পরাজিত শক্তি।
    এখন আমরা শক্ত পজিশন নিলে সেটা হয়ে যায় হিংসা? গোটা দেশকে হিংসার আগুনে পুড়ায়ে ভাগ করেছেন আপনারা। হিংসা -একটা পশুর স্বভাব। আপনি মানুষ হিসেবে অন্যকে দেখতে পারেন না ফলে হিংসাই তো চোখে পড়বে- এটা স্বাভাবিক।
    আপনার বিরুদ্ধে গেলেই সেটা হিংসা কেন হবে? আমি কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা ও হিংসায় বিশ্বাস করি না। এই জন্য দেখবেন আপনাদের বিরোধীতা করলেও ব্যক্তিগত ভাবে কখনও অসৌজন্যতা দেখাই নি। এটা আমার আচরণে নাই। আপনাকে আমি থিওরিটিক্যালি ইলিমিনেট করতে চাই। ফলে হিংসা কেন করতে হবে? আপনি তো আমার ব্যক্তিগত শত্রু না। আপনি আপনার পজিশনের কারণে আমার এনিমি। ফলে আমি এ্যাটাক করবো আপনার পজিশনকে। ব্যক্তিগত ভাবে এক সাথে চা খাইতেও সমস্যা নাই। এখানে তাই করা হয়েছে।
    আশা করি কোনটা হিংসা আর কোনটা রাজনৈতিক বিরোধীতা তা বুঝবেন।
    রাজনৈতিক ভাবে আগামিতে আমরা কি আচরণ করবো তা অবশ্য বলা মুশকিল, তবে ভয়ের কোন কারণ নাই। আমরা আপনাদের মতো ফ্যাসিষ্ট না। ক্ষমতা অবশ্যই পরির্বতন হবে একদিন। আমরা তখন আপনাদের মতো ফ্যাসিবাদি রোল প্লে করবো না। সুবধিাবাদি ভূমিকাও নিবো না। আমরা থিওরিটিক্যাল ভালোলেন্স করে আপনাদের জাস্ট হাওয়া করে দিবো। অল রেডি আপনারা দেই দেশের মানুষের চোখে ঘৃনার পাত্র।
    আমার হিংসা করার মত কোন চরিত্র দুনিয়াতে নাই। হিংসা ভিত্তিক সম্পর্ক আমি চর্চা করি না। হয় বন্ধু না হয় শত্রু। কিন্তু শত্রু হতেও একটা যোগ্যতা ও পজিশনের স্বচ্ছতা লাগে।
    একজন চিন্তকের কাছে শত্রু ব্যক্তি না। ব্যক্তি যে ধারণ ধারণ করে তার বিরুদ্ধে তাকে পজিশন নিতে হয়। হিংসা ও আলগা পিরিতিও আমলে নেয়ার কিছূ নাই। আপনাদের নিজেদের মূলধারা মনে করার যে প্রবণতা তা যেকোন ভাবে আপনাদের ফ্যাসিবাদের দিকেই নতজানু করে রেখেছে( প্রথম আলো গং)। ফলে এই ধারাকে মোকাবেলা না করে বাংলাদেশে নতুন রাজনীতি সম্ভব না। তাই আপনাদের বিরুদ্ধে আমার পজিশন রাজনৈতিক। ব্যক্তিগতও না, কালচারালও না।
    ধন্যবাদ।
    এর জাবাবে আবার ফাহমিদুল হক লিখেছেন-
    “আপনাদের বিরোধীতা করলেও ব্যক্তিগত ভাবে কখনও অসৌজন্যতা দেখাই নি। এটা আমার আচরণে নাই। আপনাকে আমি থিওরিটিক্যালি ইলিমিনেট করতে চাই।” এর আগে এক পোস্টে আমাকে আপনি ‘বলদ’ বলেছিলেন, সামহাউ সেটা আমার চোখে পড়েছিল। আজকে বলছেন ‘অশিক্ষিত শিক্ষক ও অ্যাক্টিভিস্ট’। তথ্য হলো এই, সাম্প্রতিক অতীতে আপনার সঙ্গে আমার কোনো ইন্টার‌্যাকশনই হয় নি। আপনার কথায় আর কাজে অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছে। থিয়রিটিক্যালি ইলেমিনেট করতে চাইলে আরও একটু কনসিস্টেন্ট হলে ভালো হবে। পরামর্শ শেষ। বিদায়।
    আমার জবাব-
    আপনি একাই শিক্ষ এই দেশে এটাতো জানতাম না! আর পলিটিক্যাল বলদামি কেউ করলে তাকে বলদ বলা যাবে।
    কেউ শিক্ষক কলেই শিক্ষিত হবেন এমন কোন কথা নাই। যে খানে জ্ঞানের সাথে শিক্ষার সম্পর্ক নিয়েই তর্ক আছে।

    আপনার সাথে সাম্প্রতিক অতীত না হোক, দূর অতীতে বহু দেখা ও কথা হয়েছে। কোন দিন অসৌজন্যতা আমি দেখাই নি। ফলে আমার আচরণের অঙ্গতিটা আপনার কল্পনা প্রসূত আবিস্কার।

    আমি পরিস্কার করে, লম্বা করে বলেছি। আপনি ইগো ও সাবজেক্টিভ জায়গা থেকে দেখছেন, তাই আমাকে এখন মোরালি ভিকটিম বানানোর জন্য বলছেন, ‘আচরণে অসঙ্গতি’। একজন ফ্যাসিস্টও এভাবেই চিন্তা করে। প্রথমে সে নিজেকে মোরালি সুপ্রিম মনে করে বা দাবি করে। এই মোরালিটিকে অনেকে আবার মহান মনে করে থাকে। এটাকেই নিৎসে বলছেন ‘স্লেভ’ বা দাস্য মোরালিটি বা নৈতিকতা। এটা ফ্যাসিস্ট ব্যক্তির চরিত্রের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আপনি মনে করে দেখেন কোন দিন আপনার সাথে আমি সরাসরি বাজে আচরণ করেছি কি না? কোন লেখায় সরাসরি আপনাকে নাম ধরে পারসোনালি ‘বলদ’ বলেছি এটা প্রমাণ করতে পারলে জিবনে লিখবো না। নিজেকে অতিরিক্ত গরুত্বপূর্ণ মনে করার কারণে আপনার এই সমস্যা হচ্ছে বলে মনে করি। আপনাকে নিয়ে আমি বিজি না। পড়িও না। কোন আগ্রহও নাই আপনার কাজ ও চর্চা নিয়ে।
    কাজেই মিথ্যা ব্লেইম গেইম দরকার নাই। আপনাদের সাইকী আমি ভালো মতোই বুঝি। তাই এমন চরম পজিশনে খেলি। আপনারা ফ্যাসিস্ট মানসিকতা ধারণ করে। এবং সত্যের সাথে মিথ্যার মিশ্রণে কোন দ্বিধা করেন না। এই কারণেই আপনারা এই দেশের ফ্যাসিবাদের মিত্র হয়ে উঠেন, নানান রকম বিরোধীতা করার পরেও। আর দয়া করে পরামর্শ দিবেন না। ডাক্তার ও উকিল ছাড়া কারো পরামর্শ আমি ভালো ভাবে নেই না।
    ভালো থাকবেন। বিদায়।

    এবার একটু ব্যাখ্যা করা যাক :
    প্রথমে তিনি যে কমেন্ট করেছেন এটা একেবারেই ডাহা মিথ্যা অভিযোগ। আমার পোষ্টে কোন হিংসার কথা ছিল না। ছিল রাজনৈতিক ভাবে একটি অকার্যকর আন্দোলনের সমস্যাটা দেখানোর চেষ্টা। ফলে হিংসা তিনি নিজের মনের মধ্যে লালন করেন তাইতো আমার মধ্যে সেটা খুঁজতে আসলেন অপ্রাসঙ্গিক ভাবে। এখানে আমি ব্যক্তি ফাহমিদুল হককে ব্যক্তি মানুষ হিসেবে নয়, এই সমাজের কথাকথিত মূলধারা কি ভাব ফ্যাসিবাদের পক্ষে সক্রিয় আছে সেই এজেন্সিটাকে চিহ্নিত করতেছি। ফলে তার উপর আলাদা করে চড়াও হওয়ার কিছু নাই আমাদের। তবে মনে রাখতে হবে, এই গোটা চক্রকে আমাদের বৃদ্ধিবৃত্তিক ভাবে বিনাশ করে দিয়ে নতুন বাংলাদেশের সূচনা করতে হবে।
    আমি খুশি এটা দেখে যে, আমি পোষ্ট করার পরে বাংলাদেশদরদী ভাই ও এক্টিভিস্টরা এই ক্রিটিকটা সহজেই গ্রহণ করেছেন। নিজেরা যারা যার জায়গা থেকে সক্রিয় হয়েছেন এবং এই শখের আন্দোলনের বেলুন ফুটা করে দিছেন। এই কালচারাল ফ্যাসিস্টদের কোন ভাবেই রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের এজেন্ট হিসেবে জনগনের কাছে হাজির/হিরো হতে দেয়া যাবে না। এটা যে কোন মূল্যে ঠেকাতে হবে। এটাই আমি করি। ফলে আমার উপর তাদের রাগ হওয়টা খুব স্বাভাবিক।
    প্রথম কমেন্টেই আমি পরিস্কার করেছি আমার অবস্থান। লেখক হিসেবে আমি শুধু আমার সাথে প্রতিযোগিতা করি। আর কারো সাথে আমার কোন প্রতিযোগিতা নাই। কারো কাছে স্বীকৃতিও চাই না। চাই না কোন পুরস্কার। ফলে আমি সরাসরি ফাহমিদ বা এই চক্রকে আমার রাজনৈতিক শত্রু হিসেবে ঘোষণা করেছি। ওদের মতো আলগা ভদ্রতা করতে যাই না। মনে এক আর মুখে আরেক নীতি নেই নাই। এই সরাসরি অবস্থান নেয়াতে তার জন্য যে সংকট তৈরি হয়েছে সেটা আড়াল করতে তথ্যের নামে মিথ্যা দিয়ে আমাকে ভিলেন বা মিথ্যাবাদি প্রমাণ করতে চাইলো। লিখল- ‘কথা ও আচরণে অসঙ্গতির’ কথা। তার সাথে আমার পরিচয় তাও কমপক্ষে ১৫ বছর হবে। অনেক কথা হয়েছে। অথচ চালাকি করে বলব, সাম্প্রতিক অতীতে কোন ইন্টারেকশন হয়নি। এই যে বাক্যের চালাকি তা ভাষার ব্যাপার না এটাই ওদের মিথ্যাকে সত্যের মতো করে হাজিরের তরিকা মাত্র।
    আমি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করবো না। এ প্ররবণতার সাথে নিচের বিষয়গুলা মিলায়ে দেখেন তো-
    যখন আপনি এই সরকারের, মুক্তিযুদ্ধ-বয়ানের রাজনীতির বিরোধীতা করেন, যখন লুটপাটের বিরোধীতা করেন। যখন বিচারহীন আইনী হত্যা বা অত্যাচারের বিরোধীতা করেন। প্রথমে আপানাকে সরাসরি ভিকটিম না বানিয়ে ভিলেন ও নৈতিক ভাবে আপনাকে হেয় করা হয়েছে। আপনাকে-আমাকে বলা হয়েছে, রাজাকার, পাকিপন্থী। আরও স্মরণ করুণ, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের( আওয়ামীদের) টাকার পাহাড়, টাকা লুটের উৎসব শুরু করার জন্য আগে খালেদা জিয়াকে ২ কোটি টাকার সাজানো মামলা দিয়ে পরিবশে তৈরি করা হয়েছে।
    এয়াতিমের টাকা ‘চোর’ হিসেবে ব্যাপক প্রচার করে পরে আইনকে ব্যবহার করে জেলে নেয়া হয়েছে। যদিও সেই ২ কোটি টাকা বেড়ে এতো দিনে হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। তার পরেও এয়াতিমের টাকা চোর হিসেবে তাকে জাতির কাছে পোট্রেট করা হয়েছে। এর ফলে কোট কোটি লক্ষ টাকা অনায়াসে পাচারের ও লুটপাটের উৎসব শুরু করা সহজ হয়েছে। এটা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক বিষয় হয়ে উঠছে। এখানে ফাহমিদ কিন্তু একই আচরণ করেছে। শাহবাগের ঘৃণার স্পিরিটও তৈরি হয়েছে এই ফলস নেমিং থেকে বা মিথ্যা শত্রু তৈরির মধ্যদিয়ে। মিথ্যা ভাবে শত্রুকে আবিস্কার করা হয়েছে। ৭ বছরের মাদ্রাসার ছাত্রও ওদের কাছে রাজাকার। ইসলামি ভাবধারা প্রতি দরদ মানেই পাক-প্রেম। পাকিস্তানকে ঘৃণার সিম্বলে পরিণত করা হয়েছে। শাসক ও পাকিস্তানের জনগনের মধ্যে তফাত মুছে ফেলা হয়েছে। এভাবেই এরা আপনাকে নৈতিক ভাবে ট্যাগ করে শত্রু হিসেবে হাজির করে। যেটাকে পলিটিকক্স অব নেইমিং বলে। এভাবেই ফ্যাসিবাদ বিভক্তি তৈরি করে। আর এই বিভক্তির সব যুক্তি, সাহিত্য ও আবেগ সাপ্লাই দেয় এইসব বুদ্ধিজিবি নামের গণশত্রুরা। স্মরণ করুণ, শাহবাগে সলিমুল্লাহ খানের ভূমিকা। এবং বাংলাদেশের আমরা কয়েক জনমাত্র, হাতেগনা ৪/৫ জন ছাড়া সবাই ছিল ফ্যাসিবাদী প্রকল্পের বুদ্ধিজিবি। আমাদের মধ্যে আবার ছিল কিছু লোক খুব সেন্টিমেন্টাল। কিছু ছিল খুব বাটপার। সাংস্কৃতিক ভাবে শাহবাগি কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে এন্টি-শাহবাগি বা শাপলা পন্থি( যেমন ফরহাদ মজহার) যাহোক সেটা অন্য কথা। আরেকদিন এটা লিখবো।
    এই জন্য বলেছিলাম, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আপনি নৈতিকতা ক্লেইম করে টিকতে পারবেন না। ওরা রুমিন ফরহানাকে কি ভাবে ভিলেন বানাইছে দেখছেন তো? কিন্তু তখন অনেক জাতীয়তাবাদিও খুব নীতিবাগীশ হয়ে গেছিল। ফ্যাসিবাদের ছদ্দ নৈতিকতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য কোন পদ্ধতী না জানলে পরিণতি হয় বিএনপির মতো। এটা নিয়ে আমি লিখেছি। (দেখুন, বিএনপির শত্রু-মিত্র- রনি, জবান)
    কারণ, সে সব সত্যকে মিথ্যা হিসেবে চালু করেছে। আর মিথ্যাকে সত্য বলে জারি করেছে। ফলে, মোরাল এজ পলিটিক্যাল না হয়ে আমাদের হতে হবে, পলিটিক্যাল এজ মোরাল। আমারা নৈতিক হবো। সেটা প্রকৃত ভাবেই নৈতিক হতে হবে, কিন্তু আগে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করতে হবে, কারণ নৈতিকতা উৎপাদনের সব ফ্যক্টরি তো তার দখলে।
    তাই আগে ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করতে হবে রাজনৈতিক ভাবে। কিন্তু এই কাজে প্রধান বাঁধা হলো এই ফাহমিদুল ও প্রথম আলোপন্থি বা প্রগতীশীল বা কালচালার বাম বা আমি যেটাকে বলি ননপলিটিক্যাল বামপন্থা। তাদের প্রধান আর্জন ছিল শাহবাগ। যা দেশকে বিভক্ত করে শক্তিশালি করেছে ফ্যাসিবাদকে। আজকের ফ্যাসিবাদ তাদের চিন্তার ফসল। ওরা আচরণে প্রকৃতভাবেই ফ্যাসিবাদি। অন্যকে নৈতিকভাবে আক্রমণ করে নিজে হয়ে ওঠে ‘মূলধারা’। ফলে তখন আপনি হয়ে যান রাজাকার, পাকিপন্থি। ওদের বস্তাপচা আধুনিকতা, এন্টি-ইসলামি জীনবাচরণ উন্নত রুচি হিসেবে জারি করা হয়েছে। ওরা দার্শনিক ভাবে অশিক্ষত হওয়ার পরেও বিশাল বুদ্ধিজিবি ভাব নিয়ে থাকে । এরা সমাজে কিছু কাল্ট ফিগার চর্চা করে। যারা চিন্তার দিক থেকে আধুনিকতাবাদি যেমন, আনিসুজ্জামন, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, কামাল লোহানী - এদের পূজা করে। যদিও তাদের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। কিন্তু এদের প্রধান মিডিয়া প্রথম আলো প্রগতিপন্থার নামে এখানে কলকাতামূখিন একটা সংষ্কৃতির চর্চাকে মূলধারা করেছে। ফলে জেনারশনের পর জেনারেশন তৈরি হচ্ছে ইগোসেন্টীক, অশিক্ষিত, কিন্তু খুব অহংকারী, প্রচারপ্রিয় লেখক-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজিবিতে সমাজ ভরে উঠছে। এই অবস্থা কেন তৈরি হয়েছে?
    ছোট করে বললেই শেষ করি-
    ১.
    গণতন্ত্রের নামে যে বয়ান বাংলাদেশে এইসব বুদ্ধিজিবিরা চালু করেছে তা মূলত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ কায়েমের হাতিয়ার। দেখবেন, একটা জামায়াত-বিএনপির ছেলেকে গুলি করলে ওদের কোন শব্দ পাওয়া যায় না। কিন্তু একটা প্রগতীশীল লেখক-সাংবাদিক সরকারের জালে আটকা পড়লে ওরা প্রচুর বিপ্লব দেখায়। এই যে সিলেক্টিভ গণতন্ত্রপনা, মানবদতাবাদি, এনজিও বুদ্ধিজিবিতা তা যে হিংসা ও সাংষ্কৃতিক হীণমন্যতা থেকে তৈরি হয়েছে তা হল: মার্কস না পড়া বামপন্থা + মুক্তিযুদ্ধের চেতনা +
    একটুখানি প্রগতীশীলতা/নারীবাদিতা+ ইসলাম বিদ্বেষী= মূলধারার বুদ্ধিজিবি।
    এবং এরা যেহেতু বক্তিগত ভাবে প্রচন্ড সুবিধাবাদি। বিপ্লবও চাইবে আবার আরামও চাইবে। ফলে ক্ষমতার প্রশ্নে এরা সব সময় ফ্যাসিবাদের সহযোগী হয়। মানে, ওদের সামনে অপশন যদি হয় লীগ না বিএনপি। চোখ বন্ধ করে লীগ। তাছাড়া যেসব বুদ্ধিজিবিদের এরা পূজা করে তাদের চিন্তার মূল রাজনৈতিক বক্তব্য হল, একটা ভাল আওয়ামী লীগ চাই। আরও একটি কথা, আমরা যখন সরাসরি চরম পজিশনে থেকে কথা বলি, ওদের চোখে চোখ রেখে বলি তুই শাহবাগি! এরা তখন গণতন্ত্রের কথা বলে। সম্মিলিত ভাবে সরকার বিরোধীতার প্রয়োজনে সব মেনে একসাথে থাকতে বলে। এটা ভুল পদ্ধতী।
    এরা জানেনা এনার্কীর কোন ভবিষ্যৎ নাই। ভুল এক্টিভিজমের চেয়ে কিছু না করা বরং রাজনৈতিক আচরণ। আর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যে ধরণের রাজনীতি করতে হবে -সেই উদ্যোগ বরং তাদের এই ধরণের ছদ্দ আন্দোলনপনাতে নষ্ট হয়। মনযোগ সরে যায়। মানুষ মনে করেন, বাহ, ভাল তো, বেশ বিরোধীতা হচ্ছে। সরকারের জন্য ব্যাপক চ্যালেঞ্জ আছে। ফলে রিয়েল পলিটিক্যাল এজেন্সির প্রতি মানুষ মনযোগি হতে পারে না। ফলে ওদের গণতন্ত্রের কথা বলা আর শিয়ালের জিম্মায় মুরগি রাখা সমান।
    অন্যদিকে, এরা বুঝতে অক্ষম একটা কলোনিয়াল জাতীয়তাবাদি বয়ান থেকে ফ্যাসিবাদও কায়েম করা যায় না। ফলে লীগ চাইলেও ভালো রাজনৈতিক শক্তি হতে পারবে না। তাই এরা লীগের তাত্বিক শূণ্যতা সব সময় সাংষ্কৃতিক ভাবে পূরণ করে থাকে। এটাই লীগের মূল শক্তি। লীগ বিরোধীতার নামেও এরা লীগকেই শক্তি যুগিয়ে থাকে( উপরে সেটা বলা হয়েছে)। ফলে গণতন্ত্রের ধারণার যে আওয়ামীকরণ বাংলাদেশে হয়েছে তা রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রশ্নে লীগকে সুবিধা দিয়ে আসছে সেনা শাসন থেকে লীগ শাসনে প্রবেশের বিষয়টা খেয়াল করে দেখলেই বুঝবেন বিষয়টা। এটা তৈরি করেছে মূলত এই অশিক্ষিত বুদ্ধিজিবি শ্রেণীটি অনেক দিনের প্রচেষ্টার কারণে। ফলে, এদের চিন্তার দিক থেকে পরাজিত না করে নতুন রাজনীতি শুরু করে ফল পাওয়া যাবে না। কারণ, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলেও এরাই সাংষ্কৃতিক ভাবে মূলধারার মর্যাদা এনজয় করে। তাই আমি যে তাদের ইলিমিনেট করার কাত বলেছি তা রাজনৈতিক ভাবে খুবই দরকারী।
    ২.
    ‘শাহবাগ’- বাংলাদেশের যে কোন ব্যক্তির রাজনৈতিক অবস্থান যাচাইয়ের কষ্টিপাথর। যে ব্যক্তি বুঝে হোক বা না বুঝে হোক শাহবাগী ছিল, সে রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের গণমানুষকে শত্রু মনে করেন। সে ইসলাম প্রশ্নে ভারত বা বুশ পন্থি হতে বাধ্য। ফলে তাকে হাইপার সেকুলার অবস্থান বজায় রেখে যে বুদ্ধিজিবিতা করতে হয় তা সরাসরি ফ্যাসিবাদের দোস্ত হয়ে ওঠে। এখন শাহবাগের দার্শনিক পরাজয় ও গণবিরোধী অবস্থান পরিস্কার হওয়ার ফলে এরা পড়েছে আত্ম-পরিচয়ের সংকটে। ফলে এরা রেটরিক্যালি/বাকোয়াজিমূলক সরকার বিরোধী কাজে হাইপার এ্যাকটিভিটি করে। কিন্তু চিন্তার দিক থেকে পজিশন সেই শাহবাগিই রয়ে গেছে। ফলে তারা এক হাজার বছর এক্টিভিটি রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের কোন উপকার হবে না। এখন এন্টি শাহবাগি বা সরকার বিরোধী হলেই তাকে বুকে টেনে নেয়ার সুযোগ নাই। শাহবাগের পরে এখন সরকার বিরোধী ননপলিটিক্যাল বামপন্থি টাইপের আন্দোলন করা যেন একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। নাম নিলাম না। এমন বহু স্যাকুলার ও বামফ্লেবারের সংগঠন এখন জনগনকে বিপ্লবী আফিম খাওয়াচ্ছে সরকার বিরোধীতার নামে। মূলতা চিন্তার দিক থেকে এরা শাহবাগি। ফলে রাজনৈতিক ভাবে তাদের এই অবস্থান শেষ পন্ত ফ্যাসিবাদের সহযোগি হতে বাধ্য। তাদের দাবির মূল হলো, একটা ভালো আওয়ামী লীগ চাই। লীগ যে এতো জঘন্য এইটা দেখে তারা যেন শকট। তাই এরা ৭২ এর সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধে আসল চেতনার কথা এখনও বলেন। নয়া বাংলাদেশ গঠনের কোন প্রস্তাবণা তাদের নাই। সেই চিন্তার শক্তিও নাই। অথচ নাম দিবে- রাষ্ট্রচিন্তা, প্রগতীচিন্তা, নতুনধারা, মূলধারা ইত্যাদি ইত্যাদি।
    ৩.
    এইসব কথাকথিত বুদ্ধিজিবিদের চিন্তার দৌড় কলকাতার ৭০ দশকের মার্কসবাদি সাংষ্কৃতিক বয়ান পান্তই। যা ভারতে পরাজিত হয়েছে কিন্তু এরা স্বাধীনদেশে এই বাতিল জিনিস জিন্দা রেখেছে। মার্কসের চিন্তাশীল কোন রিডিং এরা দিতে সক্ষম নন। জ্ঞান চর্চার জন্য প্রকৃত কোন পরীশ্রম না করেই বইয়ের লেখকের নাম জপা, আইডিয়া মেরে দেয়া, কলোনিয়াল বাংলা গদ্যে বাতিল হওয়া পশ্চিমা চিন্তা বিনা ক্রিটিকে জপা, নিজেকে খুব এলিট মনে করা- এগুলা তাদের ব্যাসিক লক্ষণ। নিজেকে সব কিছুর অথরিটি মনে করার তাদের যে স্বভাব -এটারই রাজনৈতিক স্বরুপ আজকের ফ্যাসিবাদ। ফলে আজকের রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ মূলত তাদের স্বভাবেরই একটি বিকশিত রুপমাত্র। অন্যদিকে এরা লীগের সাথেও প্রতারণা করেছে। লীগ যেহেতু বাংলাদেশের রাজনৈতিক মূর্খতার একটি বড় হাব। ফলে তাদের চিন্তাগুরু হওয়া বামদের জন্য সজহ হয়েছে। সোভিয়েতপন্থি বামরা সামাজিক ফ্যাসিবাদের প্রধান হাতিয়ার( প্রথম আলো, সিপিবি, ছাত্র ইউনিয়ন)।
    অন্যদিকে আওয়ামী লীগ একটি মুসলিমলীগের ঐতিহ্যবাহিত সংগঠন কিন্তু এটাকে স্যাকুলারাইজ করে গণবিরোধী ফ্যাসিবাদ কয়েমের দিকে ঠেলে দিছে এরাই। এ জন্য আমদানি করেছে বেহুদা পাক ও ইসলাম ঘৃণা। ফলে লীগ যে আজকে এতোটা গণ-ঘৃণার কেন্দ্রে চলে আসছে তার দায়ও কিন্তু এদের। লীগের লোকজন কেন যেন এখনও এটা বুঝতেছে না- কে জানে। অবশ্য বুঝেও লাভ নাই। তাদের তো নতুন বয়ান তৈরি ক্ষমতা নাই। তাই ভারতমূখিন ৭১ এর গানই ভরসা। হয়তো ফাও ক্ষমতা পেয়ে মনে করছে চিরদিন এমন আরামে থাকবে। নাহ পারবে না। লীগের আত্মপরিচয়ের যে সংকট তাই তাকে হেফাজতের সাথে সমঝোতায় যেতে বাধ্য করে। একদিকে স্যাকুলারপন্থি অন্যদিকে ধর্মপন্থি দুটাই তাকে ধরে রাখতে হয়। ফলে লীগকে নীতিহীন ফেরাউনের মতোন প্রবল ভাবে গড়ে উঠতে যে সাংস্কৃতিক ঘৃণার চক্র দরকার ছিল তা এরাই চালু করেছে। এরাই তা উৎপাদন করে থাকে। ফলে লীগের গণমানুষের রাজনৈতিক শক্তি হয়ে ওঠারও প্রধান বাঁধা এরা।
    ৪.
    অনেকে যে ইচ্ছে করে এমন পজিশন নেয় তা না। এরা মনে করে এটাই রাজনৈতিক ভাবে এডভান্স জায়গা। কারণ হল, এরাই তো সমাজের মূলধারা। শিক্ষ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজিবি, কলাম লেখা -সব মিলে মধ্যবিত্তপনার সব আরামের মধ্যে থেকে সেলিব্রেটিগিরি করার খায়েস এরা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে প্রবাহিত করে আসছে। নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা এসেও নিজের স্বকীয়তা খতনা করে নিজেকে ওদের ছাঁচে গড়ে তুলেই জাতে উঠতে যুদ্ধ করে।
    এদের অনেকে আবার লেখা-লেখিকেই বিপ্লবী কর্ম মনে করে। ফলে বন্ধুক ও কলম আজ বিচ্ছিন্ন। এরা সাহিত্যের নামে এলিটিজম করে থাকেন মূলত। কলকাতারপন্থি বা রবীন্দ্রনাথের মতো একজন ধর্মপ্রাণ মানুষকেও স্যাকুলার হিসেবে নিজেদের ব্যবসবার হাতিয়ার করে নিছে এরা। ইসলামের সাথে বাঙালিপনার বিবাদ এরা জারি করেছে। ফলে তাদের পুরো চিন্তাপদ্ধীর বিরুদ্ধে আমি যে থিওরিটিক্যাল ভায়োলেন্স শুরু করার ডাক দিছিলাম আজ থেকে ১০ বছর আগে, এটার প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে। এটা শুরু করতে না পারলে নুতন প্রজন্ম তাদেরই আইকন হিসেবে মেনে প্রচুর মিনি শাহবাগি তৈরি হবে দেশে।

    শেষ করি। মূল কথা হল, ফ্যাসিবাদকে শুধু পুলিশ, বা বন্ধুক দিয়ে চিনলে হবে না। যে দলই ক্ষমতায় থাকুক -এই ফ্যাসিবাদের আবাদ বাংলাদেশে পুরো দমে চলেছে ৭১ এর পর থেকেই। ফলে আজ সমাজে বিভক্তি চরমে। ফ্যাসিবাদের সামাজিকী করণ হয়েছে। মানুষ পশুর মতো বেঁচে আছে। প্রতিবাদ করার সাহস তো নাই-ই। গোপন ইচ্ছেও নাই। যে জিবন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা না বলে নিজের মতো সুখি ও ভোগি হতে চায় তা পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট। আর এই নিকৃষ্ট অবস্থার অবসান হয় স্বাভাবিক ভাবেই। কিন্তু এইসব ছদ্দ বিপ্লবীদের কারণে সমাজে বিরোধীতার মিথ্যা জোয়ার চালু হয়। ফলে মানুষ আত্মসম্মান বোধ থেকে জেগে উঠে অবস্থার পরির্বতনে ভূমিকা রাখার -সেই গরজ ফিল করতে পারে না। এই ফেইক আন্দোলনকেই বিশ্বাস করে বসে থাকে। গোপনে সমর্থন দেয়। যেটা নুরুরা অর্জন করেছে। পিওর ফটকামী আড়াল করে মিথ্যা পরির্বতনের স্বপ্ন দেখায়ে পাবলিককে প্যারালাইজড করে রাখছে।
    -এভাবে ফ্যাসিবাদ আরও শক্তিশালি হতে থাকে। এরা প্রথমে মুখে ও আচরণে স্যাকুলার দাবি করলেও স্যাকুলার এথিকসও মানে না। এরা পুরোই নিকৃষ্ট শ্রেণীর সুবিধাভোগি। শক্তের ভক্ত, নরমের জম টাইপের মানুষ। ফলে এই ধারাকে আমরা এখন বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে পরাজিত করতে স্বক্ষম।
    এদের আর মূলধারা তো দূরের কথা শিক্ষত বলেও স্বীকার করার দরকার নাই। আমি যেমন বলি, অশিক্ষিত শিক্ষক-বুদ্ধিজিবি-সংষ্কৃতি কর্মী, এদের প্রতিরোধ করে, নতুন ধারার প্রকৃত বিশ্বমানের একশ্রেণীর তরুণদের নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক জেনারেশন তৈরি হলেই বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদকে সবদিক থেকে মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। এটার জন্য পপুলিস্ট তৎপড়তা বাদ দিয়ে নিজেদের তৈরি করতে হবে। না হলে, ক্ষমতা পেয়েও বা আমরা সংখ্যায় মেজরিটি হয়েও সাংস্কৃতিক ভাবে মাইনরিটি থেকে যাবো। এটা আর চলতে দেয়া যায় না।
    এই জন্য বলি আপনারা আমার হাতকে শক্তিশালি করুণ। আমি যেহেতু সরাসরি ঘোষণা দিয়েই যুদ্ধ শুরু করছি। আমার আর হারানোর কিছু নাই। সবাই আমার ও আমার ভাইদের জন্য দোয়া করবেন। এবং সক্রিয়ভাবে আমাদের সাথে থাকবেন। ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ থেকে এই ঐতিহাসিক অবর্জনা আমরা সাফ করতে সক্ষম হবো। ওদের কালচালার ডকট্রিন বা সাংষ্কৃতিক শাসনের অবসান না হলে রাজনৈতিক মুক্তি আসবে না।
  • 0 comments:

    Post a Comment

    New Research

    Attention Mechanism Based Multi Feature Fusion Forest for Hyperspectral Image Classification.

    CBS-GAN: A Band Selection Based Generative Adversarial Net for Hyperspectral Sample Generation.

    Multi-feature Fusion based Deep Forest for Hyperspectral Image Classification.

    ADDRESS

    388 Lumo Rd, Hongshan, Wuhan, Hubei, China

    EMAIL

    contact-m.zamanb@yahoo.com
    mostofa.zaman@cug.edu.cn

    TELEPHONE

    #
    #

    MOBILE

    +8615527370302,
    +8807171546477