• নেটওয়ার্ক উপাখ্যান ০৫ – ডিফিউশন ইকুয়েশন

     সেদিন কাপড় ধু’তে গিয়ে দেখলাম মেনজা কার্ডে টাকা নেই। ডর্মের বেয়াদব ওয়াশিংমেশিন গুলো সেই টাকা ছাড়া অন হয়না। লিকুয়িড ডিটার্জেন্ট কেনা ছিল। ঘরে ফিরে দুঃখ ঘোঁচানোর জন্য বোতলের ঢাকনায় ডিটার্জেন্ট ঢেলে ঘরের এককোনায় রেখে দিলাম। ঘন্টাখানেকের মধ্যেই ঘরের ভেতর  ধোয়া-কাপড়ের অপূর্ব সুবাস ছড়িয়ে পড়ল। এবং পরের দিন সেই ঢাকনায় ডিটার্জেন্টের গন্ধ, আর ঘরের বাতাসে তার গন্ধের তীব্রতা এক হয়ে গেল। ঘরে ঢোকার সাথে সাথেই মনে হতে লাগলো, একগাদা কাপড় আজই লন্ড্রী করেছি! আমি মনে মনে হাজারবার
    (1)ψ(r,t)t=C2ψ(r,t)
    -এই ইকুয়েশনটিকে ধন্যবাদ দিলাম। এই ইকুয়েশনটির নাম ডিফিইউশন ইকুয়েশন। একে মেনেই কোন জিনিসের কনা বাতাসে বা পানিতে বা যেকোন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। টলটলে একগ্লাস পানির মধ্যে একফোঁটা কালির ছড়িয়ে পড়া, কিংবা একটা জিনিসে তাপ ছড়িয়ে পড়া, এসব কিছুর সঙ্গেই এই ইকুয়েশনের গভীর সম্পর্ক। এই ইকুয়েশনটি তাই ছড়িয়ে পড়ার ইকুয়েশন।
    ডিফিউশন নিয়ে আমাদের বন্ধু আতিক তার “এ্যানালাইসিস কেন গুরুত্বপূর্ণ” শিরনামের একটা পোস্টে চমৎকার কিছু আলোচনা উপস্থাপন করেছিল। সেটা পড়ার জন্য সবাইকে আমন্ত্রন। আমি এই সিরিজে এ্যানালাইসিসের দিকে খুব একটা যাবনা। নেটওয়ার্কেই থাকব মোটামুটি।
    এবার বলুন, উপরের সিনারিও গুলোকে কি নেটওয়ার্ক সায়েন্সের আওতায় আনা সম্ভব? তেমন অসম্ভব না মনে হয়। কারন পানিকে বা বাতাসকে বিশাল মলিকুলার নেটওয়ার্ক হিসেবে কল্পনা করা যেতেই পারে। প্রশ্ন হল, যে জিনিসটা ছড়িয়ে পড়ছে সেটার মডেল তৈরি কিভাবে করব।
    নিচের নেটওয়ার্কটির দিকে তাকান 
    আজকের পোস্টে ছবি তেমন একটা কাজে আসবেনা। কিন্তু একদম ছবি না থাকলে মানুষজন
    যদি দ্বিতীয়বার ফিরে না তাকায়, তাই জুড়ে দিলাম।


    ধরা যাক, যেই জিনিসটা নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে পড়ছে  কালি বা সুবাস বা যা-ই হোক
    ি, সেটার পরিমান বিকেল তিনটের সময়-
    ভার্টেক্স-০ ‘তে ψ0,
    ভার্টেক্স-১ ‘এ ψ1,

    ভার্টেক্স-i’তে ψi,
    ইত্যাদি। সময় একটু গড়ালো। বিকেল তিনটে বেজে এক সেকেন্ডে ভার্টেক্স-i থেকে তার নেইবারিং ভার্টেক্স গুলোতে জিনিসটা খানিক স্থানান্তরিত হল, অথবা নেইবারিং ভার্টেক্স গুলো থেকেই i-তে এসে পৌঁছল। “জিনিস-টিনিস” বলাটা কনফিউজিং। আমি আমার ঘরে ডিটারজেন্টের সুবাস ছড়ানোর কেসটাই ধরে নিচ্ছি। তাহলে এই মুহুর্তে, অর্থাৎ বিকেল তিনটে বেজে এক সেকেন্ডে ভার্টেক্স-০’তে সুবাসের পরিমান কিন্তু আর ψ0 নেই। বদলে গেছে। অন্যান্য ভার্টেক্স গুলোতেও ψ1,ψ2,,ψi ইত্যাদি বদলে গেছে। কী মুশকিল!
    চলুন একটা সময়ের ট্যাগ লাগিয়ে দেই ψ গুলোর সাথে। বিকেল তিনটের ট্যাগ হচ্ছে t, আর বিকেল তিনটে-বেজে-এক-সেকেন্ড-এর ট্যাগ হচ্ছে t+Δt.
    তাহলে বিকেল তিনটের সময় সুবাসের পরিমান বিভিন্ন ভার্টেক্সে
    ψ0(t),ψ1(t),ψ2(t),ψi(t)
    এবং বিকেল তিনটে-বেজে-এক-সেকেন্ড-এ সুবাসের পরিমান বিভিন্ন ভার্টেক্সে
    ψ0(t+Δt),ψ1(t+Δt),ψ2(t+Δt),ψi(t+Δt)
    Δt সময়ে যেকোন ভার্টেক্স i-এ সুবাসের পরিমাণের পরিবর্তন = ψi(t+Δt)ψi(t).
     একক সময়ে সেখানে সুবাসের পরিবর্তন = ψi(t+Δt)ψi(t)Δt
    Δt’কে এক সেকেন্ড না ধরে খুব বেশি ছোট ধরে নিলে অর্থাৎ Δt0 লিমিটে জিনিসটি দাঁড়াচ্ছে
    (2)limΔt0ψi(t+Δt)ψi(t)Δt=dψi(t)dt
    অর্থাৎ সময়ের সাথে ভার্টেক্স-i ‘তে সুবাস চেইঞ্জ হবার রেট। (ধুত, রিভিশন দিতে গিয়ে খেয়াল করলাম, এত প্যাচাল পাড়ার দরকারই ছিলনা মনে হয়। তবুও, রেটের ব্যাপারটা মাথায় কোন এক জায়গায় স্টোর করে রাখুন।
    আগেই বলেছিলাম, দু-একদিন রেখে দিলে ডিটার্জেন্টের সুবাস সারা ঘরে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়বে। দু-একদিন পরের এই সময়টার নাম দাওয়া যাক সাম্যাবস্থা Equilibrium. তো এই ইকুইলিব্রিয়ামের বিশেষত্ব কী? কখন আমরা ম্যাথম্যাটিকালি বুঝব যে আমাদের ঘরে
    teq সময়ে ইকুইলিব্রিয়াম উপস্থিত হলে যেকোন ভার্টেক্স i এবং j -এর জন্য,
    ψj(teq)ψi(teq)=0
    যতক্ষন এই সময়টা না আসবে, ততক্ষন এই সুবাসের ছড়িয়ে পড়া বা ডিফিউশন প্রসেস ি চলতেই থাকবে। খেয়াল করে দেখুন, ইকুইলিব্রিয়ামের আগে যেকোন সময় t’তে দুটো কানেক্টেড ভার্টেক্সে সুবাসের পার্থক্য ψj(t)ψi(t) -এর মান নন-জিরো। এবং, এই রাশিটি ধীরে ধীরে শূন্যের কাছে যেতে থাকবে। মানে সুবাসের পার্থক্য ধীরে ধীরে শুন্য হতে থাকবে।। মোট কথা, রাশিটির মান কমতে থাকবে।
    তাহলে এটাও নিশ্চিন্তে হয়ে বলা যায় যে ভার্টেক্স-i’কে ফিক্স করে তার সাথে কানেক্টেড অন্য সব ভার্টেক্স j এর জন্য যদি উপরের ঐ পার্থক্যটা মেপে বার করি, এবং সব পার্থক্য গুলো জোড়া লাগিয়ে দেই, তাহলে যে রাশিটি পাব, সেটাও ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। অর্থাৎ
    j(ψj(t)ψi(t)) an ij edge
    -এই রাশিটি ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।
    তো এটার সাথে কিছুখন আগে মাথায় স্টোর করা dψidt জিনিসটার কি কোন আত্মিয়তা করানো যায়?
    ডিফিউশন প্রসেসের প্রথম দিকে i-ভার্টেক্সে সুবাস কিন্তু বেশ তাড়াতাড়ি পাল্টাবে। ধীরে ধীরে যখন ইকুয়িলিব্রায়াম কাছে চলে আসবে, তখন ডিফিউশন প্রসেসও বন্ধ হবার উপক্রম হবে, এবং ভার্টেক্স-i -এ সুবাস বদলানোর রেটও কমে আসবে। ফাইনালি, t=teq সময়ে প্রসেস পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে, এবং তখন সুবাসের কোন চেইঞ্জই হবেনা। অর্থাৎ dψi(t)dt=0|t=teq বা ψi(teq)=constant হবে।
    মোট কথা, ডিফিউশন প্রসেস চলার সাথে সাথে dψi(t)dt রাশিটার মানও ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।
    কমতে থাকার দলে দুটো রাশি পাওয়া গেল। ডিফিউশন প্রসেস আগানোর সঙ্গে তাদের বদলানোর ধরন তাহলে একই রকম। সুতরাং নিশ্চিন্তে লিখে ফেলা যায়,
    dψi(t)dtj(ψj(t)ψi(t))dψidt=Cj(ψjψi)(C=constant, an ij edge)
    ইকুয়েশনের ল্যাজ হিসেবে এই “there exists an ij edge” -এর ব্যাপারটা যন্ত্রনাদায়ক। কী করা যায়? এমন একটা জিনিসের নাম বলুনতো যেটা শুধুমাত্র  ij-এজ থাকলেই 1 হবে এবং ij-এজ না থাকলে 0 হবে? নিঃসন্দেহে এ্যাডজেসেন্সি ম্যাট্রিক্সের ij-তম এন্ট্রি! এটাকে সামেশনের ভেতরে বসিয়ে দিলেই হয়ে গেল, অপ্রয়জনীয় j-ভার্টেক্স গুলো আপনাথেকেই ছাঁটাই হয়ে যাবে। তাহলে আগের ইকুয়েশনটা দাঁড়াবে,
    (3)dψidt=CjAij(ψjψi)
    এটাকেই একটা নেটওয়ার্কের জন্য ডিফিউশন ইকুয়েশন বলে চালিয়ে দেওয়া যায়।
    তবে, আমি বললাম, আর বর্গমূলের পাঠকরা বিশ্বাস করে ফেলল তা তো না! আসলেই কি এটা ডিফিউশন ইকুয়েশন? এই পোস্টের প্রথম ইকুয়েশনের সাথে তো এর কোন মিল দ্যাখা যাচ্ছেনা! তারপরও এটা ডিফিউশন ইকুয়েশন?
    চলুন আরেকটু এগিয়ে দেখি।
    dψidt=CjAij(ψjψi)(4)=C[jAijψjjAijψi]
    আগের কোন একটা পোস্টে আমরা প্রমাণ করেছিলাম, jAij=ki. সিম্পল! i’th Row-sum = ভার্টেক্স-i’এর ডিগ্রী = ki. সেটা দ্বিতীয় রাশিতে বসিয়ে দিচ্ছিঃ
    (5)dψidt=C[jAijψjkiψi]
    ডানপক্ষের প্রথম রাশিটিতে সামেশনটা j -এর উপর। পরের রাশিতেও চলুন j-এর উপর একটা সামেশনের বন্দবস্ত করাযাক। ক্রনেকার’স ডেল্টা δij-কে ব্যবহার করে ψi=jδijψj -এই কথাটা যারা মানেন, তাদের জন্য উপরের ইকুয়েশনটা পালটে লিখছিঃ
    dψidt=C[jAijψjkijδijψj](6)=Cj[Aijkiδij]ψj
    এখন আমরা উপরের ইকুয়েশনটাকে ম্যাট্রিক্স নোটেশনে লিখব, অর্থাৎ ψi এর বদলে লিখব ΨAij-এর বদলে লিখব এ্যাডজেসেন্সি ম্যাট্রিক্স A আর kiδij-এর বদলে লিখব ম্যাট্রিক্স D, যেখানে
    (7)Ψ=(ψ1(t)ψ2(t)ψn(t)),D=(k10000k20000kn)
    তাহলে আমাদের ইকুয়েশনটি দাঁড়াচ্ছে,
    dΨdt=C(AD)ΨdΨdt+CLΨ=0
    নতুন একটা ম্যাট্রিক্স L:=(DA) ডিফাইন করে ফেললাম। এবার পোস্টের প্রথম ইকুয়েশনটার দিকে তাকিয়ে বলুনতো, L ম্যাট্রিক্সটাকে আমাদের নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে লাপ্লাসিয়ান 2 ভেবে নিলেই কি শেষ ইকুয়েশনটা ডিফিউশন ইকুয়েশন হয়ে যাবেনা? নিশ্চয়ই যাবে। মাইনাসের গড়বড়টা নিজগুনে ডিফিউশন কনস্ট্যান্ট C এর ভেতরে এ্যাবজর্ব করে নিতে হবে শুধু।
    পেয়ে গেলাম আমাদের নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে ডিফিউশন ইকুয়েশন।
    ম্যাট্রিক্স L’টাকে সত্যি সত্যিই লোকে গ্রাফ-লাপ্লাসিয়ান নামে ডাকে। এটা একটা চমৎকার জিনিস। এটার সিমেট্রির কারনে ফাটাফাটি সব প্রপার্টি বেরিয়ে আসে। আমরা পরের পোস্টে এই গ্রাফ-লাপ্লাসিয়ান নিয়ে নাড়াচাড়া করব এবং ডিফিউশন ইকুয়েশনটাকে নেটওয়ার্কের আলোকে সল্ভ করার চেষ্টা করব। কে জানে, কোড-ফোড করতে পারলে নেটওয়ার্ক ডিফিউশনের একটা খেলনা মডেলও বানিয়ে ফেলতে পারি। দ্যাখা যাক, কী হয়।












  • 0 comments:

    Post a Comment

    New Research

    Attention Mechanism Based Multi Feature Fusion Forest for Hyperspectral Image Classification.

    CBS-GAN: A Band Selection Based Generative Adversarial Net for Hyperspectral Sample Generation.

    Multi-feature Fusion based Deep Forest for Hyperspectral Image Classification.

    ADDRESS

    388 Lumo Rd, Hongshan, Wuhan, Hubei, China

    EMAIL

    contact-m.zamanb@yahoo.com
    mostofa.zaman@cug.edu.cn

    TELEPHONE

    #
    #

    MOBILE

    +8615527370302,
    +8807171546477